প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত। —ফাইল চিত্র।
২০০০ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে কেশপুরকে কেন্দ্র করে তখন উত্তপ্ত রাজনীতি। পাঁশকুড়ায় তৃণমূল প্রার্থী বিক্রম সরকারের কাছে হেরে গিয়েছিলেন গুরুদাস দাশগুপ্ত। তবে ২০০৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ফের ওই কেন্দ্রে তৃণমূলকে হারিয়ে সাংসদ হন তিনি। এরপর ২০০৯ সালে ঘাটাল (পাঁশকুড়া লোকসভা লুপ্ত হয়ে তৈরি) লোকসভা কেন্দ্রে ফের নির্বাচিত হন। তার আগে তিনবার রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন গুরুদাস। সংসদের বিভিন্ন অধিবেশনে জাতীয় স্তরের বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর বক্তৃতা সরকার ও বিরোধীপক্ষের সকলের নজর কাড়ত।
তবে জাতীয় স্তরে এই ভূমিকার পাশাপাশি নিজের লোকসভা কেন্দ্র তথা পাঁশকুড়া, ঘাটাল সহ অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন উন্নয়নের দাবি নিয়েও সংসদে সরব হতেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা। পশ্চিম পাঁশকুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিআই নেতা চিত্তরঞ্জন দাশঠাকুরের কথায়, ‘‘পাঁশকুড়া ও বালিচক স্টেশনের কাছে উড়ালপুল, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ, ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ফুল সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়া,পাঁশকুড়ার প্রত্যন্ত এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা খোলা, গ্যাসের সরবরাহ কেন্দ্র চালু-সহ বিভিন্ন উন্নয়নের কাজে গুরুদাসবাবু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছে দাবি জানাতেন। বালিচক উড়ালপুল তৈরির অনুমোদনে অবদান রয়েছে তাঁর। শ্রমিক সহ সমস্ত গরীব মানুষের জন্য লড়াইয়ের অন্যতম মুখ ছিলেন।’’ প্রাক্তন সাংসদের মৃত্যুর খবর স্মৃতিবিহ্বল পাঁশকুড়ার মঙ্গলদাঁড়ি গ্রামের প্রবীণ সিপিআই কর্মী খগেন্দ্রনাথ মাজি। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁশকুড়ায় এলেই দলের কর্মী শ্যামল বেরার মোটর সাইকেলে গ্রামে গ্রামে ঘুরতেন। মানুষকে দলের নীতি-আদর্শ বোঝাতেন। গ্রামের রাস্তাঘাট ও স্কুলের উন্নয়নে জোর দিতেন।’’
সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক তথা তমলুকের বিধায়ক অশোক দিন্দা বলেন, ‘‘তমলুকের সঙ্গে গুরুদাসবাবুর যোগাযোগ কয়েক দশকের। সাতের দশকে তমলুকের প্রবাদপ্রতিম সিপিআই নেতা বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভোটে লড়াই হত তাঁরই দাদা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায়ের। বিশ্বনাথবাবুর সঙ্গে থেকে প্রচার করতেন গুরুদাসবাবু। পরবর্তী সময়ে আমাদের জেলার সাংসদ হিসেবে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy