Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Liquor

Exise Revenue: মদ বিক্রিতে রাজ্যে রেকর্ড, সাড়ে তিন মাস বাকি থাকতেই ১২ হাজার কোটির লক্ষ্যপূরণ

একটা সময়ে রাজ্য আবগারি দফতর পাঁচশো কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও তা ছুঁতে পারত না। কিন্তু এখন প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে আয়।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:৩৭
Share: Save:

২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্য আবগারি দফতরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে চলা আবগারি দফতর ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছে। আবগারি দফতর সূত্রে খবর, চলতি আর্থিক বছরের শেষে লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেকটাই বেশি আয় হবে। তবে এ বারের আয় বৃদ্ধি ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের রেকর্ড ছুঁতে পারবে না। সে বার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৭৮১.৩৮ কোটি টাকা। পরে তা কমিয়ে ৪,৭৮৮ কোটি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই অর্থবর্ষের শেষে দেখা যায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে আয়। ওই বছরে আবগারি দফতরের মোট আয় ছিল ৯৩৪০.০৫ কোটি টাকা।

আবগারি দফতরের কর্তাদের দাবি, গত পাঁচ বছর ধরেই আবগারি দফতরের উপরে রাজ্যের আর্থিক ব্যবস্থার ভরসা বেড়েছে। কারণ, আয় বাড়ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষেও বছরের শুরুতে ঠিক করা লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি দফতর। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় ২০১৭ সাল থেকে। সেই বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই রাজ্যে দেশি ও বিলিতি মদের মূল ডিস্ট্রিবিউটার হিসেবে কাজ শুরু করে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বেভারেজেস কর্পোরেশন (বেভকো)। আর তখন থেকেই আবগারি দফতরে আয় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। প্রথম বছর ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে দফতরের রাজস্ব আয় হয় ৯৩৪০.০৫ কোটি টাকা। এর পরের বছর ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সেটাই বেড়ে হয় ১০,৫৯০.৭২ কোটি টাকা। সে বার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০,৫০৩.৪১ কোটি টাকা।

একটা সময়ে রাজ্য আবগারি দফতর ৫০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও তা ছুঁতে পারত না। কিন্তু এখন প্রতি বছরই বেড়ে চলেছে আয়। প্রতি বারই লক্ষ্য ছাপিয়ে আয় হচ্ছে কী ভাবে? এর উত্তরে আবগারি দফতরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘আমরা মদ্যপানে উৎসাহ দিচ্ছি এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। আসলে গত কয়েক বছরে রাজ্যে অবৈধ মদ বিক্রি উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো গিয়েছে। যার প্রভাব দেখা গিয়েছে বৈধ মদ বিক্রির বৃদ্ধিতে। দফতরের এই উদ্যোগের ফলে এক দিকে যেমন মদ থেকে বিষক্রিয়ার মতো ঝুঁকি কমেছে তেমনই সরকারের কর ফাঁকি দেওয়াও কমেছে।’’

গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ

একই সঙ্গে আবগারি কর্তারা দাবি করেছেন, সম্প্রতি সরকারের তরফে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ায় সার্বিক ভাবে মদ বিক্রি বেড়েছে। করোনাকালে অনলাইনে মদ বিক্রিও রাজস্ব আদায়ে বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দফতরের হিসাব মতো অনলাইনে নথিভুক্ত ক্রেতার সংখ্যা এখন প্রায় দেড় লাখ। সেই সঙ্গে সস্তায় দেশি মদের অনেকগুলি ব্র্যান্ড সম্প্রতি চালু হয়েছে এ রাজ্যে। ৩০০ মিলিলিটার মদের দাম সর্বনিম্ম ২৩ টাকা রাখা হয়েছে। আবগারি দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘গত কয়েক মাসে দেশি মদের বিক্রি উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়তে দেখা যাচ্ছে। এর কারণ, সস্তায় বৈধ দেশি মদ পেয়ে অনেকেই চোলাইয়ের মতো ঝুঁকিপূর্ণ পানীয় থেকে সরে আসছেন।’’ ওই কর্তার আরও দাবি, রাজ্যে মদ বিক্রি বাড়লেও মদ্যপের সংখ্যা সেই ভাবে বাড়েনি। আসলে এখন মদ বিক্রির বেশিটাই হচ্ছে বৈধ পথে। আর তাতেই রাজ্যের কোষাগারে টাকা ঢুকছে।

শুধু তাই নয়, সম্প্রতি মদের বিক্রি বাড়াতে বিতরণ ব্যবস্থা (ডিস্ট্রিবিউশন চেন) শক্তিশালী করার কথা ভাবছে আবগারি দফতর। বেভকো-র গুদাম থেকে খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে মদ পৌঁছনো সুষ্ঠু শৃঙ্খল গড়ে তুলতে আর্থিক ভাবে বলিষ্ঠ ডিস্ট্রিবিউটার নিয়োগের কথা ভাবছে। আবগারি দফতর সূত্রে খবর, এ জন্য ইতিমধ্যেই আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া হয়েছে। তাতে এমনটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এমন সংস্থাকেই পরিবহণ ও বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হবে, যার ভারতের যে কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মদ ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসায় কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই সঙ্গে গত তিন বছরে কমপক্ষে ১৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Liquor Country Liquor Wine Whiskey
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy