ফাইল চিত্র।
আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক লাইভে শিক্ষক এবং অধ্যাপক নিয়োগ নিয়ে সবিস্তার জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আন্দোলন, মামলা, দীর্ঘ শুনানি, বিক্ষোভ, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি বার বার আলোচনায় উঠে আসে। গোটা প্রক্রিয়াকে চারটি ভাগে ভাগ করেন ব্রাত্য— প্রাথমিকের টেট, উচ্চপ্রাথমিকের টেট, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষক নিয়োগ ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে কলেজে শিক্ষক নিয়োগ। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিকে পুজোর আগেই চার হাজার নিয়োগ হয়েছে। যেমনটা মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পুজোর পরে তেমন ভাবেই আরও ১ হাজার ৭০০ নিয়োগ হবে। সমস্যা হচ্ছে উচ্চতর প্রাথমিকের নিয়োগের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে ১২ হাজার নিয়োগ দিতে রাজ্য সরকার বদ্ধ পরিকর। স্কুল শিক্ষা আয়োগের ১২ হাজার চাকরি আমাদের হাতে আছে, শুধু দিতে পারছি না। আদালতে মামলা চলছে। আমরা বলেছি, আদালত যে ভাবে বলবে, আমরা সে ভাবেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাব। শুধু দু’টি বিষয় মাথায় থাকবে, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতা। এই দুটোকে আমরা প্রাধান্য দেব। একটা শুনানি চলছে, সেই শুনানি শেষ হবে। যে মুহূর্তে আদালতে শুনানি শেষ হবে, তখন আদালত যদি নির্দেশ দেয় আপনারা নিয়োগ করতে পারেন, তা হলে নিয়োগ হবে। মনে রাখতে হবে, নিয়োগ কিন্তু শিক্ষা দফতর করে না, শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও স্কুল শিক্ষা আয়োগ নিয়োগপত্র দেয়। আমরা দফতরের দিক থেকে বলতে পারি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বলেছেন, সেই কথা মতো যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার উপর নির্ভর করে নিয়োগ করা হবে।’’
এর পরে ব্রাত্য তোলেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষক নিয়োগের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, ‘‘মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে আমরা জেলা স্কুল পরিদর্শকদের থেকে শূন্যপদের তালিকা নিচ্ছি। সেখানেও আমরা পাঁচ থেকে ছ’হাজার নিয়োগের দিকে যাচ্ছি।’’
শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে মামলা, ক্ষোভ, বিক্ষোভ, অনশন, অবস্থান— সব কিছুই দেখেছে। একের পর এক মামলার শুনানিও চলেছে দীর্ঘ দিন ধরে। ব্রাত্যর মতে, একাংশ সংগঠিত ভাবে মামলাতে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ মামলাতে যেতেই পারেন, তাঁদের অধিকার আছে। কিন্তু আমরা আমাদের দিক থেকে স্বচ্ছ থাকছি। এই যে অনেকে আন্দোলন করছেন, হয়তো ১০০-২০০ লোক আন্দোলন করছেন, তার বাইরে ৬০-৭০ হাজার লোক আছেন। আমরা বলছি যে, আন্দোলন করলেই যে চাকরি পাবেন, তার নিশ্চয়তা নেই, না করলে পাবেন না, তা-ও নয়। আন্দোলন করা মানেই আপনি যোগ্য, যাঁরা করছেন না তাঁরা অযোগ্য, এমনটা নয়। ১৫টি সংবাদমাধ্যম নিয়ে আপনি বিকাশ ভবনের সামনে চলে এলেন। এসে আপনি দাবি তুললেন আপনার ‘এই চাই’, ‘ওই চাই’, কী লাভ হচ্ছে এটা করে? আমাদের স্পষ্ট জবাব, সিপিএম-বিজেপি-তৃণমূল দেখে আমরা চাকরি দেব না। স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার বিচারেই চাকরি পাবেন। আপনি যোগ্য শিক্ষক কি না, সেটা বিচার করে দেখা হবে।’’
ডিএলএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগের বিষয় নিয়েও এসেছিল অসংখ্য প্রশ্ন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, যাঁরা ডিএলএড প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তাঁদের সবাইকে কেন নিয়োগ করা হচ্ছে না? যাঁরা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তাঁরাই সকলেই চাকরি পাবেন, তার তো কোনও মানে নেই। তার জন্য কাউন্সেলিং হবে। ডিএলএড প্রশিক্ষণটা বাধ্যতামূলক, কিন্তু তার পর তো বাছাই হবেই। একটি চাকরিতে যদি ১০টি পোস্ট থাকে, আর ১০০ জন আবেদন করেন, তা হলে তো ১০০ জনই চাকরি পেয়ে যান না। তার একটা বাছাই প্রক্রিয়া থাকে। কিছু লোক চাকরি পান, কিছু লোক পান না। এটা সারা পৃথিবীতেই সত্য। এ ক্ষেত্রেও আমরা স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা বিচার করে, মহামান্য আদালত যে ভাবে বলবে, সেই ভাবে নিয়ম মেনে আয়োগকে বলব নিয়োগটাকে সুষ্ঠু ভাবে ত্বরান্বিত করুন। কলেজ সার্ভিস কমিশনের ক্ষেত্রেও জানুয়ারিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। সবার ক্ষেত্রে সাম্য বজায় রাখা হবে। সেই নোটিসও তাড়াতাড়ি বেরোবে। আমাদের চাকরি দেওয়ার অধিকার আছে, আমরা চাকরি দেবই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy