বংশীহারিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। ছবি: অমিত মোহান্ত।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলা, তাঁর মা, স্বামী ও গাড়িটির চালকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ২টো নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি থানার মেহেন্দিপাড়া এলাকায় ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ওই দুর্ঘটনার পরে মৃতদের পরিজনেরা বেআইনি ভাবে রাস্তার উপরে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বুধবার বিকেলে রেজিনাবিবি (২০) নামে ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর বাড়ি এই জেলারই কুমারগঞ্জ থানার চাঁদ হরিপুর এলাকায়। রাতে রেজিনাবিবিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। তখন তাঁরা একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে মালদহ রওনা দেন। গাড়িতে রেজিনা ছাড়াও ছিলেন তাঁর স্বামী ইয়াসিন মণ্ডল (২৮) এবং মা রসিদাবিবি (৪৫)। অ্যাম্বুল্যান্সটি চালাচ্ছিলেন কনক মহন্ত (২৬)। তাঁর বাড়ি বালুরঘাটের রঘুনাথপুর এলাকায়। দুর্ঘটনায় সকলেই মারা যান।
অ্যাম্বুল্যান্সটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। ভিতরে চাপচাপ রক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরেই ওই ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে যান। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা দখল করে ১০ চাকার লরিগুলি দাঁড়িয়ে থাকে। তাতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য অখিল বর্মন বলেন, ‘‘এখানে কোনও ট্রাক টার্মিনাস নেই। তাই ট্রাকগুলি রাস্তাতেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। কিন্তু রাস্তাও যথেষ্ট চওড়া নয়। প্রশাসনের উচিত এই বিষয়টিতে নজর দেওয়া।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, টার্মিনাস না হওয়া পর্যন্ত ট্রাকগুলি যথেচ্ছ দাঁড় করিয়ে না রেখে কোনও নির্দিষ্ট এলাকাতেই রাখা হোক। জেলার পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
বংশীহারিতে মৃতদের শোকার্ত পরিজন।
রেজিনাবিবির পরিবার জানিয়েছে, প্রথমে হাসপাতালের মাতৃযানের আসতে দেরি হবে শুনে তাঁরা ওই বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সটি ভাড়া করেন। রেজিনাবিবির মামা ফজলুর রহমানের অভিযোগ, ‘‘ভাগ্নীর শরীর তেমন খারাপ ছিল না। অহেতুক রেফার করা হয়েছিল।’’ স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থা জটিল ছিল বলে শুনেছি। যা এই হাসপাতালে চিকিৎসা করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁকে মালদহে রেফার করা হয়। তবে আমি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছি।’’ রাস্তায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy