Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

নগদের আশাতেই চাষিরা ধান বেচছেন ব্যবসায়ীদের

ছোট-বড়-মাঝারি শিল্পের সঙ্গে সঙ্গে কৃষির নানা ক্ষেত্রে নোট বাতিলের ধাক্কা লেগেছে। নবান্নের চলতি মরসুমে দেখা যাচ্ছে, নোট-কাণ্ডের করাল ছায়া পড়েছে ধান বিক্রিতেও। চাষিরা আতান্তরে।

কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

ছোট-বড়-মাঝারি শিল্পের সঙ্গে সঙ্গে কৃষির নানা ক্ষেত্রে নোট বাতিলের ধাক্কা লেগেছে। নবান্নের চলতি মরসুমে দেখা যাচ্ছে, নোট-কাণ্ডের করাল ছায়া পড়েছে ধান বিক্রিতেও। চাষিরা আতান্তরে।

রাজ্য সরকার সরাসরি ধান কিনতে নেমেছে ঠিকই। সরকারকে ধান বিক্রি করলে টাকা সরাসরি যাচ্ছে কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু নতুন নিয়মের ফেরে এক লপ্তে সব টাকা তুলতে পারছেন না চাষিরা। হয়রান হতে হতে সরকারকে ছেড়ে অগত্যা বেসরকারি ব্যবসায়ীদেরই ধান বেচতে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন তাঁরা। কারণ, সে-ক্ষেত্রে বিক্রির টাকা একসঙ্গে মিলছে। এবং মিলছে নগদে।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক রীতিমতো উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘‘পাঁচশো আর হাজার টাকার পুরনো নোট বাতিল হওয়ায় সহায়ক মূল্য দিয়েও চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনতে পারছে না সরকার। ব্যাঙ্কের নতুন নিয়মের কারণে কৃষকেরা রাজ্য সরকারকে ধান বিক্রি করতে রাজিই

হচ্ছেন না।’’ চাষিদের কাছ থেকে সরকারের ধান কেনায় ঘাটতি ঠিক কতটা? খাদ্য দফতরের তথ্যই বলছে, গত বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত কৃষকদের থেকে ১০-১১ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কিনেছিল সরকার। কিন্তু এ বার জানুয়ারির তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ধান কেনা গিয়েছে মাত্র পাঁচ লক্ষ ৭২ হাজার মেট্রিক টন। মন্ত্রী জানান, গত কৃষিবর্ষে ১৭ লক্ষ কৃষকের ধান কেনা হয়েছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৬ হাজার ১০০ জন কৃষক ধান বেচতে রাজি হয়েছেন।

কৃষকদের বক্তব্য কী? ধানচাষিরা খাদ্য দফতরকে বলেছেন, সরকারকে ধান বিক্রি করলে বেশি টাকা পাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু তা ব্যাঙ্কে জমা পড়ে যাওয়ায় চোখে দেখা যায় না। কিন্তু কোনও ব্যবসায়ীকে ধান বেচলে সেই সমস্যা নেই। পুরো টাকাটা একসঙ্গে এবং নগদে চলে আসে হাতে। ধান বিক্রির ক্ষেত্রে আরও একটি সমস্যার কথা জানাচ্ছেন কৃষকেরা। তাঁদের কথায়, সরকারকে ধান বিক্রি করতে হলে নানা ধরনের নথি দেখাতে হয়। সেটা রীতিমতো ঝকমারি। এই অবস্থায় খাদ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, যিনি ধান বিক্রি করতে চান, তিনি যে এক জন চাষি— সেই মর্মে গ্রাম পঞ্চায়েতের একটা শংসাপত্র লাগবে শুধু। এ ছাড়া আর কোনও নথি লাগবে না।

মন্ত্রী যতই আশ্বাস দিন, নগদের আশায় ব্যবসায়ীদের কাছেই যাচ্ছেন অনেক চাষি। এই সুযোগে চাষিদের থেকে ধান কিনে ব্যবসায়ীরা তা শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরব, বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে দেদার রফতানি করে চলেছেন। চাষিদের আশা, ধানের দাম আরও বাড়বে। তাই বেশি লাভের আশায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধান এখনই বিক্রি করছেন না তাঁরা।

নবান্নের খবর, সমস্যা মেটাতে এ মাসেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলবে রাজ্য সরকার। চাষিরা যাতে ধান বিক্রির টাকা একসঙ্গে পুরোটা পেতে পারেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে সেই আবেদন জানানো হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

liquid Cash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy