Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bakibur Rahman

রেশনে অনিয়ম ঘিরে চারটি এফআইআর নদিয়ায়, অথচ বাকিবুরকে ‘চেনেন না’ কেউই

পুরনো একটি এফআইআর (নম্বর ২০৩/ ২২) অনুয়ায়ী, ২০২২ সালের ২৬ মে ধুবুলিয়ার পাশে তাতলা এলাকার গুদাম থেকে ভ্যানে ৪২ বস্তায় ১৯৮৯ কেজি আটা রেশনের আটা পাচারের সময় হাতেনাতে ধরেছিল পুলিশ।

bakibur

বাকিবুর রহমান। —ফাইল চিত্র।

সুস্মিত হালদার, দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
কৃষ্ণনগর ও নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:২০
Share: Save:

রাজ্য পুলিশের দায়ের করা তিনটি থানার চারটি পুরনো এফআইআরের ভিত্তিতে তারা রেশন কাণ্ডের তদন্ত শুরু করে এবং কালক্রমে বাকিবুর রহমান এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে বলে ইডি সূত্রে প্রথম থেকেই দাবি করা হয়েছিল। সেই এফআইআর-এর তথ্য অনুযায়ী, যাঁদের আটা বা চালকলে হানা দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা প্রত্যেকেই বাকিবুর রহমানের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুরনো একটি এফআইআর (নম্বর ২০৩/ ২২) অনুয়ায়ী, ২০২২ সালের ২৬ মে ধুবুলিয়ার পাশে তাতলা এলাকার গুদাম থেকে ভ্যানে ৪২ বস্তায় ১৯৮৯ কেজি আটা রেশনের আটা পাচারের সময় হাতেনাতে ধরেছিল পুলিশ। ভ্যান চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ জানতে পারে, মায়াকোলের চাল ও আটা ব্যবসায়ী দিলীপ ঘোষের গুদাম থেকে সে বস্তাগুলো নিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ ভ্যানচালক ও দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চোরাই মাল মজুতের মামলা রুজু করে। দিলীপ পরে হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন। সেই মামলা এখনও চলছে। সম্প্রতি বাকিবুরের চাল ও আটা কলে অভিযানের পাশাপাশি দিলীপের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল ইডি। বৃহস্পতিবার দিলীপ দাবি করেন, “আমি কিছুই জানি না। ওই ভ্যানচালককেও চিনি না। আটাও আমার নয়। বাকিবুর বলে কারও নামই শুনিনি।”

আর একটি এফআইআর (নম্বর ৬৪০/ ২১) বলছে, ২০২১ সালে ৬ জুলাই কোতোয়ালি থানার জাহাঙ্গিরপুর পশ্চিমপাড়ায় বিশ্বনাথ প্রামাণিকের বাড়িতে হানা দিয়ে জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ প্রায় ৭ রেশনের আটা উদ্ধার করেছিল। গ্রেফতার হন বিশ্বনাথ। ১৪ দিন পর জামিনে ছাড়া পান। তাঁর বাড়িতেও সে দিন হানা দিয়েছিল ইডি। এ দিন অবশ্য তিনি দাবি করেন, “আমি একেবারেই ছোট ব্যবসায়ী। বাকিবুরদের কী করে চিনব? যোগাযোগের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।” তাঁর ব্যাখ্যা, “অনেক পরিবার রেশনের আটা নিলেও খায় না। তারাই আমার কাছে বিক্রি করে দিত। আমি ১৭-১৮ টাকা কেজি দরে কিনতাম, ২২ টাকায় বিক্রি করতাম। এখন আর ও সব করি না।”

তৃতীয় এফআইআর (নম্বর ১৩৬/ ২০২০) অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগর মল্লিকপাড়ার চাল ব্যবসায়ী প্রদীপকুমার দে-র নতুনবাজারের দোকানে হানা দিয়ে ১৬ বস্তা রেশনের আটা উদ্ধার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। প্রতি বস্তায় ৪৮টি করে প্যাকেট ছিল। প্রদীপকুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ, পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এঁর বাড়িতেও হানা দিয়েছিল ইডি। প্রদীপেরও দাবি, “এলাকায় যারা রেশনের আটা খায় না, তারাই এক প্রকার জোর করে আমার কাছে বিক্রি করত। এর বাইরে আমি কিছুই জানি না। বাকিবুর অনেক বড় ব্যাপার। আমরা একেবারেই ছাপোষা।”

আর একটি এফআইআর (নম্বর ৩৩৪/ ২০) অনুযায়ী, ২০২০ সালেরই ৫ সেপ্টেম্বর নবদ্বীপ ব্লকের মহেশগঞ্জ ফকিরতলায় ঠাকুরদাস সাহার গম কলে হানা দিয়ে রেশনের ২১ বস্তা গম এবং ১০ বস্তা আটা ধরেছিল এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। গ্রেফতার হন এক কর্মচারী। ২৯ সেপ্টেম্বর চার্জশিট দিয়ে চোরাই মাল মজুতের অভিযোগ আনা হয়। এ দিন ঠাকুরদাস দাবি করেন, “ওই সময়ে আমার গমকল কর্মচারীরা চালাত। আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না।” পুজো দিতে যাওয়ার তাড়া আছে বলে তড়িঘড়ি তিনি গমকল বন্ধ করে দেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Bakibur Rahman arrest ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE