Advertisement
০৩ জানুয়ারি ২০২৫
Kolkata Doctor Rape and Murder

ঘনিষ্ঠ-অস্ত্রেই ‘প্রমাণবিদ্ধ’ সুমন ও বিপ্লব

সিবিআইয়ের এক কর্তার দাবি, “আর জি করের দরপত্রে কারচুপির নথি তৈরিতে অনেকেই জড়িত থাকলেও সবাইকে সরাসরি অভিযুক্ত হিসেবে আমরা দেখছি না।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:১৬
Share: Save:

আর জি কর মেডিক‍্যাল কলেজ হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ দুই ব্যবসায়ী সুমন হাজরা ও বিপ্লব সিংহের আত্মীয়-পরিজনই তাঁদের বিরুদ্ধে মূল সাক্ষী হয়ে উঠেছে বলে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি উঠে আসছে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, সন্দীপ ঘনিষ্ঠ ওই দুই ব্যবসায়ী গত ছ’বছর ধরে আর জি কর হাসপাতাল-সহ কলকাতার একাধিক সরকারি হাসপাতালে জাল নথির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার টেন্ডারে (দরপত্র) কারচুপি করেছিলেন।বিপ্লব ও সুমন তাঁদের আত্মীয় পরিজনের মাধ‍্যমে জাল নথি তৈরি করার বরাত দিতেন বলেও তদন্ত সূত্রে দাবি উঠে আসছে। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, বিপ্লবের এক ভাই ও শ্যালক এবং সুমনের পাড়াতুতো এক ফোটোকপি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ওই সব জাল নথি তৈরি করা হয়েছিল। বিপ্লব ও সুমন নিজেদের মোবাইল ফোনের ওয়টসঅ‍্যাপ থেকে বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থার নামে জাল লেটার হেড ও রাবার স্ট্যাম্প তৈরি করার জন্য তাঁদের আত্মীয়-বন্ধুদের নির্দেশ পাঠাতেন বলে তদন্ত সূত্রে দাবি উঠে আসছে। কোন ছাপাখানায় কী ভাবে এ সব জাল নথি তৈরি হত এবং তা কী ভাবে জালিয়াতির মূল কারবারিদের কাছে পৌঁছত সবিস্তার জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারীরা তার খুঁটিনাটি জেনেছেন বলেই দাবি। বিপুল জাল নথি তৈরিতে সুমন, বিপ্লবদের এই আত্মীয়, বন্ধুদের সঙ্গেও কিছু টাকার লেনদেন হয়েছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে আভাসমিলেছে। তবে ওই ঘনিষ্ঠরা দুর্নীতির লাভের গুড় খেয়েছেন বলে এখনও মানছে না সিবিআই।

সিবিআইয়ের এক কর্তার দাবি, “আর জি করের দরপত্রে কারচুপির নথি তৈরিতে অনেকেই জড়িত থাকলেও সবাইকে সরাসরি অভিযুক্ত হিসেবে আমরা দেখছি না। কয়েক জনকে দুর্নীতির তথ‍্যপ্রমাণের গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবেও দেখা হচ্ছে।” ওই কর্তার ব্যাখ্যা, “সুমন ও বিপ্লব তাঁদের ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে রাবার স্ট্যাম্প ও নথি তৈরির নির্দেশ দিলেও ওই আত্মীয়েরা দুর্নীতিতে জড়িত বলা যায় না। কারণ দুর্নীতির টাকার তাঁরা ভাগ পাননি। শুধু কাজের বরাত অনুযায়ী ওঁরা টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ তৈরির ক্ষেত্রে ওই আত্মীয়-স্বজনেরা সুমন ও বিপ্লবের বিরুদ্ধে মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। সুমন ও বিপ্লবের আত্মীয়দের বয়ান এবং তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ‍্যপ্রমাণ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।” সিবিআইয়ের ওই কর্তা আরও জানান, সম্প্রতি আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতে পেশ করা আর্থিক দুর্নীতির চার্জশিটে ১৯,২০ ও ২১ পাতায় সুমন, বিপ্লবের আত্মীয়-বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া তথ‍্যপ্রমাণের খুঁটিনাটি বলা আছে।

সিবিআই সূত্রের খবর, বিপ্লব ও সুমনের কাছ থেকে নথি ছাপানো ও ফোটোকপি বাবদ তাঁর এক আত্মীয় প্রায় দু’লক্ষ টাকা পেয়েছেন। তবে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, সুমন, বিপ্লবের এই আত্মীয়, বন্ধুদের কারও কারও প্রাপ‍্য বেশ কিছু টাকা বাকিও রয়েছে। বিভিন্ন নথির কাগজপত্র তৈরির ওই টাকার সবটা তাঁরা পাওয়ার আগেই আর জি কর-কাণ্ড ঘটে যায় এবং হাসপাতালের অভ‍্যন্তরীণ দুর্নীতিতে আলো পড়ে। তাতে বিপ্লব, সুমনেরা গ্রেফতার হন। দুর্নীতির জাল নথি তৈরিতে কারা জড়িত তা বোঝার পরে তথ‍্যপ্রমাণ পেশ করায় ওই ব‍্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।

জাল নথি তৈরির ছক বিষয়ে নিশ্চিত হতে তদন্তকারীরা জোরালো তথ‍্যপ্রমাণ সংগ্রহে জোর দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, প্রথমে সুমন ও বিপ্লবের মোবাইল ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হয়। ওই দু’জনের মোবাইল ফোনের তথ্য ঘেঁটেই কয়েক জন বাছা-বাছা আত্মীয়, বন্ধুদের মোবাইলে কী বার্তা ও ছবি পাঠানো হয়েছে তা সংগ্রহ করা হয় বলেও তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, অভিযুক্তদের কয়েক জন আত্মীয়, বন্ধুকে তলব করে তাঁদের মোবাইল ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হয়। আর জি করের অফিসে তল্লাশি চালিয়েউদ্ধার নথি, সুমন ও বিপ্লবের মোবাইলের তথ্য এবং সুমন, বিপ্লবদের ঘনিষ্ঠদের মোবাইল থেকে পাওয়া তথ্য কিছু ক্ষেত্রে মিলে গিয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের সূত্রে।

অন্য বিষয়গুলি:

RG Kar Medical College and Hospital Incident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy