Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে, দাবি আব্দুলের বাবার

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) বক্তব্য ছিল, বিস্ফোরণের ঠিক আগে শাকিল আহমেদ ও সুবহান শেখের সঙ্গে হাত মিলিয়েই হাকিম ওই বাড়ির দোতলায় বসে আইইডি তৈরি করছিল। সেটা ফেটেই বিপত্তি।

এখন যেমন: খাগড়াগড়ের সেই বাড়ি। ছবি: উদিত সিংহ

এখন যেমন: খাগড়াগড়ের সেই বাড়ি। ছবি: উদিত সিংহ

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:১৩
Share: Save:

বাবা জানতেন, ছেলে বর্ধমানে রিকশা চালায়। আর কাজের ফাঁকে আরবি ভাষার পাঠ নেয়। বাবা যেটা জানতেন, সেটা আধা সত্য। ছেলে বর্ধমানে থাকত ঠিকই। তবে, রিকশা নয়, বর্ধমানের খাগড়াগড়ের ভাড়া বাড়িতে বসে বিস্ফোরক তৈরি করত বীরভূমের সেই যুবক আব্দুল হাকিম।

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) বক্তব্য ছিল, বিস্ফোরণের ঠিক আগে শাকিল আহমেদ ও সুবহান শেখের সঙ্গে হাত মিলিয়েই হাকিম ওই বাড়ির দোতলায় বসে আইইডি তৈরি করছিল। সেটা ফেটেই বিপত্তি। এবং ফাঁস হয় এক ভয়ঙ্কর যড়যন্ত্রের জাল! ২০১৪-র ২ অক্টোবর বিস্ফোরণের দিন ঘটনাস্থলেই আব্দুল ধরা পড়ে মারাত্মক জখম অবস্থায়। শুক্রবার কলকাতার এনআইএ বা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার বিশেষ আদালত খাগড়াগড়-কাণ্ডে যে ১৯ জনকে সাজা শুনিয়েছে, তাদের অন্যতম আব্দুল ও তার স্ত্রী আলিমা বিবি। ১০ বছর জেল হয়েছে আব্দুলের, আলিমার ছ’বছরের।

মহম্মদবাজারের ডেউচা গ্রামের বাড়িতে বসে শনিবার আব্দুলের বৃদ্ধ বাবা শেখ শাহজামাল দাবি করলেন, ‘‘আমার ছেলে-বৌমা নির্দোষ। ওদের ফাঁসানো হয়েছে।’’ আর কিছু বলতে চাননি বৃদ্ধ। পাশে থাকা আব্দুলের ভাইরাও চাননি, সংবাদমাধ্যমকে বাবা আরও কিছু বলুন। আলিমার বাড়ি মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে। ঘটনার চার বছর আগে সে বর্ধমানের নিগুনচটিতে মাদ্রাসায় পড়ত। সেই সময়েই তার সঙ্গে হাকিমের পরিচয় ও বিয়ে।

আলিমার সঙ্গেই সে দিন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল রাজিয়া বিবি ওরফে গুলসোনা ওরফে রুমি শামিম। নদিয়ার বারবাকপুরের এই যুবতীরও ছ’বছরের জেল হয়েছে। তার স্বামী শাকিল আহমেদ মারা গিয়েছিল ওই বিস্ফোরণে খাগড়াগড়ের বাড়িতেই। চোখের সামনে সেই মৃত্যু দেখেও রাজিয়া ঠান্ডা মাথায় ঘরের মেঝেয় রক্ত মুছে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল। রাজিয়ার একমাত্র ভাই মফিকুল গাজি বলেন, “শাকিলের সঙ্গে বিয়ে না হলে রাজিয়ার জীবনটা বেঁচে যেত। আমরা বুঝতে পারিনি। তবে এক বছর পরে দিদি ফিরবে। বাচ্চাগুলো মাকে পাবে। এই বাড়িতেই ওকে রাখব।”

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের মহম্মদ রেজাউল করিম এবং শমসেরগঞ্জের আব্দুল ওয়াহব মোমিন। ২০১৫ সালে ওই দু’জনকে এনআইএ গ্রেফতার করেছিল। রেজাউলের ভাই সেন্টু শেখ বলছেন, ‘‘দাদাকে নিয়ে পরিবারকে বিব্রতই হতে হয়েছে। ফলে তার সাজা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’ ডোমকলের বক্সিপুরের নুরুল হক মণ্ডলকে হাওড়া থেকে এনআইএ ধরেছিল। ৮ বছর জেলের সাজা পাওয়া নুরুলের বাবা মাসাদুল মণ্ডলের দাবি, ‘‘বিশ্বাস হয় না নুরুল ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’’ লালগোলার মকিমনগরের মাদ্রাসার মালিক মোফাজ্জুল হোসেনেরও সাজা হয়েছে। তার পর থেকেই পরিবার বাড়ির সদর দোরে খিল দিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Khagragarh Blast Terrorism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy