বেতন সংস্কার এবং মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত দাবিদাওয়া নিয়ে আরও বড় আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে চান ‘যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের’ নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
আবার পথে নামলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। চার দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন কলকাতা পুরসভার সামনে। আর সেই বিক্ষোভস্থলে দাঁড়িয়েই বেতন সংস্কার এবং মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত দাবি ‘দিদিকে’ বলার চেষ্টা করলেন ‘যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের’ নেতারা। ‘‘দিদিকে তো কিছুই বলতে পারলাম না, অন্য কেউ ফোন ধরলেন,’’—কটাক্ষ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের। আরও বড় আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছে বলেও জানালেন কর্মী সংগঠনগুলির শীর্ষনেতারা।
অবিলম্বে বেতন কমিশনের সুপারিশ জমা নিয়ে কেন্দ্রীয় হারে বেতন কাঠামোর সংস্কার করা, রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের (স্যাট) নির্দেশ মেনে নিয়ে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া, বর্ধিত বেতন ও ডিএ বাবদ প্রাপ্য যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া, ‘বদলি সন্ত্রাস’ বন্ধ করা এবং সমস্ত শূন্য পদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা— এই পাঁচ দফা দাবি নিয়েই মূলত বুধবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। বিজেপির ছাতার তলায় থাকা সংগঠন ‘সরকারি কর্মচারী পরিষদ’ বামপন্থী সংগঠন ‘সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন’ যেমন এই মঞ্চে রয়েছে, তেমনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, পুরসভার কর্মী-সহ সরকারের বেশ কয়েকটি বিভাগের এমন কিছু কর্মী সংগঠনও এই মঞ্চে শামিল হয়েছে, যাদের সঙ্গে কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই।
যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের ব্যানারে মোট ১০টি কর্মী সংগঠনের সদস্যরা বুধবার কলকাতা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখান। সেই বিক্ষোভ কর্মসূচির মঞ্চ থেকেই নেতারা ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন নম্বরে। ‘‘দিদিকে বললেই যখন সব সমস্যা মিটবে, তখন দিদিকে বলার চেষ্টাই করলাম,’’—কটাক্ষের সুরে মন্তব্য যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের নেতাদের।
বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালীন বিকেল ৩টে নাগাদ কর্মী সংগঠনগুলির নেতারা মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নম্বরটিতে ফোন করতে শুরু করেন। সংগঠনের দাবি, বার দশেক ফোন করা হয়েছে ওই নম্বরে।
আরও পড়ুন: অনেকেই পাননি, তবু ২৪ ঘণ্টায় ১ লক্ষ ফোন
ফোন করে অভিযোগ কি জানানো গিয়েছে? সমস্যার সমাধানের আশ্বাস কি মিলেছে? মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এমন ভাবে ফোন নম্বর দিয়েছিলেন, আমরা ভেবেছিলাম, তিনি নিজেই হয়তো সমস্যার কথা শুনবেন। কিন্তু তাঁকে তো আমরা ফোনে পেলামই না, যে দু’এক বার লাইন পাওয়া গেল, তাতে অন্য কেউ ফোন ধরলেন।’’
আরও পড়ুন: এনএমসি বিলের প্রতিবাদে একদিনের চিকিৎসা ধর্মঘট, বন্ধ আউটডোরে ভোগান্তির অপেক্ষা
তৃণমূলের কর্মী সংগঠনের কয়েক জন নেতা অবশ্য পাল্টা বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো একবারও বলেননি যে, তিনি নিজে ফোন ধরবেন।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘রোজ লক্ষ লক্ষ ফোন ঢুকবে আর মুখ্যমন্ত্রী একা সেই সব ফোন রিসিভ করবেন এবং কথা বলবেন— এই রকম যদি কোনও কর্মী সংগঠনের নেতা ভেবে থাকেন, তা হলে সে নেতার রাজনীতি থেকে দূরে থাকাই উচিত। এই বুদ্ধি নিয়ে রাজনীতি হয় না।’’
বিক্ষোভকারী কর্মীরা অবশ্য দমার পাত্র নন। দেবাশিসের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে অন্যরা ফোন ধরলেন, সে না হয় মানলাম, তাঁকে না হয় সমস্যার কথাও জানালাম। ওই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করাটাই তো সবচেয়ে বড় সমস্যা। অনেক বার ফোন করে মাত্র কয়েক বার যোগাযোগ করা গিয়েছে বলে তাঁর দাবি। যোগাযোগ যখন যখন করা গিয়েছে, তখন কী উত্তর মিলেছে? দেবাশিস বললেন, ‘‘প্রথমে জানতে চাওয়া হয়েছে, কে ফোন করছেন, কোন জেলা থেকে করছেন? তার পরে সমস্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা বেতন, ডিএ, বদলি সন্ত্রাস রোখা বা শূন্য পদগুলিতে স্থায়ী নিয়োগের কথা বলতেই কখনও ফোন কেটে দেওয়া হয়েছে। কখনও আবার বলা হয়েছে, ফোন করার জন্য ধন্যবাদ, আপনার নম্বর নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে, আমরা আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি ফোন করব।’’
অভিযোগ নথিবদ্ধ হয়ে কী লাভ, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তা পৌঁছবে কি না, পৌঁছলে কবে পৌঁছবে, কবে তার সুরাহা হবে— সে সব প্রশ্নের কোনও উত্তর কেন মিলছে না? প্রশ্ন মঞ্চের নেতাদের।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy