Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘বাগে’ এলেন বরকতি, খোয়া গেল লাল আলো

শেষ পর্যন্ত লালবাতি খোলা হলো ইমাম নুর উর রহমান বরকতির গাড়ি থেকে। শনিবার দুপুরে তাঁকে ‘বোঝাতে’ যান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর প্রায় একই সময়ে আর এক মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বরকতির বিরোধিতায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

বাতিহীন: লালবাতি ছাড়াই টিপু সুলতান মসজিদে এলেন বরকতি। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

বাতিহীন: লালবাতি ছাড়াই টিপু সুলতান মসজিদে এলেন বরকতি। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত লালবাতি খোলা হলো ইমাম নুর উর রহমান বরকতির গাড়ি থেকে। শনিবার দুপুরে তাঁকে ‘বোঝাতে’ যান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর প্রায় একই সময়ে আর এক মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বরকতির বিরোধিতায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন। পরে তিনি বিক্ষোভও দেখান টিপু সুলতান মসজিদের সামনে। সেখানে উত্তেজিত বরকতি তেড়ে যান সিদ্দিকুল্লা বাহিনীর দিকে। তত ক্ষণে অবশ্য চার জন ‘বলিষ্ঠ’ লোক ইমামের গাড়িতে লাগানো লালবাতি খুলে নিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, সরকারি কর্তব্য পালন করতেই ওই চার জনকে ‘পাঠানো’ হয়েছিল।

এর পর প্রতিক্রিয়া জানতে বরকতিকে ফোন করা হয়। তাঁর ভাই জানান, ওঁর শরীর খারাপ, ঘুমোচ্ছেন।

বরকতির গাড়ির লালবাতি নিয়ে গত ক’দিন ধরেই বিতর্ক চলছে। বিরোধীদের বক্তব্য, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলেই বিনা তোয়াক্কায় বরকতি লালবাতি ব্যবহার করে যাচ্ছেন।

প্রথম দিকে পুলিশ বা সরকার কেউই বিষয়টি আমল দিতে চায়নি। ইতিমধ্যে ইমাম এমন কিছু কথাবার্তা বলেন, তা যথেষ্ট প্ররোচনামূলক বলে অভিযোগ ওঠে। এই অবস্থায় শুক্রবার পুলিশ কমিশনারকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়ে শীর্ষমহলে আলোচনা হয়। পাশাপাশি বরকতিকে ‘বাগে’ আনতে দায়িত্ব দেওয়া হয় ফিরহাদকে। অন্য দিকে বরকতির বিরোধিতায় সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী মাঠে নামার কথা ঘোষণা করার পরেও দল তাঁকে নিরস্ত করেনি।

আরও পড়ুন:বাতি নেই, ব্যাজ আছে

ফিরহাদ টিপু সুলতান মসজিদ ঘুরে বরকতির বাড়ি গিয়ে মিনিট পনেরো তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। বরকতিকে বলা হয়, গাড়ি থেকে লালবাতি খুলে নিতে হবে এবং ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে ক্ষতিকর কথা বলা বন্ধ করতে হবে।

সিদ্দিকুল্লা সাংবাদিক বৈঠকে জানান, বরকতি তাঁর ইমামের পদ ব্যবহার করে উগ্রপন্থা, দেশদ্রোহিতা, আইন হাতে তুলে নেওয়ার মতো কাজ করছেন। বরকতি দাবি করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই তিনি গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করেন। সিদ্দিকুল্লা বলেন, ‘‘এই দাবি মিথ্যা। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ব্ল্যাকমেল করছেন।’’

এর পর বিকেলে টিপু সুলতান মসজিদের সামনে বরকতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদসভা চলছিল। সভা চলাকালীন গাড়ি থেকে নেমে সিদ্দিকুল্লার দিকে তেড়ে যান বরকতি। পুলিশ তাঁকে ধরে মসজিদে ঢুকিয়ে দেয়। রাতে দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘শুধু আলো খুললে তো হবে না, পাকিস্তানের সমর্থনে মন্তব্য করায় ওঁকে গ্রেফতার করতে হবে।’’ আর সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের প্রশ্ন, ‘‘বরকতির গাড়িতে যে লাল আলো লাগানো তা মুখ্যমন্ত্রীর জানা। তিনি চুপ ছিলেন কেন?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Nurur Rahman Barkati Red Beacon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE