এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে শুধু বেলিয়াড়া গ্রাম নয়, গোটা উলিয়াড়া পঞ্চায়েতেই পরিস্থিতি থমথমে। —নিজস্ব চিত্র।
বোমা মেরে, কুপিয়ে, গলা কেটে খুন প্রাক্তন প্রধান। আর সে খুনে অভিযোগের তির বর্তমান প্রধানের স্বামীর বিরুদ্ধে। দু’জনেই অবশ্য একই দলের। আর তৃণমূলের সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাঁকুড়ার উলিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।
শনিবার বিষ্ণুপুর ব্লকের যে গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে, সেই বেলিয়াড়া সংখ্যালঘু প্রধান এলাকা। ইদের সন্ধ্যায় সেই গ্রামেই ঘটে গিয়েছে ভয়াবহ সংঘর্ষ। বোমা এবং ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতে যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, তাঁর নাম শেখ বাবর আলি ওরফে বাবলু। তিনি উলিয়াড়া পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন এক সময়ে। বর্তমানে যিনি পঞ্চায়েত প্রধান, তিনিও তৃণমূলেরই। কিন্তু প্রধানের স্বামী রহিম মণ্ডলের সঙ্গে শেখ বাবরের সম্পর্ক মোটেই ভাল ছিল না বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। রহিম এবং বাবরের অনুগামীরা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী হিসেবেই পরিচিত এলাকায়।
শনিবার সন্ধ্যায় অনুগামীদের নিয়ে রাস্তার মোড়ে বাবর বসেছিলেন বলে খবর। বাবর অনুগামীদের দাবি, আচমকাই চারদিক থেকে বাবরদের ঘিরে ধরে রহিমের দলবল এবং সকেট বোমা ছোড়া শুরু করে। এলাকা ছেড়ে বেরতে না পেরে বাবর ঘটনাস্থলেই এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন বলে খবর। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। রহিমের দলবল শাবল দিয়ে ওই ব্যক্তির বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে শেখ বাবরের মুখে বোমা মারে বলে অভিযোগ। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁকে কুড়ুল দিয়ে কোপানো হয় এবং শেষে তরোয়াল দিয়ে গলা কেটে দেওয়া হয়। রহিম মণ্ডল প্রত্যক্ষ ভাবে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি শেখ বাবরের অনুগামীদের।
ইদের সন্ধ্যায় এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে শুধু বেলিয়াড়া গ্রাম নয়, গোটা উলিয়াড়া পঞ্চায়েতেই পরিস্থিতি থমথমে। বাবরের মৃত্যুর পরেও রাতে বাবর অনুগামীদের বাড়িতে ফের হামলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ না পৌঁছনো পর্যন্ত রহিমের দলবল তাণ্ডব চালায় বলেও খবর। পুলিশ বেশ কয়েকজনকে বেলিয়াড়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু বাবর অনুগামীদের দাবি, ধৃতরা কেউ হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না।
আরও পড়ুন: ফুটপাত থেকে আট মাসের শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা, দেহ মিলল পার্কের মধ্যে
আরও পড়ুন: জটিল অস্ত্রোপচার করে তরুণীকে বাঁচালেন ২ সরকারি ডাক্তার
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই যে এই ভয়াবহ ঘটনা, সে কথা তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারেননি। দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার কথায়, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা সব শুনেছি। পুলিশকে বলেছি, অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে। ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলেই আশা করছি।’’ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ প্রসঙ্গে শ্যামল বলেন, ‘‘আমি এখনও পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর পাইনি। পেলে বলতে পারব, কী কারণে এ রকম ঘটল।’’ যাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠছে, সেই তৃণমূল নেতা রহিম মণ্ডলের কী হবে? জেলা তৃণমূল সভাপতির কথায়, ‘‘তদন্তে যদি দেখা যায়, তিনিই দোষী, অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy