ফাইল চিত্র।
নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপারিশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার নিম্ন আলাদতগুলিতে বিচারক নিয়োগে টালবাহানা করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সম্প্রতি রাজ্যের আইন ও বিচার দফতরের সচিবকে চিঠি দিয়েছেন। তাতে কড়া ভাষায় বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সুস্থ সম্পর্কই রাখতে চায় আদালত। কিন্তু আদালতের সেই ভদ্রতাকে সরকার যেন কোনও ভাবেই দুর্বলতা বলে মনে না-করে! এই ঘটনাকে কার্যত নজিরবিহীন বলে মনে করছেন প্রশাসনের অনেকে।
ওই চিঠিতে হাইকোর্ট জানিয়েছে, তিনটি ক্যাডারের বিচার বিভাগীয় অফিসার নিয়োগের বিষয়টি বার বার মনে করিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্য নিয়োগ করেনি। নিয়োগের সেই সুপারিশ করেছিল হাইকোর্ট। আইন ও বিচার দফতর হাইকোর্টকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, এই সুপারিশের ব্যাপারে সরকারের কিছু বক্তব্য আছে। রেজিস্ট্রার জেনারেল সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবকে জানিয়েছেন, সেই বক্তব্য কী, রাজ্য তা হাইকোর্টকে জানায়নি।
সচিবকে এটাও জানানো হয়েছে যে, নিম্ন আদালতগুলিতে শূন্য পদ পূরণে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তা সত্ত্বেও রাজ্যের অনেক নিম্ন আদালতে বিচারক নিয়োগ করা হচ্ছে না। রেজিস্ট্রার জেনারেল চিঠিতে রাজ্যকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, সংবিধানের ২৩৫ নম্বর ধারায় বলা আছে, নিম্ন আদালতগুলিতে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্টেরই নিয়ন্ত্রণ থাকবে। রাজ্য তা মেনে নিয়ে সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করলে তা বিচার বিভাগীয় কর্মপদ্ধতির সুষ্ঠু পরিচালনার পক্ষে সহায়ক হত।
পকসো মামলায় এক অভিযুক্তের জামিন সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ আইন ও বিচার দফতরের সচিবকে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেছেন, ২৩ জন জেলা জজ এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের পদে নিয়োগ এখনও হয়নি কেন। ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সচিবকে হাইকোর্টে ওই হলফনামা দাখিল করতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পকসো-র ৩৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, শিশুদের যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে এক বছরের মধ্যে। এ ক্ষেত্রে ৫৪৫ দিন পরেও বিচারকের অভাবে নিম্ন আদালতে বিচারই শুরু করা যায়নি। অভিযুক্ত ও নির্যাতিত শিশু দু’জনেই বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, শীর্ষ আদালত মালিক মাজহার সুলতান বনাম উত্তরপ্রদেশ মামলায় বলেছে, বিভিন্ন রাজ্যের জেলা ও নিম্ন আদালতে বিচারকের শূন্য পদ (ডিস্ট্রিক্ট জজ, এন্ট্রি লেভেল) প্রতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারকেই পূরণ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং হাইকোর্টের সুপারিশ সত্ত্বেও বিচারকের শূন্য পদ পূরণ না-করায় রাজ্য সরকার তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এতে বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত প্রশাসনের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।
রাজ্যের আইন ও বিচার মন্ত্রী মলয় ঘটকের দাবি, যা ফাইল ছিল, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ‘‘যে-চিঠির কথা বলা হচ্ছে, আমার জানা নেই। বিচারসচিব উত্তর দিয়ে থাকতে পারেন। জুডিশিয়াল সার্ভিসের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়োগ করে পাবলিক সার্ভিস কমিশন। তার উপরের স্তরের নিয়োগ করে হাইকোর্ট। আবার বিচারপতি নিয়োগ কলেজিয়ামের হাতে। আমরা নিয়োগ করি না,’’ বলছেন আইন ও বিচার মন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy