কুন্তলকে নিয়ে সায়নীকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর উত্তর শুনে মনে করা হয়েছিল, তিনি কুন্তলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
যুবনেতা কুন্তল ঘোষকে বহিষ্কার করতে চেয়ে তৃণমূল নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। সূত্রের খবর, অতি সম্প্রতি তিনি ওই চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। যদিও ওই বিষয়ে সায়নীর বক্তব্য জানা যায়নি। যুব সভানেত্রী প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, এমন কোনও চিঠি সায়নী দেননি। সবটাই ‘উড়ো খবর’ এবং ‘গুজব’।
গত ২১ জানুয়ারি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল। হুগলির মূল বাসিন্দা কুন্তলের বিরুদ্ধে নদিয়ার পলাশিপাড়ার ধৃত তৃণমূল বিধায়ক এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল বিপুল পরিমাণ অর্থ নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। তাপসের প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতেই কুন্তলকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কুন্তলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে তিনি ১৯ কোটিরও বেশি টাকা নিয়েছেন। যদিও কুন্তল দাবি করেছিলেন, সমস্তটাই তাঁর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’। তাপসের উপরেই তিনি সেই ‘ষড়যন্ত্র’-এর দায় চাপিয়েছিলেন। পাশাপাশিই বলেছিলেন, এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই রাজ্য তৃণমূল যুবর সাধারণ সম্পাদক কুন্তলকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছিল। যে হেতু সায়নী ওই সংগঠনের সর্বোচ্চ নেত্রী, তাই তাঁকেও ওই বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
সম্প্রতি ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে কুন্তলকে নিয়ে সায়নীকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। সায়নীর জবাব শুনে মনে করা হয়েছিল, তিনি কুন্তলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার পরেই তিনি কুন্তলকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন বলে খবর ছড়িয়েছে। প্রশ্ন, কুন্তলের অর্থকরী যোগাযোগের সঙ্গে এক অভিনেত্রীর সংযোগের কথাও চাউর হয়েছে। এতটাই যে, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি প্রকাশ্যেই মন্তব্য করেছেন, ‘‘কে সেই অভিনেত্রী। আমি তাঁর নাম জানতে চাই। তাঁর (অভিনীত) ছবিও দেখতে চাই।’’
এর আগে ইডি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পর তাঁকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। সেই সূত্রেই প্রশ্ন উঠেছিল, পার্থের মতো শীর্ষনেতার বিরুদ্ধে যদি কঠিন পদক্ষেপ করা যায়, তা হলে কুন্তলের ক্ষেত্রে কেন এত সময় নেওয়া হচ্ছে? তবে একই সঙ্গে এটাও ঠিক যে, গ্রেফতার হওয়ার পরেও অনুব্রত মণ্ডল এবং মানিকের বিরুদ্ধে এখনও দলীয় স্তরে পার্থের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, কুন্তলকে তাঁর পদ থেকে সরানো তো বটেই, দল থেকে বহিষ্কারের অনুমতি চেয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন সায়নী। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের পাল্টা দাবি, এমন বিষয়ে কোনও চিঠিই সায়নী দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy