Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ঘরছাড়াদের ফেরাতে শুরু বাড়ি পরীক্ষা

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, টিএমবি বা টানেল বোরিং মেশিনের চার পাশে ১৫ মিটার ব্যাসার্ধের এলাকা সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

বিপজ্জনক বাড়ি ঘুরে দেখার কাজ শুরু করেছেন নীতিন সোমের নেতৃত্বাধীন কমিটির পাঁচ সদস্য। মঙ্গলবার।—ছবি পিটিআই

বিপজ্জনক বাড়ি ঘুরে দেখার কাজ শুরু করেছেন নীতিন সোমের নেতৃত্বাধীন কমিটির পাঁচ সদস্য। মঙ্গলবার।—ছবি পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:১৯
Share: Save:

তাঁরা ছাড়পত্র না-দিলে বৌবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের কাউকেই বাড়িতে ফিরতে দেওয়া হবে না। এই অবস্থায় মঙ্গলবার বিপজ্জনক বাড়ি ঘুরে দেখার কাজ শুরু করেছেন নীতিন সোমের নেতৃত্বাধীন কমিটির পাঁচ সদস্য। মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণের নকশা নিয়ে তাঁরা এ দিন ঘটনাস্থলে ১১টি বাড়ি ঘুরে দেখেন। সব মিলিয়ে ৭৩টি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরীক্ষা করবেন তাঁরা।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, টিএমবি বা টানেল বোরিং মেশিনের চার পাশে ১৫ মিটার ব্যাসার্ধের এলাকা সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

পরপর সমান্তরাল ভাবে থাকা দুর্গা পিতুরি লেন, সেকরাপাড়া লেন এবং গৌর দে লেনকে আড়াআড়ি দু’ভাগে ভাগ করছে সুড়ঙ্গের যাত্রাপথ। আপাতত দুর্গা পিতুরি লেন এবং সেকরাপাড়া লেনের মাঝখানে রয়েছে টিবিএম। এ দিন ঘটনাস্থল ঘুরে এসে নীতিনবাবু জানান, ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনুসারে বাড়িগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। অতিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ভেঙে ফেলার সুপারিশ করা হবে। যে-সব বাড়ির অল্প ক্ষতি হয়েছে, সেগুলি দ্রুত সারিয়ে ফিরিয়ে আনা হবে বাসিন্দাদের। যেগুলির ক্ষতি আংশিক, সময় নিয়ে ধৈর্য ধরে সেগুলি সারানো হবে। বাড়ির স্বাস্থ্য যাচাই না-করে কোনও বাসিন্দাকেই ফিরে আসতে বলা হবে না। বাড়ির স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য ভিতের বিভিন্ন স্তরের মাটির নমুনা যাচাই করা হচ্ছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্রুত সুড়ঙ্গে ধস আয়ত্তে আনার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। সুড়ঙ্গের ভিতরে তৃতীয় প্রাচীর সম্পূর্ণ হওয়ার পরে মঙ্গলবার ফের জল ভর্তি করার কাজ শুরু হয়েছে।

এ দিন মহরমের ছুটিতে ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় কাউকে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া যায়নি। ১৯ জনকে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। আরও ৩৩ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে। তাঁদের হাতেও খুব দ্রুত চেক পৌঁছে দেওয়া হবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।

এ দিন বাড়ি পরিদর্শক কমিটির সদস্যেরা প্রথমে যান সেকরাপাড়া লেনে। সেখান কয়েকটি বাড়ি ঘুরে দেখার পরে ৯২সি বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়ির দোতলায় যান তাঁরা। কথা বলেন বাড়ির মালিক সঞ্জয় নন্দীর সঙ্গে। বাড়ির সদস্যেরা প্রায় ১০ দিন ধরে বাড়িছাড়া। কবে তাঁরা বাড়িতে ফিরতে পারবেন, সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যেরা কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি। সেখান থেকে ওই কমিটির সদস্যেরা দুর্গা পিতুরি লেনের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি দেখতে যান। তার পরে তাঁরা যান গৌর দে লেনের পল্টু জয়সওয়ালের বাড়িতে। কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিএলের এক কর্তা জানান, বাড়িগুলির কাঠামো ও ভিতরের অবস্থা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ভেঙে পড়া বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বার করার কাজও শুরু হয়েছে এ দিন। কিন্তু স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা কাটছে না। এলাকার বেশির ভাগ ছোট সোনার দোকান বন্ধ। একে বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা, তার উপরে বিদ্যুৎ নেই। পুজোর মুখে ব্যবসা বন্ধ অধিকাংশের। সেকরাপাড়ায় ঢোকার মুখেই পরপর কয়েকটি সোনার দোকান। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সেগুলির ঝাঁপ বন্ধ। কর্মী-কারিগরেরা রোজ কাজের আশায় এসে গভীর হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের ক্ষতিপূরণের বন্দোবস্ত হয়েছে। কিন্তু যাঁরা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের ক্ষতি পূরণ করতে এগিয়ে আসেনি কেউই। দীপঙ্কর ধর নামে এমনই এক দোকানকর্মী বললেন, ‘‘পুজো তো এসেই গেল। তার পরে বিয়ের মরসুম। অনেক সোনা তোলা হয়েছিল। কী যে হবে, বুঝতেই পারছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Landslide Kolkata Metro Kolkata East West Metro Tunnel Boring
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy