রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে ‘ব্যতিক্রমী’ ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে। সন্ত্রাসের অভিযোগ শুনতে তিনি রাজভবনে শান্তিকক্ষ খুলেছেন। সন্ত্রাসের অভিযোগ সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে তিনি নানা এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন। কথা বলছেন আক্রান্ত অথবা নিহতের পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু পঞ্চায়েতের প্রচারের শেষ লগ্নে এসে তাঁর ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছে কার্যত সব রাজনৈতিক পক্ষই।
শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিযোগ করেছে, বোস বিরোধী নেতার মতো আচরণ করছেন। বিরোধী সিপিএমের বক্তব্য, ‘সন্ত্রস্ত’ এলাকায় ঘুরে বেড়ানো রাজ্যপালের কাজ নয়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও রাজ্যপালের এই ভূমিকার কার্যকারিতা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বলেছেন, ‘‘রাজ্যপাল সার্কিট হাউসে বসে দলের লোকের সঙ্গে বৈঠক করছেন। সেনাকে ডেকে, বিএসএফ-কে ডেকে কথা বলছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে। এটা অন্যায় হচ্ছে। উনি কে শান্তি দেখার?’’ তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়, রাজ্যের নির্বাচিত সরকারই তা দেখবে। রাজ্যপাল নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙছেন এবং সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে নজিরবিহীন অভিযোগও করেছে শাসক দল।
রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নে বুধবার মালদহে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের দাবি, ‘‘রাজ্যে বিজেপির ভাল নেতা নেই। তাই অমিত শাহ রাজ্যপালকে নেতা বানানোর চেষ্টা করছেন। রাজ্যপালের উচিত রাজভবনে বসে কেন্দ্রে রিপোর্ট পাঠানো। তা না করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন!’’ আলিমুদ্দিনে মঙ্গলবারও সেলিম একই সুরে বলেছিলেন, ‘‘যেখানে বিজেপি নেতারা যেতে পারছেন না, সেখানে রাজ্যপাল চলে যাচ্ছেন! হত্যা হয়ে যাওয়ার পরে তিনি ধূপ জ্বালতে যাবেন, এটা রাজ্যপালের কাজ হতে পারে না!” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিন মন্তব্য করেছেন, ‘‘রাজ্যপাল কী করবেন, জানি না। এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া কিছু করার আছে? কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসন কেন্দ্র করবে না। তার কারণ একটাই— দোস্তি।”
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার রাজ্যপাল বোসের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। যে ভাবে হিংসার অভিযোগ এসেই চলেছে, সেই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু ফের বলেছেন, ‘‘রাজ্যপাল অনেক কিছু করতে পারেন। কী করবেন, উনিই বলতে পারবেন!’’ তাঁর মন্তব্যে উষ্মার সুর ছিল স্পষ্ট।
যদিও রাজ্যপালের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আলিপুরদুয়ারে এ দিন তাঁর বক্তব্য, “রাজ্যপাল নিজের চোখে পরিস্থিতি দেখেছেন। যাঁরা জখম হয়েছেন, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে গিয়েছেন। বাস্তবে বাংলায় কী ঘটছে, সেটা উনি দেখেছেন। তাই এগুলো বন্ধের চেষ্টা করছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কিন্তু নির্বাচন কমিশনের হাতে কিছু নেই! মুখ্যমন্ত্রীই সবটা নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাই কমিশনকে বলে বা ধমক দিয়ে কোনও লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy