ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’-এ অন্তর্ভুক্তির জন্য পুরুলিয়ার জেলাশাসককে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতোর দাখিল করা ‘রিট পিটিশন’-এর ভিত্তিতে গত ৩ সেপ্টেম্বর এই রায় দেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল বি রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্ত। নেপালবাবুর দাবি, রাজ্যের আরও কিছু জেলা এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য। এই রায়ের পরে, সে কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘রায়ের কপি পেলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে, পদক্ষেপ করা হবে।’’ রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা জানান, তাঁরাও রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
করোনা-পরিস্থিতিতে গ্রামে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থান এলাকাতেই করার লক্ষ্যে ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’ শুরু হয়েছে গত ২০ জুন থেকে। যে সমস্ত জেলায় ২৫ হাজার বা তার বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন, তারা এই অভিযানের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। ১২টি মন্ত্রক ও দফতর এই প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করবে। সমন্বয় করবে গ্রামোন্নয়ন দফতর। বাছা হয়েছে মোট ২৫ রকমের কাজ। বরাদ্দ হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। অভিযানে ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার ১১৬টি জেলা।
নেপালবাবু জানান, তথ্য জানার অধিকার আইনে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করে তিনি জানতে পারেন, পুরুলিয়ায় করোনা-পর্বে প্রায় ৩৯ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। ৪ জুলাই সেই তথ্য জানিয়ে, অভিযানে পুরুলিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চিঠি পাঠান কেন্দ্রের অর্থসচিবকে। প্রতিলিপি পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। সাড়া না-পেয়ে ৯ জুলাই হাইকোর্টে ‘রিট পিটিশন’ করেন বলে দাবি তাঁর। রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীও।
নেপালবাবুর আইনজীবী সৌগত মিত্রের দাবি, ৩ সেপ্টেম্বর আদালত রায় দেয়, এক সপ্তাহের মধ্যে নেপালবাবু যাবতীয় তথ্য-সহ আবেদনপত্র, ‘রিট পিটিশন’ ও রায়ের প্রতিলিপি জেলাশাসকের কাছে পেশ করবেন। খতিয়ে দেখে তার তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক বা উপযুক্ত জায়গায় যোগাযোগ করবেন জেলাশাসক।
নেপালবাবু বলেন, ‘‘এই রায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জয়। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপির সরকার। পুরুলিয়ায় বিজেপির সাংসদ। তিনি এই ব্যাপারে হাত গুটিয়ে বসেছিলেন। রাজ্যের তৃণমূল সরকারও চুপ ছিল।’’ তবে পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর দাবি, ‘‘কংগ্রেসও অনেক দিন ক্ষমতায় ছিল। শ্রমিকদের পরিযায়ী হওয়ার দায় তাদেরও। বিজেপির সাংসদেরা সরব হয়েছিলেন বলেই প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। রাজ্যের তৎপরতার অভাবেই কেন্দ্রের প্রকল্পে পুরুলিয়া বঞ্চিত হয়েছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা পুরুলিয়ার তৃণমূল বিধায়ক শান্তিরাম মাহাতো আবার বলছেন, ‘‘কেন্দ্রেরই রাজ্যের কাছে বিষয়টা জানতে চাওয়া উচিত। তা করা হয়নি।’’
সম্প্রতি পুরুলিয়া থেকে তামিলনাড়ুর কাজের জায়গায় ফিরে গিয়েছেন বেশ কিছু পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁরা সেখানে গ্রানাইট পাথর বসানোর কাজ করেন। আদালতের নির্দেশ জেনে সেই প্রদীপ রায়, বিষ্ণু বাউড়ি, মুকেশ বাউড়িরা বলেন, ‘‘এই মামলার জন্য যদি জেলায় কাজের সুযোগ মেলে, তা হলে অনেক চিন্তা কমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy