Advertisement
১৫ জানুয়ারি ২০২৫
Kanayashree

কন্যাশ্রী প্রকল্পে উপভোক্তা এক কোটি ছুঁতে চায় নবান্ন, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোট পাখির চোখ মমতার

মমতার সরকারের উপভোক্তারাই বড় ভোটব্যাঙ্ক শাসকদলের। তাই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ এবং ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের মতোই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ‘কন্যাশ্রী’কেও তুরুপের তাস হিসাবে কাজে লাগাতে চান মমতা।

Government wants to touch Kanayashree project to one crore this year

কন‍্যাশ্রী প্রাপকের সংখ্যা হোক এক কোটি, লক্ষ্য রাজ্য সরকারের । —ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩০
Share: Save:

চলতি বছরেই কন্যাশ্রী প্রকল্পে উপভোক্তার সংখ্যা যাতে ১ কোটি ছুঁয়ে ফেলতে পারে, সেই মর্মে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। সম্প্রতি ‘স্টুডেন্ট উইক’-এর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের এই ‘লক্ষ্য’ স্থির করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই নির্দেশের পরেই এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে নবান্ন। ইতিমধ্যে ৮৯ লক্ষ ছাত্রী কন্যাশ্রী বৃত্তি পেয়েছেন। এ জন্য রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এখন প্রস্তুতি, যাতে চলতি বছরের মধ্যেই আরও ১১ লক্ষ কন্যার কাছে এই প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায়।

কেন চলতি বছর? কারণ, আগামী বছর বিধানসভা ভোট। সেই ভোটের আগেই ১ কোটি উপভোক্তার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে চান শাসকদলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

একের পর এক ভোটে জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের ‘সুফল’ পেয়েছেন মমতা। সেই সাফল্য এতটাই যে, তাঁরই ‘মডেলে’ বিভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়ে চালু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর মতো প্রকল্প। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-কে ২০২৬ সালের ভোটের আগে মমতা আরও প্রসারিত করবেন বলেই খবর। তার সঙ্গেই থাকবে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পটিও। সেগুলির পাশাপাশি ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কন্যাশ্রী প্রকল্পকেও ‘তুরুপের তাস’ হিসাবে কাজে লাগাতে চান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরেই সময় নষ্ট না করে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করেছেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা।

মূলত তিনটি ভাগে কন্যাশ্রীর অর্থ পান স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীরা। ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে অবিবাহিত হলে পাঠরতা ছাত্রীদের বছরে ১,০০০ টাকা দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের তরফ। দ্বিতীয় স্তরে ১৮ বছর বয়স হলে অবিবাহিত উচ্চ মাধ্যমিক বা কলেজে পাঠরতা ছাত্রীকে এককালীন ২৫,০০০ টাকা দেওয়া হয়। তৃতীয় পর্যায়ে স্নাতকোত্তর বা পেশাগত কোন কোর্স করতে গেলে অবিবাহিত ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। নবান্নের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এই তিনটি পর্যায়ে রাজ্যের ছাত্রীরা যাতে কন্যাশ্রীর সুবিধা পান, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে রাজ্যের শীর্ষ আধিকারিকদের সুনিশ্চিত করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য স্তরে তো বটেই, জেলাভিত্তিক ওই লক্ষ্য পূরণ করার ক্ষেত্রেও উদ্যোগী হতে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। নিজের শুরু করা প্রকল্প সম্পর্কে নিজেই আধিকারিকদের কাছ থেকে খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁর দেওয়া লক্ষ্য সম্পর্কে ‘বাড়তি সজাগ’ নবান্ন।

প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর শুধু কন্যাশ্রীই নয়, ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকারের অন্য প্রকল্পগুলির কাজেও গতি আনা হয়েছে বলেই প্রশাসনিক সূত্রের খবর। প্রশাসন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত পেয়েছেন ১ কোটি ২৭ লক্ষ সাইকেল। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে যেতে পারেন। তাঁর সফরের সময় থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সাইকেলগুলি স্কুলে স্কুলে দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয় ‘ঐক্যশ্রী’ বৃত্তি। এখনও পর্যন্ত ৪ কোটি ১৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে ওই বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। সেই খাতে রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে ৮,৯৩৬ কোটি টাকা। ‘শিক্ষাশ্রী’ প্রকল্পটি তফসিলি জাতির ছাত্রছাত্রীদের জন্য। এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৩৯ লক্ষ পড়ুয়া ওই বৃত্তি পেয়েছেন। খরচ হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য বরাদ্দ ‘মেধাশ্রী’ বৃত্তি প্রাপকের সংখ্যা ৬ লক্ষ ৬৮ হাজার। সেই বাবদে ব্যয় হয়েছে ৫৩ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা।

অন্য বিষয়গুলি:

kanyasree Kanyashree Scheme WB State Government CM Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy