শিয়ালদহ স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করতে কলকাতার আরও পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনকে যন্ত্রনির্ভর আধুনিক সুরক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে। ওই স্টেশনগুলি হল দমদম, বিধাননগর, কলকাতা, বালিগঞ্জ এবং মাঝেরহাট।
শিয়ালদহ ডিভিশনের ওই পাঁচটি স্টেশন দিয়ে দৈনিক কয়েক লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। শহরতলি থেকে আসা যাত্রীদের একটা বড় অংশের কাছেই কলকাতার প্রবেশপথ ওই স্টেশনগুলি। ফলে রেল কর্তাদের দাবি, ওই পাঁচটি স্টেশনকে বাইরে রেখে শিয়ালদহ স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করা সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শিয়ালদহকে ঘিরে থাকা পাঁচটি স্টেশনের প্রত্যেকটিই অবস্থানগত ভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফলে বহুস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একত্রে শিয়ালদহ-সহ মোট ছ’টি স্টেশনকে নির্বাচিত করা হয়েছে।’’ ওই ছ’টি স্টেশন ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেমের (আইএসএস) আওতায় আসছে। এ জন্য চলতি বছরের রেল বাজেটে ৬ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
কী ভাবে গড়ে তোলা হবে ওই বহুস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা?
রেল সূত্রের খবর, সারা দেশে মোট ২০২টি স্টেশনে বিমানবন্দরের আদলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেমের তালিকায় থাকা সব ক’টি স্টেশনে যাত্রীদের ঢোকা এবং বেরোনোর পথ নির্দিষ্ট করা থাকবে। অন্য কোনও পথ দিয়ে ফাঁক গলে যাতে কেউ কোনও ভাবেই স্টেশনে ঢুকতে বা বেরোতে না পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে। স্টেশনে প্রবেশের সময়ে নির্দিষ্ট নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে তবেই প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনো যাবে। কোন স্টেশন দিয়ে যাত্রীরা কখন, কী ভাবে ভিতরে ঢুকছেন এবং কী ভাবে বেরিয়ে আসছেন তার সব কিছুই রেলের নিরাপত্তা আধিকারিকদের নজরদারির আওতায় থাকবে।
যাত্রীদের ঢোকা এবং বেরোনো ছাড়াও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মধ্যে যাতায়াতের পথে (সার্কুলেটিং এরিয়া) একাধিক সিসি ক্যামেরা থাকবে। যাত্রীদের প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনো থেকে ট্রেনে ওঠা, সব কিছুই ক্যামেরার নজরে থাকবে। ওই কাজে ‘ফেস রেকগনিশন’ ক্যামেরা ব্যবহার করার পরিকল্পনাও রয়েছে রেলের। ওই ব্যবস্থায় অপরাধী বা সন্দেহজনক ব্যাক্তিদের চিহ্নিত করে আটক করার কাজ অনেকটাই সহজ হবে বলে মনে করছেন রেল কর্তারা। কোনও অপরাধীর ছবি এবং তথ্য কৃত্রিম মেধা নির্ভর ক্যামেরার সার্ভারে আগাম দেওয়া থাকলে ওই ব্যক্তিকে স্টেশন চত্বরে কোথাও দেখা গেলে ক্যামেরাই তাকে চিহ্নিত করে কর্তব্যরত আধিকারিকদের বার্তা পাঠিয়ে সতর্ক করবে। এ ছাড়াও স্টেশনের প্রবেশপথে বিভিন্ন পর্যায়ে ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর, ব্যাগেজ স্ক্যানার, হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের মতো একাধিক যন্ত্র থাকবে। দূরপাল্লার ট্রেনে ওঠার সময়ে লাগেজ স্ক্যান করার পাশাপশি ‘ফ্রিস্কিং’-এর ব্যবস্থাও থাকবে।
দমদম জংশন দিয়ে এখন দিনে প্রায় ১ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। বালিগঞ্জ দিয়ে যাতায়াত করা যাত্রীর সংখ্যা দিনে প্রায় ৫০ হাজার, বিধাননগরে ৭০ হাজার, কলকাতা স্টেশনে ২৮ হাজার এবং মাঝেরহাটে ওই সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় প্রস্তাবিত এবং নির্মীয়মাণ মেট্রোগুলির কাজ সম্পূর্ণ হলে এই স্টেশনগুলিতে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। ফলে নিরাপত্তার দিক থেকে পারস্পরিক সমন্বয়ের স্বার্থে স্টেশনগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা খুব জরুরি ছিল বলে মনে করছেন
রেলের আধিকারিকেরা।
নজরদারির পাশাপাশি যাত্রীদের যাতায়াতের পথ মসৃণ রাখতে সব ক’টি স্টেশনেই যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও শুরু হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy