পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
গত বছর ২০ জুলাই তিনি শেষ বার গিয়েছিলেন বিধানসভায়। সেখান থেকেই বিকেলে গিয়েছিলেন ২১ জুলাই শহিদ সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে। ওই সমাবেশের পর ২২ জুলাই তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ২৩ তারিখ তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তার পর থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আর সে ভাবে জনসমক্ষেই দেখা যায়নি। বিধানসভায় তো দূরের কথা! বুধবার, ১৯ জুলাই বছর ঘুরল বিধায়ক পার্থের বিধানসভায় অনুপস্থিতির।
বিধানসভায় পার্থের ঘরটিতে কেউ বসেন না। সেটা তালাবন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিধানসভার অন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর সবচেয়ে বড় ঘরটিই বরাদ্দ করা হয়েছিল মন্ত্রী পার্থের জন্য। ঘরটির অবস্থান ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে একেবারে লাগোয়া। ক্ষমতায় আসার ঠিক আগে বিরোধী দলনেতা ছিলেন পার্থ। ফলে তাঁর ‘রাজনৈতিক গুরুত্ব’ও ছিল বেশি। গত বছর ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের আগের দিন বিধানসভায় এসে পার্থ বসেছিলেন নিজের ঘরে। সেখান থেকেই ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউজ়ের সামনে সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই তাঁর শেষ বিধানসভা ছেড়ে যাওয়া।
গত বছর ২৮ জুলাই পার্থকে দল থেকে সাসপেন্ড করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনই বেহালা পশ্চিমের বিধায়ককে মন্ত্রিসভা থেকেও সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর হাতে থাকা দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয় অন্য মন্ত্রীদের। শিল্পবাণিজ্য দফতরের দায়িত্ব পান শশী পাঁজা। পরিষদীয় দফতরের দায়িত্ব পান দলের সবচেয়ে প্রবীণ বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পরে পার্থের হাতে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের দায়িত্ব গিয়েছে বাবুল সুপ্রিয়ের কাছে। তখনই বিধানসভার অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছিল, এর পরে পার্থের ঘরের মালিকানা বদল হতে পারে। ঘরটি পেতে পারেন রাজ্যের প্রথম সারির কোনও মন্ত্রী। বস্তুত, অনেকে ভেবেছিলেন প্রবীণতম মন্ত্রী শোভনদেবকে ঘরটি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি। সূত্রের খবর, গত এক বছরে বেশ কয়েক জন মন্ত্রী ওই ঘরটি পাওয়ার জন্য ঘরোয়া ভাবে আবেদনও করেছেন। কিন্তু সেটি কাউকে দেওয়া হয়নি। দল ও মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের পর বিধানসভায় তাঁর ঘরের সামনের দেওয়াল থেকে পার্থের নামের ফলক খুলে নেওয়া হয়েছে। এখনও বিধানসভায় নামহীন অবস্থায় ঘরটি তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
২০১১ সাল থেকে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত পরিষদীয় দফতরের দায়িত্বে ছিলেন পার্থ। সেই বাবদেই ওই ঘরটি তাঁর জন্য বরাদ্দ হয়েছিল। প্রথমে শিল্প ও পরিষদীয় দফতর একসঙ্গে দেখতেন তিনি। পরে শিল্প দফতরটি তাঁর হাত থেকে চলে যায় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের হাতে। তখন কিছু দিন শুধুমাত্র পরিষদীয় মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছিলেন পার্থ। পরে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব। ২০২১ সালে মমতা তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পর আবার পার্থকে শিল্পবাণিজ্যের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রেই বিধানসভার ঘরে বসে নিজের দফতরের কাজকর্ম সামাল দিতেন পার্থ। বহু গুরুত্বপূর্ণ দলীয় বৈঠকও ওই ঘরে সারতেন তিনি। বিধানসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অনেক মন্ত্রীই পার্থের ঘরটিতে বসার জন্য আবেদন করেছিলেন। কোনও আবেদনই গৃহীত হয়নি। শীর্ষমহল থেকে নির্দেশ না আসায় ঘরটি এখনও তালাবন্দি অবস্থায় রাখা আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy