Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
GNLF

পাহাড়ে জমি পেতে মন ঘিসিংয়ের ‘স্বাভিমান’

কয়েকদিন আগেই মোটরস্ট্যান্ডে জনসভা করেছেন বিমল গুরুং ও পরে বিনয় তামাং, অনীত থাপারা। ভোটের আগে বিজেপির জোটসঙ্গী জিএনএলএফ নতুন করে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে।

নেতা:  শিলিগুড়ি শহরের অদূরে দাগাপুরে একটি সভাকক্ষে বিমল গুরুং। বুধবার।

নেতা: শিলিগুড়ি শহরের অদূরে দাগাপুরে একটি সভাকক্ষে বিমল গুরুং। বুধবার। ছবি: স্বরূপ সরকার।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:০১
Share: Save:

দীর্ঘদিন পর দার্জিলিংয়ে জনসভার ডাক দিল জিএনএলএফ। গোর্খা জনজাতিকে আত্মসম্মান বজায় রাখার কথা বলে দার্জিলিং মোটরস্ট্যান্ডে আগামী ৩১ জানুয়ারি সভার ডাক দেওয়া হয়েছে। মূল বক্তা জিএনএলএফ প্রধান মন ঘিসিং৷

কয়েকদিন আগেই মোটরস্ট্যান্ডে জনসভা করেছেন বিমল গুরুং ও পরে বিনয় তামাং, অনীত থাপারা। ভোটের আগে বিজেপির জোটসঙ্গী জিএনএলএফ নতুন করে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে। তাই গুরুং, তামাংদের থেকে নিজেদের আলাদা বোঝাতে জনসভাকে ‘স্বাভিমান’ নাম দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া-সহ পাহাড়ে গ্রামে গ্রামে জনসভার সমর্থনে প্রচারও শুরু করা হয়েছে।

২০১৮ সালে ২৯ জানুয়ারি সুবাস ঘিসিংয়ের মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে পাহাড়ের টানা বন্‌ধের পর সভা করেছিল জিএনএলএফ। সেই সময় মোর্চার গুরুং-তামাংদের মধ্যে বিভেদকে কাজে লাগিয়ে ঘর গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়। কিছুটা সফল হলেও জিএনএলএফের সেই পুরনো চেহারা পাহাড়ে ফেরেনি। শেষে, রাজ্যের শাসক দলের হাত ছেড়ে কয়েক বছর ধরে গেরুয়া শিবিরে মন ঘিসিংরা। গুরুংও বিনয় তামাংদের মতো তৃণমূলের সমর্থনে নেমে পড়ার পর নতুন করে আবার ময়দানে ঘিসিংরা। তাঁদের আশা, পাহাড়বাসীর একটা বড় অংশ তৃণমূল বা মোর্চাকে ভোট দেবে না। সেখানে সরাসরি বিজেপি না হলেও জিএনএলএফের একটা সুযোগ রয়েছে।

জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা নীরজ জিম্বা বিজেপি টিকিটে বিধায়কও হয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে তো দল, চেয়ার বাঁচানোর রাজনীতি চলছে। কলকাতায় গিয়ে সবাই মাথা নিচু করে বসে থাকছে। গোর্খাদের মাথা উঁচু রাখাটা সুবাস ঘিসিং আমাদের শিখিয়ে গিয়েছেন। তাই ৩১ জানুয়ারি গোর্খা জাতির স্বাভিমান রক্ষা সভা।’’ একই রকমভাবে দলের দার্জিলিং শাখার সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ লিম্বু বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে ব্যক্তি কেন্দ্রীয় রাজনীতি চলছে। পাহাড় ও গোর্খাদের বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করা চলছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সভা।’’

যদিও পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, বি‌ধানসভা ভোটের আগে জমি কতটা প্রস্তুত তা একবার ঝালাই করে নিতেই সভার ডাক দেওয়া হয়েছে। জিএনএলএফ নেতারা বুঝে গিয়েছেন, মোর্চা দুই গোষ্ঠীর বিবাদ থাকলেও তাঁদের তরফই বিধানসভা প্রার্থী করা হবে। তৃণমূলের সমর্থনের কথা বলে তাঁরা ভোটে লড়বেন। আবার গত ১২ বছর ধরে প্রতি ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ পাহাড়বাসী পদ্মফুলের দিকেই ভোট দিয়ে গিয়‌েছেন। বিনয়, বিমলের তৃণমূলের পাশে গেলেও মোর্চার একটা অংশ তা মানতে পারছেন না। সরাজ থাপা থেকে তিলক চন্দ্র রোকা, শঙ্কর অধিকারী থেকে হেমন্ত গৌতমের মত নেতারা সরাসরি বিজেপিতে ঢুকে গিয়েছেন। তাই গেরুয়া সমর্থনে পাহাড়ে ভাল ভোটই হবে বলে আশা করে জিএনএলএফ নেতারা ময়দানে নেমে পড়লেন।

মোর্চা কোনও পক্ষই জনসভা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে গুরুংপন্থী কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, বিজেপিই পিছন থেকে সব করাচ্ছে। জিএনএলএফ বিজেপি প্রতীকে আবার ভোটে লড়তে পারে। তাই মোর্চা বিরোধী ফ্রন্ট চালাতে জিএনএলএফ নেতারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bimal Gurung GNLF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE