অভিযুক্ত: প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দত্ত। নিজস্ব চিত্র
সহপাঠীর সঙ্গে মারামারির শাস্তি হিসেবে এক ছাত্রকে চুলের মুঠি ধরে স্কুলের মধ্যে ঘোরানোর অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এরপর তিনি সর্বসমক্ষে কাঁচি দিয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রটির চুলও কেটে দেন বলে অভিযোগ। শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের অন্যতম নামী স্কুল বলে পরিচিত সুদর্শনপুর দ্বারিকাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যাচক্রের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওইদিন বিকেলে ওই ছাত্র পুরো ঘটনাটি ফেসবুকে পোস্ট করে। অভিযোগ, এরপর রাতে স্কুলের এক শিক্ষক ওই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে তাকে হুমকি দেন। এরপর ফেসবুক থেকে পোস্টটি মুছে দেয় ওই ছাত্র।
শনিবার দুপুরে ওই অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় ওই স্কুলে। এ দিন ওই ছাত্রের অভিভাবকেরা ও শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা ওই স্কুলে যান। কেনও ওই ছাত্রকে চুলের মুঠি ধরে স্কুল চত্বরে ঘোরানো হল এবং কেনই বা তার চুল কাটা হল, প্রধান শিক্ষকের কাছে তা জানতে চান তাঁরা। তখন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তাঁদের বচসা বেধে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর নয়ন দাস ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। রায়গঞ্জের উদয়পুর এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রটি বাণিজ্য বিভাগে পড়াশোনা করে।
প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দত্তের বক্তব্য, ওই ছাত্রটি দীর্ঘদিন ধরে নানা কারণে সহপাঠীদের সঙ্গে মারামারি করে। ওকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। ছেলেটিকে চুলের মুঠি ধরে স্কুলে ঘোরানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওর চুল রঙিন ও বড় থাকায় স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে খারাপ প্রভাব পড়ছিল। তাঁর বক্তব্য, শাসন করার জন্য তিনি কাঁচি দিয়ে ওর চুল সামান্য কেটে দিয়ে কোনও অন্যায় কেননি তিনি। অন্যদিকে, উত্তর দিনাজপুরের মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও শিক্ষক পড়ুয়াদের শারীরিক মানসিক নির্যাতন করলে, তা বেআইনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’
ছাত্রটির অভিযোগ, শুক্রবার দুপুরে বেঞ্চে বসা নিয়ে একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের দুই ছাত্রের মধ্যে মারপিট হয়। তার বক্তব্য, ‘‘আমি সেই মারপিট থামাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি মারপিট করেছি বলে দাবি করে প্রধান শিক্ষক সহপাঠী ও শিক্ষকদেরর সামনে আমার চুলের মুঠি ধরে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে স্কুলচত্বরে ঘোরান। এরপর তিনি সবার সামনে কাঁচি দিয়ে আমার চুল কেটে দেন।’’ তার কথায়, ‘‘আমি ঘটনার কথা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করি। রাতেই এক শিক্ষক বাড়িতে গিয়ে স্কুল থেকে বহিষ্কার করার হুমকি গিয়ে ওই পোস্ট মুছতে বাধ্য করেন।’’ প্রধান শিক্ষকের দাবি, ওই ছাত্রের বাড়িতে স্কুলের কোনও শিক্ষক যাননি।
ছাত্রটির মা অনিমার বক্তব্য, ‘‘ঘটনার পর থেকে লজ্জায় ও অপমানে ছেলে স্কুলে যেতে চাইছে না। স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy