মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আদালত থেকে স্থগিতাদেশ এনে সরকারের বিভিন্ন কাজে বাধা তৈরি করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ বা অন্যান্য কাজে সেই আইনি লড়াই চালাতেই সরকারের সব অর্থ শেষ হয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করলেন তিনি। বুধবার বিধানসভায় এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আদালতের কাছেও আবেদন জানাব, বিচারের বাণী যেন নীরবে নিভৃতে না কাঁদে।’’ তবে এ নিয়ে সরকারের ‘সদিচ্ছা’ সম্পর্কেই পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি ও বামেরা।
শিক্ষক নিয়োগে কেন্দ্রীয় তদন্তের মধ্যেই নতুন করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনি বাধা নিয়ে আগেও সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক শিবির। এ দিন সেই অভিযোগের বৃত্ত আরও নির্দিষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যখনই আমরা লোক নিতে চাই বা রেশনের (দুয়ারে রেশন) মতো প্রকল্প নিই, তখনই আদালতে যায়। আর স্থগিতাদেশ নিয়ে চলে আসছে। আদালতে লড়তে লড়তেই সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।’’ এক্ষেত্রে সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘যতদূর যেতে হয় যাব। কারও গায়ের জোরের কাছে সরকার মাথা নীচু করবে না।’’ সরকারের ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে আদালতের স্থগিতাদেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চান। তাঁদের স্বার্থেই এই প্রকল্প চলবে।’’
সরকারি উদ্যোগ নিয়ে যে সব মামলা হচ্ছে সে সম্পর্কে এ দিন কিছুটা আক্রমণাত্মক সুর ছিল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আমি একা খাব। অন্য কাউকে খেতে দেব না। এটা হতে পারে না।’’ আপাতত বন্ধ থাকা ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প সরকার চালাবেই, এই ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ডিলারদের ৪৮০ কোটি টাকা ইনসেনটিভ দেওয়া হয়েছে। ৯৯ শতাংশই ভাল, এক শতাংশ তা চায় না।’’
এ দিন অধিবেশনের প্রশ্নোত্তরে উপস্থিত হয়ে নিজেই একাধিক দফতরের প্রশ্নের জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে দলীয় মন্ত্রী অখিল গিরির কুরুচিকর মন্তব্য নিয়ে বিরোধীদের লাগাতার সমালোচনার মধ্যেই এ দিন তফসিলি ও আদিবাসী মানুষের জন্য সরকারি উদ্যোগের ফিরিস্তি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তফসিলি জাতি ও জনজাতি মানুষের শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জাতি সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা ছিল। জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করে সেটা জানতে পারি। নিয়ম বদল করে সহজ করা হয়েছে। তাই ‘দুয়ারে সরকারে’ কয়েক লাখ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য সম্পর্কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিন বাঁকুড়ার মেজিয়ায় পাল্টা বলেন, ‘‘খুঁত রেখেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছেন। যাতে কেউ না কেউ আদালতে যান আর নিয়োগ প্রক্রিয়া স্তব্ধ হয়ে যায়। তা হলে রাজ্য সরকারকে আর মাইনে দিতে হবে না! মাইনে দেওয়ার টাকা কোথায়?’’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘যতটা খেতে পারবেন, মুখ্যমন্ত্রী তার চেয়ে বেশি মুখে নিয়ে দিয়েছেন! দুর্নীতি এখন গলায় আটকে গিয়েছে। তার পরে এই সব বলছেন। দুর্নীতি হলে কেউ দালতে যাবে না? আদালত তো ঠিক প্রশ্নই তুলেছে।’’ সেলিমের কটাক্ষ, ‘‘নরেন্দ্র মোদী বলেন, তিনি আসার আগে দেশে কেউ কিছু করেনি। মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, তিনি আসার আগে রাজ্যে কোথাও কিছু হয়নি। এটা একটা রোগ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy