Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

মাতৃত্বকালীন ছুটি নেই, চাকরি ছাড়ছেন রোগী সহায়কেরা

রোগীদের সুষ্ঠু পরিষেবা প্রদানে রোগী সহায়কেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ওই পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৪
Share: Save:

দক্ষ, পারদর্শী। তবুও সম্পূর্ণা কেন নয়! লক্ষ্মীপুজোর বিকালে আফশোস যাচ্ছে না নিরুপমা রাজ, জ্যোতি সাহু, ঊর্মিলা মণ্ডলদের। সরকারি হাসপাতালে কিছু দিন আগেও যাঁদের পরিচয় ছিল রোগী সহায়ক। মাতৃত্বকালীন ছুটি না মেলায় যে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।

রোগীদের সুষ্ঠু পরিষেবা প্রদানে রোগী সহায়কেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ওই পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। গর্ভবতী মহিলাদের রক্তপরীক্ষা, ওষুধ প্রদান, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করানোর প্রশ্নে যাঁরা সহায়ক হন, তাঁদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বলে কিছু নেই! রোগী সহায়কদের একাংশের অভিযোগ, চাকরি ও মাতৃত্বের দোটানায় কাজ ছাড়তে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন।

লেডি ডাফরিন হাসপাতালে ২০১৩ সালে রোগী সহায়কের কাজে যোগ দেন নিরুপমা রাজ। সেই কর্মজীবনে ছেদ টানল নিরুপমার মাতৃত্বের ইচ্ছাপূরণ। রবিবার নিরুপমা বলেন, ‘‘অনেক আফশোস নিয়ে মাস চারেক আগে চাকরিটা ছাড়লাম।’’

রোগী সহায়কেরা জানান, এই পরিস্থিতিতে পরিবর্ত দেওয়ার একটা চল রয়েছে। কিন্তু মাস সাতেক কাজ করার পরে পরিবর্ত যদি কাজ না ছাড়েন তা হলে কিছু করার থাকে না। সম্ভবত সে জন্য ঝুঁকি না নিয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ভাইকে পরিবর্ত হিসাবে বেছে নিয়েছেন এনআরএসের রোগী সহায়ক জ্যোতি সাহু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ভাই শুধু আমার জন্য রাজি হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি ই যদি না থাকে তা হলে মেয়েদের অগ্রগতি নিয়ে এত প্রচার কেন!’’

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি সঞ্জয় মজুমদার বলেন, ‘‘মাতৃত্বকলীন ছুটি দিতে আপত্তি নেই। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের নির্দেশিকায় তার কোনও সুযোগ নেই। আমরা ছুটি দিলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মানবে না। লোক চাইবেন।’’

চাকরি বাঁচাতে আত্মীয়কে পরিবর্ত হতে রাজি করিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রোগী সহায়ক ঊর্মিলাও। তাঁর কথায়, ‘‘মাতৃত্বকালীন ছুটি চাওয়া কি খুব বড় দাবি!’’ আলিপুরদুয়ারের রোগী সহায়ক মালবিকা বর্মণের অভিজ্ঞতা আরও তিক্ত। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শারীরিক জটিলতার কারণে মালবিকা ১২ দিন কাজে আসতে পারেননি। তার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই রোগী সহায়ককে গত জুলাইয়ে বরখাস্তের চিঠি ধরিয়েছে বলে অভিযোগ।

পশ্চিমবঙ্গ রোগী সহায়ক সমিতির রাজ্য সম্পাদক মিঠুন ঘোষ বলেন, ‘‘মাতৃত্বকালীন ছুটি মহিলার অধিকার। সেটা না থাকা দুর্ভাগ্যজনক।’’ স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দফতর চুক্তির ভিক্তিতে যাঁদের নিয়োগ করেন তাঁরা এই সুবিধা পান। কিন্তু রোগী সহায়কদের আউটসোর্স করা হয়। তাঁদের এই সুযোগসুবিধা দেওয়ার নানা জটিলতা রয়েছে। বলতে পারেন, ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Maternal Leaves Governance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy