Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Firhad Hakim

না পোষালে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে যোগ দিন, ডিএ নিয়ে প্রশ্ন তুলে আক্রমণ ফিরহাদ হাকিমের

১৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতিক্রমে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৩ শতাংশ ডিএ-র ঘোষণা করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

Picture of Firhad Hakim.

কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ০০:৩২
Share: Save:

মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে এ বার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবিকে কাঠগড়ায় তুলে আক্রমণ শানালেন কলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার বিধাননগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ‘আশ্রয় প্রকল্প’-এ বাড়ি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ছিলেন মন্ত্রিসভায় তাঁর সতীর্থ তথা দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী প্রমুখ। সেখানেই নিজের বক্তৃতায় ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের দাবিকে আক্রমণ করেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘ডিএ নিয়ে এখন অনেক কথা হচ্ছে। মানুষের কাছে কোনটা প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার) হওয়া উচিত? যারা অবহেলিত এবং বঞ্চিত, তাদের মুখে ভাত তুলে দেওয়া? নাকি যারা অনেক পাচ্ছে তাদের আরও বেশি পাইয়ে দেওয়া?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যারা অনেক পায়, তাদের আরও পাইয়ে দেওয়া আমার কাছে পাপ বলে মনে হয়। আমি বলছি, না পোষায় ছেড়ে দিন না। সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট (কেন্দ্রীয় সরকার) যখন অনেক টাকা দিচ্ছে, সেখানে গিয়ে কাজে যোগ দিন। আমি কোন মাল্টিন্যাশনাল (বহুজাতিক সংস্থা)-এর ক্লার্ক নই। মাল্টিন্যাশনালের কোনও বাবু নই, এগ্‌জিকিউটিভ নই। ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আমার মাইনে হয়, আমি মানুষের সেবা করি। সেই ব্রতটা সবার আগে দরকার।’’

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতিক্রমে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৩ শতাংশ ডিএ-র ঘোষণা করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কিন্তু, সরকারি কর্মচারীরা পূর্ণ ৩৫ শতাংশ ডিএ দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন। ২১-২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্য জুড়ে সরকারি কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করেছে। তাতেও নিজেদের দাবিতে অনড় থেকেছে রাজ্য সরকার। গত শুক্রবার আবার ডিএ প্রদানের বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। সেই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে আগামী ১ মার্চ থেকেই ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার সরকারি কর্মচারীদের একাংশের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘৩ শতাংশের জায়গায় ৬ শতাংশ দিলে আমরাই আনন্দ পেতাম যদি আমরা আমাদের বকেয়া এক লক্ষ কোটি টাকা পেতাম।’’ ফিরহাদের কথায়, ‘‘যারা বঞ্চিত অবহেলিত, তাদের আরও অবহেলায় ঠেলে দেওয়া, কখনওই আমাদের সরকারের কাজ হতে পারে না। তাই যাদের আশ্রয় নেই, তাদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করো। যাদের পেটে খিদে আছে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করো। যাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার তাদের চিকিৎসা দাও। যে মেয়েরা পিছিয়ে আছে তাদের কন্যাশ্রী দিয়ে এগিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করো। যে বাবারা মেয়েদের বিয়ে দিতে পারছে না তাদের রূপশ্রী প্রকল্প দিয়ে বাবাদের মুখে হাসি ফোটাও।’’ ফিরহাদ আরও জানান, তাঁর মনে হয় এটা একটি পবিত্র কর্তব্য। তাঁর কথায়, ‘‘যেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার করছে। ৩ শতাংশের জায়গায় ৬ শতাংশ, ১০ শতাংশ ও ৪০ শতাংশ ডিএ না দিয়ে, আগের সরকার যে কাজ করে যেতে পারেনি এই সরকার সেই কাজ করবে।’’

মেয়রের এমন আক্রমণের জবাবে কোঅর্ডিনেশন কমিটি জানিয়েছে, ডিএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের অন্য মন্ত্রীরা যাই বলুন, তারা তাদের অবস্থানে অনড় থাকবে। কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘আগামী ১০ মার্চ যে প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে, তা সফল হলেই রাজ্য সরকার বুঝবে, সরকারি কর্মচারীদের ঐক্যের ফল কী হতে পারে।’’

তবে তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তী কোনও ধর্মঘট বা কর্মবিরতিতে শামিল হওয়ার কথা বলেননি। তাঁরা তাকিয়ে ১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানির দিকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy