গীতাপাঠ করছেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পিছনের সারিতে বিজেপি নেতা সুবীর নাগ (গোলাপি পাঞ্জাবীতে)। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার ব্রিগেডে ২৪ ডিসেম্বর লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ হবে। তার আগে রবিবার গীতাপাঠের আসর বসল হুগলির মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরে। আর তা ঘিরে লাগল রাজনীতির রং!
আসরে শামিল হয়ে স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় গীতাপাঠ করলেন। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, স্থানীয় বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা থেকে অন্য পুরসদস্যেরাও ছিলেন। বিজেপির অভিযোগ, লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই তৃণমূল এ ভাবে ‘জনসংযোগ’ কর্মসূচি করছে। বিরোধীদের আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। তৃণমূল শিবির বা মন্দির কর্তৃপক্ষ অভিযোগে আমল দেননি।
ব্রিগেডের কর্মসূচি সফল করতে ময়দানে নেমেছে গেরুয়া শিবির। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসার কথাও শোনা যাচ্ছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্য মনে করছেন, ওই কর্মসূচির পাল্টা হিসাবে তৃণমূলের ‘পরামর্শে’ মাহেশের মন্দিরে গীতাপাঠের আয়োজন হল। রাজ্য সরকারের টাকায় এই মন্দির সংস্কার হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, দু’বছর আগে সংস্কারের পরে রত্নবেদিতে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহ পুনঃপ্রতিষ্ঠার সময় থেকেই বাৎসরিক উৎসব হচ্ছে। এ দিন সেই উৎসবই ছিল। এ বারেও ‘বিশ্বশান্তি যজ্ঞ’ হয়েছে। যোগ করা হয়েছিল গীতাপাঠের আসর। শ্রীরামপুরেরই বাসিন্দা ভাস্কর বলেন, ‘‘আগে কোনও দিন এ ভাবে গীতাপাঠের আয়োজন করা হয়নি। এ বারেই করতে হল!’’
বিজেপি বক্তব্যকে ‘সঙ্কীর্ণ মনোভাব’ বলে উল্লেখ করে কল্যাণের বক্তব্য, মন্দির কর্তৃপক্ষ তিন-চার মাস আগেই এই কর্মসূচি ঠিক করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রতিনিধি হিসাবে পাঠিয়েছেন জানিয়ে কল্যাণ বলেন, ‘‘রথের সময়েও দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) এখানে পুজো করিয়েছেন। গত রথযাত্রায় যত মানুষকে ভোগ বিতরণ করা হয়েছে, তার আয়োজন মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন। এটা নতুন কিছু নয়। দিদি এখানে রথও টেনেছেন।’’ তিনি নিয়মিত পুজোপাঠ করেন জানিয়ে সাংসদের মন্তব্য, ‘‘হিন্দু ধর্ম বিজেপির পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’’ বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মন্দির সকলের জন্য উন্মুক্ত। বিশেষ নিমন্ত্রণ লাগে বলে তো জানি না!’’
বিজেপির হাওড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সুবীর নাগও কল্যাণের পাশাপাশি গীতাপাঠ করেছেন। তৃণমূল নেতাদের ‘আধিক্যের’ বিষয়টি তিনি বড় করে দেখছেন না। তাঁর বক্তব্য, রাজনৈতিক ভাবে নয়, তিনি আমন্ত্রিত ছিলেন প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী এবং তাঁর পুত্র তথা মন্দিরের সম্পাদক পিয়াল অধিকারীর সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে। লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ কমিটির তিনি হুগলি জেলা প্রমুখ। সুবীরের দাবি, ‘‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের প্রস্ততি হিসাবে অধ্যয়ন শিবির সর্বত্র হচ্ছে। এখানে রাজনীতির রং দেখা ঠিক নয়।’’
পিয়ালেরও বক্তব্য, সব দলের নেতাই মন্দিরে আসেন। সবাই স্বাগত। লোকসভা ভোটের সঙ্গে মন্দিরের কোনও সম্পর্ক নেই। লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের সঙ্গেও এই আয়োজনের কোনও সম্পর্ক নেই। এসেছিলেন কংগ্রেসের কৌস্তুভ বাগচীও।
যদিও, ব্রিগেডের কর্মসূচিতে যোগদান নিয়ে ঘোষণা শোনা গেল। ব্রিগেডে গীতার পাঁচ অধ্যায় পাঠ করা হবে। এখানেও সেই পাঁচ অধ্যায়ই পাঠ করা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, দু’হাজার কণ্ঠে গীতাপাঠ হবে। বাস্তবে হয়েছে কয়েকশো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy