ফাইল চিত্র
পুজোর পরে স্কুল খোলা এবং তার জন্য স্কুলের চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চ থেকে শৌচাগার-সহ পরিকাঠামো সারাইয়ের তহবিল জোগানোর আশ্বাস সত্ত্বেও টাকা না-আসায় চিন্তা বাড়ছিল। অবশেষে স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে শিক্ষা দফতরকে ১০৯ কোটি ৪২ লক্ষ ৩৭ হাজার ১৩৩ টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য সরকার।
কিন্তু তাতেও কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। প্রথমত, শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, হাজার বারো স্কুলের মধ্যে ৬৪৬৮টি স্কুল মেরামতির জন্য এই টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, বাকি প্রায় অর্ধেক স্কুলে কি সংস্কারের কোনও প্রয়োজন নেই? থাকলে তারা মেরামতির টাকা পাবে কোথা থেকে? দ্বিতীয়ত, এত দেরিতে তহবিল মঞ্জুর করার পরে স্কুলগুলি টাকা পাবে কবে আর কবেই বা মেরামতি হবে?
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি জানান, বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, সাগর, কাকদ্বীপ, কুলতলি, মথুরাপুরের বেশির ভাগ স্কুলের পরিকাঠামো খারাপ হয়েছে সব থেকে বেশি। পরপর ঘূর্ণিঝড়ে স্কুলভবনের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার জল ঢুকেছে অনেক স্কুলবাড়িতে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরেরও বেশ কিছু ব্লকে বিভিন্ন স্কুলভবনের অবস্থা খুব খারাপ।
চন্দনবাবু বলেন, “শিক্ষা দফতর থেকে ওই টাকা কবে স্কুলে পৌঁছয়, সেটাই এখন দেখার। পুজোর ছুটি পড়ে যাচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই। তার পরে পরেই যদি স্কুল খুলতে হয়, সে-ক্ষেত্রে এই ছুটির মধ্যেই মেরামতির কাজ শুরু করতে হবে।”
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “রাজ্যে সরকার পোষিত এবং সরকার অনুমোদিত স্কুল আছে প্রায় ১২ হাজার। অথচ অর্থ মঞ্জুর হয়েছে ৬৪৬৮টি স্কুলের জন্য। কিসের ভিত্তিতে বাকি স্কুলগুলি বাদ গেল, তা বোঝা যাচ্ছে না। সেগুলির কি কোনও মেরামতির দরকার নেই? দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ। সব স্কুলেরই শৌচালয় কি আর ব্যবহারযোগ্য আছে? স্কুলভবনের আলো, পানীয় জল সরবরাহ ঠিক আছে কি না, তা-ও দেখা জরুরি।”
বিকাশ ভবন সূত্রে বলা হচ্ছে, মেরামতির কাজে দ্রুত হাত পড়লে পুজোর ছুটির পরেই, নভেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে স্কুল খোলা যেতে পারে। স্কুল খোলার আগে শৌচাগার থেকে শুরু করে স্কুলভবন মেরামতির জন্যই অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এত কম সময়ে মেরামতি শেষ করে স্কুল খোলা সম্ভব হবে কী ভাবে?
ফেব্রুয়ারিতে দু’মাসের জন্য স্কুল খোলা হলেও প্রায় দেড় বছর ধরে সব স্কুলই কার্যত বন্ধ। দীর্ঘকালের অযত্নে কোথাও স্কুলভবনের দেওয়াল ঘেঁষে আগাছা-ঝোপঝাড় জমেছে, ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে অনেক স্কুলের দরজা-জানলার পাল্লা ভেঙে গিয়েছে, কোথাও বা খারাপ হয়ে গিয়েছে শৌচাগারের আলো। শহরাঞ্চলের থেকে গ্রামীণ স্কুলের অবস্থা বেশি খারাপ। স্কুল খোলার আগে পরিকাঠামোর অবস্থা কেমন, মেরামতিতে কত টাকা লাগবে, ইত্যাদি বিষয়ে সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাকে দিয়ে একটি সমীক্ষা করিয়েছিল শিক্ষা দফতর। সেই সমীক্ষার ফলাফল দেখেই অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছে বলে বিকাশ ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে। তারা মনে করছে, টাকা পেলে সারাইয়ে দেরি হবে না।
অল পোস্ট গ্রাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন গড়াই বলেন, “গ্রামীণ স্কুলের পরিকাঠামো বেশি খারাপ। সেই সব স্কুল যাতে মেরামতির জন্য অবশ্যই টাকা পায়, সেটা শিক্ষা দফতরকে দেখতে অনুরোধ করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy