বারুইপুর জেলের মধ্যেই লাঠিসোটা হাতে মারমুখি বন্দিরা।
ফেলো কড়ি মাখো তেল নীতিতেই নাকি জেলে ‘ভাল’ থাকা যায়! এমনটাই জানাচ্ছেন অনেকে। তেমন নীতি কেন থাকবে, সেই প্রশ্ন তুলে সোমবার বারুইপুর জেলে বিক্ষোভ দেখান অনেক বন্দি। ভাঙচুর হয় ব্যাপক। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত শনিবার হাওড়া জেলা জেলের ছাদে উঠে কয়েক ঘণ্টা ধরে কর্তৃপক্ষকে নাজেহাল করে এক বন্দি।
তবে দুর্নীতির অভিযোগ কারাকর্তা বা জেল কর্তৃপক্ষের অজানা নয়। অজানা না-হলে শাস্তি হয় না কেন?
‘‘দুর্নীতির অভিযোগ শোনা যায়, জানা যায়। কিন্তু শাস্তি দিতে গেলে তো প্রমাণ লাগবে। সেই প্রমাণ তো অভিযোগকারীরা দিতে পারেন না। তাই শাস্তির ঘটনা কম, শাস্তির মাত্রাও কম,’’ বলছেন কারাকর্তারা।
৭২ ঘণ্টা কেটে যাওয়া সত্ত্বেও বারুইপুর জেলে ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিতকরণ সম্পূর্ণ করতে পারেনি কারা দফতর। ক্ষয়ক্ষতির হিসেবও চূড়ান্ত হয়নি। কারা দফতরের কর্তারা জানান, কিছু লোককে চিহ্নিত করা গিয়েছে। দ্রুত সব দোষীকে শনাক্ত করা হবে। ক্ষয়ক্ষতিরও হিসেব করা হচ্ছে। ভাঙচুরের পরে জেলের বিভিন্ন অংশ মেরামতি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে ধীরে চলো নীতিতেই এগোতে চায় কারা দফতর। কেন? প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, বন্দি বা জেল আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এখনই সরাসরি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করলে তা ভিন্ন দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে। তাই আপাতত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করা হবে না বলে বার বার জানিয়েছেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।
জেলের সঙ্গে দুর্নীতি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছে কেন? ১) পরিছন্ন, আলো-বাতাসময় ওয়ার্ডে থাকার জন্য। ২) ‘মেডিক্যাল ডায়েট’ এবং ‘মেডিক্যাল চৌকা’। মেডিক্যাল ডায়েটে দুধ, কলা, ডিম, ফল-সহ সুষম আহার মেলে। যা সাধারণ ডায়েটে থাকে না। ‘চৌকা’ জেলের অন্দরে বহুল প্রচলিত। যা আদতে রান্নাঘর। চৌকায় স্থান পেতে গেলেও অনেক ক্ষেত্রে ট্যাঁকের কড়ি খসাতে হয়। ৩) সাধারণ ‘চৌকা’য় ঢুকতে পারলে উপরির (বাড়তি অর্থ) সুবিধা আছে। ৪) মোবাইল। ফিচার ফোন (ছোট) এবং স্মার্টফোন (বড়)। স্মার্টফোনের দর বেশি। ইন্টারনেটে বিভিন্ন সাইট দেখার জন্যও টাকা খরচ করতে হয়। ৫) নেশার সামগ্রীর জোগান।
কারা দফতরে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা জানাচ্ছেন, অনেক কর্মী, আধিকারিক, বন্দি এই সব দুর্নীতিতে যুক্ত থাকেন। মোবাইল, ল্যাপটপ, সিমকার্ড ইত্যাদি ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন বছরের জেল হবে বন্দির। একই শাস্তি ‘সাহায্যকারী’ জেলকর্মীরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy