রবিবার প্যান জিবি বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তারদের সাংবাদিক সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ইমেল করে জানিয়ে দিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তবে এই বৈঠকের জন্য মুখ্যসচিব যে ‘শর্ত’ দিয়েছিলেন, তা মানছেন না তাঁরা। ইমেলে জানানো হয়েছে, অনশন তুলে নেওয়া হচ্ছে না সোমবারের আগে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই অনশন তুলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সোমবারের বৈঠকে যাবেন, আগেই তা জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তবে কারা যাবেন, কত জন যাবেন, ‘শর্ত’ মানা হবে কি না, তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়। শনিবার রাত পর্যন্ত সেই বৈঠক চলেছিল। রবিবার সকাল থেকেও এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের জেনারেল বডির বৈঠক হয়। অনশনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং সম্প্রতি ছাড়া পাওয়া জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোও এনআরএসের জিবিতে ছিলেন। ওই বৈঠকের পরেই সিদ্ধান্ত ইমেলে জানানো হয় মুখ্যসচিবকে।
প্যান জিবি বৈঠকের পর আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘১৪ দিন পর অনশনমঞ্চে আসেন মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব। ফোনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়। কিন্তু এই কথোপকথনে অনশনকারীরা দুঃখ পেয়েছেন। তাঁদের অনুভূতি আঘাত পেয়েছে। আমাদের দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছে এত দিন পরেও ১০ দফা দাবি নিয়ে উনি হয়তো জানেন না, বা তাঁকে জানানো হয়নি। তবে আমরা কী চাইছি তা বিস্তারিত ভাবে জানিয়েই মুখ্যসচিবকে ইমেল করেছি। প্রয়োজনে তা নিয়ে আমরা কাল আবার বলব।’’ তিনি আরও জানান, সময়মতো বৈঠকে যোগ না দেওয়া অভিযোগ তোলা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। তাঁদের উপর এই দায় চাপানোর মানসিকতাকে ‘ধিক্কার’ জানাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘বৈঠকের ১-২ ঘণ্টা আগে যদি আমাদের সময় এবং স্থান জানানো হয়, তবে প্রস্তুতি নিয়ে যেতে সময় লাগবে। সব সময় দেরিতে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের উপর পুরোপুরি দায় চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।’’
তার পরই দেবাশিস বলেন, ‘‘আমরা চাই কোনও পূর্ব শর্ত ছাড়াই বৈঠকে যোগ দিতে। নির্দিষ্ট সময়েই আমাদের প্রতিনিধিরা বৈঠকে যোগ দেবেন। আমরা আশা করছি সদর্থক আলোচনা হবে।’’ তবে যদি বৈঠকের পরেও আলোচনা থেকে কোনও সমাধানসূত্র না বার হয়, তবে মঙ্গলবার পূর্বপরিকল্পিত কর্মসূচি পালন করবেন বলেও জানান তাঁরা। এমনকি, আগামীতে আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়বে বলেও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
শনিবার ধর্মতলার অনশনমঞ্চে গিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের মতো রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। তাঁদের মাধ্যমে অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবি ফোনে এক এক করে শোনেন মমতা। জবাবও দেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সামনাসামনি বৈঠক করতে চেয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার বিকেলে তাঁদের সময় দেন মমতা। পরে মুখ্যসচিব তাঁদের ইমেলে জানিয়ে দেন, সোমবার বিকেল ৫টায় নবান্নে বৈঠক হবে। ৪৫ মিনিট সময় ডাক্তারদের জন্য দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী। সাড়ে ৪টের মধ্যেই জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ জন প্রতিনিধিকে নবান্নে পৌঁছে যেতে বলেন তিনি। কারা যাবেন, সেই ১০ প্রতিনিধির নাম ইমেল করে জানাতে বলা হয় ডাক্তারদের।
মুখ্যসচিবের এই ইমেলে ‘শর্ত’ও দেওয়া হয়। বলা হয়, অনশন তুলে নিলে তবেই সোমবার মমতা ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ইমেলের জবাব দেওয়ার আগে দীর্ঘ বৈঠক করেন ডাক্তারেরা। তার পর জানানো হল, সরকারের শর্তে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা। ইমেলে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা নবান্নের বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন। তবে ‘শর্ত’ অনুযায়ী অনশন তুলে নয়। অনশন চলবে। মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy