Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

পোস্টাল ব্যালটে পদ্মেই ঝুঁকে সরকারি কর্মীরা

লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে পোস্টাল ব্যালটের নিরিখে ৩৯টিতে এগিয়েছিল বিজেপি। মাত্র একটি করে আসনে এগিয়ে ছিল তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

সাধারণ ভোটারের উল্টো পথেই কি হাঁটছেন সরকারি কর্মচারীরা? রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফলে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত মিলছে। বৃহস্পতিবার ঘোষিত ওই ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, তিন ক্ষেত্রেই বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবে লোকসভা ভোটের মতো এই উপনির্বাচনেও কেন্দ্রের শাসক দলের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের আস্থা অটুট।

লোকসভা নির্বাচনে বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে পোস্টাল ব্যালটের নিরিখে ৩৯টিতে এগিয়েছিল বিজেপি। মাত্র একটি করে আসনে এগিয়ে ছিল তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস। কিন্তু উপনির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে সরকারি কর্মীরা ঢেলে ভোট দিয়েছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, পোস্টাল ব্যালটে খড়্গপুরে বিজেপি প্রার্থী প্রেমচন্দ ঝা পেয়েছেন ২৭টি ভোট। মাত্র চারটি ভোট পেয়েছেন তৃণমূলের প্রদীপ সরকার। অথচ ওই আসনে রাজ্যের শাসক দল জয়ী হয়েছে ২০,৮৫৩টি ভোটে। ওখানে কংগ্রেসের চিত্তরঞ্জন মণ্ডলকে ভোট দিয়েছেন দু’জন সরকারি কর্মী। করিমপুরে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ২৩,৯১০। অথচ সেখানে পোস্টাল ব্যালটে তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহরায় পেয়েছেন মাত্র ১২টি ভোট। কিন্তু বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৫৮ জন সরকারি কর্মী। ওই আসনে সিপিএমের প্রার্থী গোলাম রাব্বি পোস্টাল ব্যালটে মাত্র তিনটি ভোট পেয়েছেন। অথচ ওই আসনে ‘নোটা’য় ভোট গিয়েছে চারটি। এই দুই আসনের তুলনায় কালিয়াগঞ্জে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ী তৃণমূলের তপন দেবসিংহ। পোস্টাল ব্যালটেও লড়াইটা তেমনই হয়েছে। তাতে এগিয়ে বিজেপি। পদ্মফুলের প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকারের ঝুলিতে গিয়েছে ১৫টি ভোট। তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছেন ১১টি। কংগ্রেসের ধীতশ্রী রায়কে ভোট দিয়েছেন তিন সরকারি কর্মী।

পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়ে থাকেন সরকারি কর্মীরা। প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের শাসক দলের প্রতি তাঁদের ‘ভরসা’ কমছে কেন? এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক সৌম্য বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এখনও ফলাফল দেখিনি। না-দেখে কিছু বলব না।’’ বিজেপি অনুমোদিত সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের মতে, সরকারি কর্মচারীদের প্রতি ‘বঞ্চনা’ চলছে এবং সেটাই পোস্টাল ব্যালটে বিজেপির ভাল ফলের অন্যতম কারণ। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি কর্মীদের বঞ্চনা করছে রাজ্য সরকার। তারই জবাব দিয়েছেন কর্মীরা। তাঁরা মনে করছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রাপ্য মিলবে। কোনও কিছু নিয়ে প্রতিবাদ করলেই রাজ্য সরকার বদলি করে দিচ্ছে। ভোটের মাধ্যমে তারও প্রতিবাদ করছেন সরকারি কর্মচারীরা।’’ বিজেপির প্রতি সরকারী কর্মীদের ‘আস্থা’ আসলে ‘বিভ্রান্তি’ বলে মন্তব্য করেছেন বাম সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি কর্মচারীরা হয়তো বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ভোটারেরা সারা দেশেই বিজেপি-কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরাও সেই পথে হাঁটবেন। একমাত্র বামপন্থীরাই সরকারি কর্মচারীদের

জন্য লড়াই করেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Postal Ballot TMC By Election BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy