বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে শেষ দুই দিনে পাঁচটি অর্থ বিল পাশ করিয়েছিল রাজ্য সরকার। পরে তা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় রাজভবনে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজভবন থেকে প্রকাশিত এক লিখিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাজেট অধিবেশনে পাশ হওয়া তিনটি বিলে অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যে বিলগুলিতে তিনি অনুমোদন দিয়েছেন তার নামও উল্লেখ করে দিয়েছে রাজভবন। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (সংশোধনী) বিল ২০২৫’, ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল ২০২৫ (প্রথম) এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল ২০২৫ (দ্বিতীয়)।
সদ্যসমাপ্ত বাজেট অধিবেশনে আরও দুটি অর্থ বিল পাশ করা হয়েছিল। যে গুলি হল, ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিনান্স বিল ২০২৫ এবং একটি ‘রিপিল’ বিল। সেই বিলগুলিতে অবশ্য অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, যে কোনও বিল বিধানসভা থেকে পাশ হয়ে রাজভবনে এলে সেই প্রসঙ্গে খুঁটিয়ে খোঁজখবর নেন রাজ্যপাল। এ ক্ষেত্রেও বিলগুলি নিয়ে রাজ্যপালের মনে যে যে প্রশ্ন ছিল সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। সেই বিষয়গুলি নিয়ে যথাযথ উত্তর পাওয়ার পরেই ওই তিনটি বিলে অনুমোদন দেন তিনি। বাকি দু’টি বিলের ক্ষেত্রে এখনও স্পষ্ট কোনও জবাব না পাওয়ায় ছাড়পত্র মেলেনি বলে রাজভবন সূত্রে খবর।
তবে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নতুন নয়। কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারের ‘নরম-গরম’ সম্পর্ক হলেও, জগদীপ ধনখড়ের সময় থেকে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত চরমে ওঠে। সেই সময় থেকেই বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে রাজভবনের অতি সক্রিয়তার অভিযোগ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশন অবশ্য বিল নিয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করেই চলেছিলেন। সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক প্রথম দিকে ভাল হলেও, বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে টানাটানি-সহ শিক্ষা ক্ষেত্রে বিকাশ ভবন ও রাজভবনের সংঘাত হয়েছে প্রকাশ্যে। হাওড়ার পুর নির্বাচনের বিষয়টিও আটকে রয়েছে রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে দড়ি টানাটানিতেই। সেই আবহে পাঁচটি বিলের মধ্যে তিনটিতে ছাড়পত্র দিয়ে আরও দু’টির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের স্পষ্ট জবাব চান রাজ্যপাল।