ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে কোনও কট্টরপন্থী সংগঠনকে সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। সোমবার রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে নবান্নে এক বৈঠকে এমনটাই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্তাদের একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রী কোনও সংগঠনের নাম না করলেও, তাঁর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে তিনি আসাদউদ্দিন ওয়াইসির ‘অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (এআইএমআইএম)কেই বিশেষ ভাবে ওই কট্টরবাদীদের তালিকার শীর্ষে রাখছেন।
এ দিনের বৈঠকে হাজির এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে আক্রমণ করেছিলেন ওয়াইসিকে। বলেছিলেন, বিজেপির দোসর বলে। এ দিনও তাঁর বক্তব্যে সে রকমই ইঙ্গিত ছিল।’’ রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের কাছে খবর, ওয়াসির দল কলকাতায় এ বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে ব্রিগেডে বড় সভা করতে চলেছে। সেই সভাতে ওয়াইসি নিজেও থাকবেন। এ দিন এমআইএম-এর পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আসিম ওয়াকারকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব তাড়াতাড়ি কলকাতায় মিটিং করব। আসাদভাই নিজে থাকবেন ওই মিটিংয়ে। আমরা ঠিক করেছি বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার সব ক’টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।” মমতার এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে আসিম বলেন, ‘‘দেশে আমাদের দু’জন সাংসদ রয়েছেন। আমরা কোনও নিষিদ্ধ সংগঠন নই যে, উনি আমাদের সভা করতে দেবেন না।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের নির্দেশের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এনআরসি-বিরোধিতাকেই মূল হাতিয়ার করেছে তৃণমূল। কালিয়াগঞ্জের ফলাফলেও একটা ইঙ্গিত রয়েছে যে বিজেপির এই জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ নীতি থেকে ফায়দা তুলেছে তৃণমূল। আর এনআরসি-র বিরোধিতা করে সংখ্যালঘু ভোটকে পুরোটাই নিজেদের দিকে রাখার পথে বাধা হতে পারে ওয়াইসির সংগঠন এমআইএম। আর সংখ্যালঘু ভোট যাতে কোনও ভাবে ভাগ না হয় তার জন্য কোনও ভাবে ওয়াইসির দলকে এ রাজ্যে জমি দিতে রাজি নয় তৃণমূল। আর সেই কারণেই এ রকম সিদ্ধান্ত।
এ দিনের বৈঠকে নবান্নে ডাকা হয়েছিল এডিজি থেকে ডিআইজি পদমর্যাদার ৬৫ জন পুলিশ কর্তাকে। বৈঠকে ওই পুলিশ কর্তারা ছাড়াও ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজির ছিলেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা। বৈঠকে থাকা পুলিশ কর্তাদেরও একাংশের মত, এ দিনের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ২১-র নির্বাচনকে লক্ষ্য করেই। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ কর্তদের সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল বিভিন্ন মাধ্যমের উপর নজরদারি বাড়াতে বলেন। তিনি পুলিশ কর্তাদের উদ্দেশে বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যে বা অর্ধসত্য খবরকে রং চড়িয়ে সরকারের বিরোধিতা চলছে। ব্যাপক অপপ্রচার চলছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নির্দেশ দেন, ওই সমস্ত ‘অপপ্রচার’-এর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
পাশাপাশি, জেলা পুলিশ সুপারদের সিভিক ভলান্টিয়ারদের ক্ষোভ নিয়েও সতর্ক করেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন মন্তব্য করেন, বেতন নিয়ে সিভিক পুলিশেক একটা অংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে এবং সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা। সে ব্যাপারে পুলিশ কর্তাদের সতর্ক হতে বলেন এবং সহানুভূতির সঙ্গে সিভিক পুলিশদের নিয়ে বৈঠকের নির্দেশও দেন। নবান্ন সূত্রের খবর, এ দিন মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ কর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন যে, পুলিশ বাহিনী ইদানীং সময় মতো খবর পাচ্ছে না। তিনি মন্তব্য করেন, অনেক খবর পুলিশের আগে তাঁর কাছে পৌঁছচ্ছে। তাই পুলিশকে আরও নিচুতলায় সক্রিয় হতে হবে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন সামনে ৬ ডিসেম্বর। সীমান্ত এলাকায় পুলিশকে নজরদারি বাড়াতে হবে। যাতে কোনও ধরণের নাশকতার ঘটনা না ঘটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy