পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর করা মামলায় বুধবার ফের নগর দায়রা আদালতে হাজির করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু এই প্রথম বারের জন্য ইডির মামলায় জামিনের আর্জি জানাননি পার্থর আইনজীবী সেলিম রহমান। জামিনের আবেদন জানানো হয়নি অর্পিতার আইনজীবীর তরফেও।
জামিনের আর্জি জানানোর পরিবর্তে আদালতে বার বার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পার্থ এবং অর্পিতার আইনজীবীরা। তদন্তে কেন সময় লাগছে, সে কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ডাকাতির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন ইডির আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “একটা ডাকাতি হলে সেটা ‘শিডিউল অফেন্স’। কিন্তু ডাকাতি করে কেউ যদি এ দিক-ও দিক চলে যান, তা হলে কি ২৪ ঘণ্টায় তদন্ত সম্ভব!” আদালতে ইডির অভিযোগ, বেসরকারি আইন কলেজগুলিকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নিতেন পার্থ। প্রাক্তন মন্ত্রীকে ফের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর জন্য আদালতে যে নথি পেশ করেছে ইডি, তাতেও এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। তা ছাড়াও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের অবৈধ কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত ছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ করেননি।
পার্থর আইনজীবীর তরফে অভিযোগ তোলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে যে পনেরো হাজার পাতার নথি পেশ করেছে ইডি, সেগুলির অধিকাংশই অস্পষ্ট এবং বোধগম্য নয়। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে পার্থ এবং অর্পিতাকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ইতিমধ্যেই পার্থ ও অর্পিতার নামে মোট ১০৩ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থার তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পার্থ ও তাঁর সহযোগীর ৪৮.২২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আগেই অর্পিতার দুই ফ্ল্যাট থেকে মোট ৪৯.৮০ কোটি নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া সোনাদানার বাজারমূল্য ৫.০৮ কোটি টাকারও বেশি। সব মিলিয়ে মোট ১০৩.১০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে পার্থর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যকে ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে ৭ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পার্থ এবং অর্পিতা, দু’জনেই এখন জেলে রয়েছেন। ইডি সূত্রের খবর, ওই দু’জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৪,৬৩০টি নথি পাওয়া গিয়েছে। সেই সব নথিই এ কিছু দিন আগে বিচার ভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর পার্থ ও অর্পিতার জামিনের শুনানির দিন তাঁদের আইনজীবীরা আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ইডি চার্জশিট পেশ করলেও মামলার তদন্তে উঠে আসা কোনও নথিই অভিযুক্তদের দেওয়া হয়নি। তখনই ওই সমস্ত নথি জমা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন আইনজীবীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy