তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দরের এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার হওয়া নিয়ে শনিবার যে মত পোষণ করেছিলেন তিনি। সেই অবস্থান থেকে প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবারের পর রবিবারও তাঁকে পরিবহণ ব্যবসায়ী নিশার ও আমির খানের বাড়িতে উদ্ধার হওয়া অর্থ এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)-র হানা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।
প্রশ্নের মুখে পড়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাজনীতিতে অভিযোগ যাই আসুক, এজেন্সি এজেন্সির কাজ করবে। বেআইনি সম্পত্তির জন্য গ্রেফতার করতেই হবে। কারণ, দেশ চালানোর জন্য সরকারের এটা দরকার।” তিনি আরও বলেন, “সেটা যদি কেউ করে থাকে, তাহলে কারও কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়। তাই না? হানা নিয়ে তো কারও কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়। যেসব গেম এখন বেরিয়েছে, ব্যাঙ্কের থেকেও অনেকে লুট করছে টাকা। এজেন্সির সঙ্গে সঙ্গে মানুষকেও সচেতন থাকতে হবে, যাতে এমন কোনও ফাঁদে পা না দেওয়া হয়।”
প্রসঙ্গত, শনিবার এই প্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দলকে তুলোধনা করেছিলেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিধানসভা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমি এর জবাব দেব কেন? দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রকম তল্লাশিতে বহু টাকা উদ্ধার হচ্ছে। তা নিয়ে কি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জবাব দিতে যান?’’
ফিরহাদ এ প্রসঙ্গে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শিল্পপতি নীরব মোদীর কথাও তোলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘দেশ থেকে নীরব মোদী হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তার পরে কি দেশের প্রধানমন্ত্রী কোন জবাব দিয়েছিলেন? এ ক্ষেত্রে কেন আমাদের জবাবদিহি করতে হবে? কেবল মাত্র বাছাই করে অবিজেপি রাজ্যগুলিকে টার্গেট করা হচ্ছে। সেখানে ইডি, সিবিআই ও ইনকাম ট্যাক্স দিয়ে রেড করিয়ে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে, যাতে আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করি।’’
সঙ্গে তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, কলকাতার মেয়রের আরও দাবি, অবিজেপি রাজ্যগুলির ভাবমূর্তি নষ্ট করে বিজেপিশাসিত রাজ্যে বিনিয়োগ ডেকে নিয়ে যেতে চাইছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় বাংলার ব্যবসাকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপি। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে এমন ভীতির সঞ্চার করছে যে, বিনিয়োগকারীরা এ রাজ্যে বিনিয়োগ না করে বিজেপিশাসিত রাজ্যে বিনিয়োগ করতে বাধ্য হন।’’
প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শাসকদলের নেতাদের যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলেছেন। তাই এক বিজেপি নেতার কথায়, নিজেরা এই ধরনের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাতেই নিজের অবস্থান বদল করেছেন কলকাতা বন্দরের বিধায়ক ফিরহাদ।