অবস্থান বিক্ষোভ করছেন নিজেদের মাওবাদী বলা কিছু লোক। প্রতীকী চিত্র।
ক্ষোভ দানা বাঁধছে বেশ কিছু দিন ধরে। তাঁদের একদা সতীর্থ অনেকে রাজ্যের ‘পুনর্বাসন প্যাকেজ’ পেয়েছেন। তাঁরা পাননি। তাই বলছেন, ‘‘অপেক্ষারও সীমা আছে।’’ এক সময়ের মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য বা ‘লিঙ্কম্যান’ হিসেবে অভিযুক্তদের একাংশের ক্ষোভের এ-খবর রয়েছে প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে।
সাম্প্রতিক ‘ভার্চুয়াল’ প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাক্তন মাওবাদীদের প্রায় দশ হাজার হোমগার্ডের চাকরি দিয়েছি। এক-দু’জন যদি বাদ পড়ে যায়, তাদের বায়োডেটা ডিজি-র কাছে পাঠিয়ে দাও। তারাই কিন্তু বাইরে থেকে ডেকে নিয়ে আসছে, আমার কাছে খবর আছে।’’ গোয়েন্দা ও পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১২-য় পুরুলিয়ায় মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের নেতা বিক্রম ধরা পড়ার পরে, স্কোয়াড ভেঙে যায়। কেউ ঝাড়খণ্ডের দলমা স্কোয়াডে ভেড়েন। অনেকে আত্মসমর্পণ করে হোমগার্ডের চাকরি নেন। যাঁরা তা পাননি, তাঁরাই প্রশ্ন তুলছেন।
গত বিধানসভার আগে-পরে চাকরির দাবিতে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন নিজেদের ‘প্রাক্তন মাওবাদী’ বলে দাবি করা কিছু লোক। সম্প্রতি পুনর্বাসন প্যাকেজ চেয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার সঙ্গে দেখা করেন প্রায় পঞ্চাশ জন। একাধিক শীর্ষ মাওবাদী নেতা গ্রেফতার বা আত্মসমর্পণ করলেও, ঝাড়খণ্ডের নানা এলাকায় এখনও মাওবাদী গতিবিধি রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি। গত মাস তিনেকে বার বার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলের নানা জায়গায় মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার মিলেছে। বৃহস্পতিবারও বাঁকুড়ার তালড্যাংরার রাস্তা থেকে তেমন পোস্টার উদ্ধার হয়। যদিও তার মাওবাদী-যোগ নিয়ে সন্দিহান পুলিশ।
পুলিশের দাবি, পোস্টারের নানা ঘটনার তদন্তে ‘মাওবাদী লিঙ্কম্যান’-সহ কয়েক জনকে ধরা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়-সহ পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের বিভিন্ন থানার ওসি-আইসিদের বৈঠকে পোস্টার পড়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বলে সূত্রের দাবি। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন অবশ্য বলেন, ‘‘জেলার জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের গতিবিধি নেই।’’
গোয়েন্দাদের একাংশের অনুমান, এক সময় যাঁরা দলমা স্কোয়াডে গিয়েছিলেন, এ রাজ্যের প্রাক্তন মাওবাদীদের ‘ক্ষোভের’ সুযোগ তাঁরা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। ‘আদিবাসী মূলবাসী জনগণের কমিটি’র নেতা তথা বর্তমানে তৃণমূলের বলরামপুর ব্লক সভাপতি অঘোর হেমব্রমের দাবি, ‘‘সে পরিবেশ এখন নেই। পুনর্বাসন প্যাকেজের সুবিধা তো অনেকেই পেয়েছে। কেউ বাকি থাকলে, আমরা তাঁদের কথা যথাস্থলে জানাব।’’ পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেনের দাবি, ‘‘পুনর্বাসন প্যাকেজের দাবি যথাস্থানে পাঠানো হয়েছে।’’
পুরুলিয়ার কয়েক জন প্রাক্তন মাওবাদীর বক্তব্য,‘‘সরকার আমাদের কথা ভাবে কি না, কিছু দিন দেখব।’’ অপেক্ষায় কাজ না হলে কী পদক্ষেপ করবেন, তা অবশ্য ভাঙছেন না তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy