Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

আমি ছাড়া কে যাবে, ফের ব্যাখ্যা রাজ্যপালের

গত বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।

চিকিৎসকদের এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসকদের এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫০
Share: Save:

এ বার প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর যাওয়া নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অনেক ভেবেচিন্তে অভিভাবক হিসাবে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম। আমি যদি পড়ুয়াদের অভিভাবক হই, তা হলে আমি ছাড়া কে যাবে?’’

গত বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ঘেরাও পাঁচ ঘণ্টা গড়িয়ে যাওয়ার পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ‘উদ্ধার’ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। শাসক তৃণমূল রাজ্যপালের ভূমিকার ওই ভূমিকার সমালোচনায় সরব হয়েছিল। রাজভবনের তরফে এর মধ্যে তিন দফায় বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা আটকে রেখেছিলেন, সেই পরিস্থিতিতে আচার্য তথা রাজ্যপাল সেখানে যাওয়া জরুরি মনে করেছিলেন। লিখিত বিবৃতির বাইরে বেরিয়ে ‘অভিভাবক’ হিসেবে তাঁর ভূমিকার কথাই এ বার নিজের মুখে বলেছেন রাজ্যপাল ধনখড়।

শহরে রবিবার দু’টি ভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল। প্রথম অনুষ্ঠানটি ছিল উত্তর কলকাতার নন্দমল্লিক লেনে। রাজস্থান ভাষা পরিষদের সেই অনুষ্ঠান-মঞ্চ থেকে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া নিয়ে কথা হচ্ছে। ওই পরিস্থিতিতে বারবার নিজেকে প্রশ্ন করেছি, যাদবপুরে যাওয়া উচিত হবে কিনা। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলার অধিকার আমার আছে? কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। তার পরে ভাবলাম, আমি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা না বললে, কে বলবে? ভাল লাগছে এটা ভেবে যে, আমি যাওয়ার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপকদের সহযোগিতা পেয়েছি। আমার উপস্থিতির কৃতিত্ব এটা নয়। আসল কথা হল, আমার অভিপ্রায় কী ছিল।’’

রাজ্যপাল ‘অভিভাবকে’র ভূমিকা নিয়ে থাকলে সে দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি-র তাণ্ডব এবং পড়ুয়াদের একাংশের উপরে হামলার নিন্দা কেন করেননি, সেই প্রশ্ন আগেই তোলা হয়েছিল ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশের তরফে। তাঁর এ দিনের বিবৃতি প্রসঙ্গে তৃণমূলের তরফে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলেননি। তবে শাসক দলের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘রাজ্যপালের আচরণ যে স্বাভাবিক ছিল না, সেটা বুঝেছেন বলেই তাঁকে এখন বারবার ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে!’’

ঘটনাচক্রে, রাজ্যপালের দ্বিতীয় অনুষ্ঠানটি ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিক উল্টো দিকে অবস্থিত ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্সে’। সেখানে চিকিৎসকদের সংগঠনের সম্মেলন-মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘সারা জীবন চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন মেনে চলেছি। কখনও অন্যথা হয়নি। আমি শপথ নিয়েছি, বাংলার মানুষের হয়ে কাজ করব। চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনের মতো এই শপথ আক্ষরিক অর্থে এবং ভাবগত দিক থেকে মেনে চলব।’’

বিক্ষোভ চলাকালীন মন্ত্রী বাবুলের এক বিক্ষোভকারীর টি-শার্ট টেনে ধরার ছবি ছড়িয়ে পড়িয়েছিল কয়েক দিনে। ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ওই ছাত্রকে টেনে বাবুল তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, আক্রমণ করেননি। সেই ফুটেজ দেখিয়েই বাবুল এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘আমি বারবার বলছি, কারও গায়ে হাত তুলিনি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy