কলকাতা বইমেলা। —ফাইল চিত্র।
খোলা আকাশের নীচে নিয়ন্ত্রিত মেলায় রাজ্যের সায় থাকলেও বইমেলার বিষয়ে খানিক দ্বিধা রয়েছে স্বয়ং প্রকাশকদেরই। রবিবারেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ছোট প্রকাশকদের তরফে নামহীন একটি চিঠি সমাজমাধ্যমে এই দ্বিধাই খানিকটা তুলে ধরছে।
২০২০-তে শেষ বার বসেছিল কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আসর। ২০২২-এর ৩১ জানুয়ারি ফের বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হলেও তা আদৌ ওই তারিখে করা যাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকছে। প্রকাশক মহলের একাংশই পূর্ব নির্ধারিত তারিখে বইমেলার পক্ষপাতী নন। সমাজমাধ্যমে চাউর খোলা চিঠি সেই অভিমতই মেলে ধরছে। চিঠিটি বলছে, কবি, লেখক, সম্পাদকদের কাছে বইমেলা সাংস্কৃতিক মিলনক্ষেত্র। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু প্রতীক্ষিত সেই বইমেলা দু’বছর বাদে ফিরে এলেও কত দূর ব্যবসা দিতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। চিঠিতে আশঙ্কা, ৩১ জানুয়ারি বইমেলা শুরু হলে দূর মফস্সলের পাঠক-সহ অনেকেই আসতে পারবেন না। তা ছাড়া, কোভিড সংক্রমণের জন্য অনেক প্রকাশকেরই প্রস্তুতি ধাক্কা খাচ্ছে। ছাপাখানার কর্মী ও বাঁধাইকর্মীদের অনেকেই কোভিড সংক্রমণে ঘন ঘন অসুস্থ হচ্ছেন। ফলে, বইমেলার নতুন বই তৈরির কাজও পিছিয়ে যাচ্ছে।
প্রকাশকেরাও অনেকেই বিষয়টির সঙ্গে এক মত। বিজয়গড়ের একটি ছাপাখানায় বইমেলার প্রস্তুতির ফাঁকে প্রকাশক মানব চক্রবর্তী বলছিলেন, “সব দিক বিচার করলে আমারও মনে হয়, বইমেলা ক’টা দিন পিছিয়ে দিলেই সবার সুবিধা হবে। পাঠকেরা আরও নির্ভয়ে বইমেলায় আসবেন।” তবে ছোট-বড় কোনও প্রকাশকই বইমেলা হলে তা থেকে এক বারও মুখ ফিরিয়ে থাকতে চান না। আর এক প্রকাশক দেবাশিস সাউ বলছেন, “কর্মীদের কোভিড সংক্রমণে ছাপাখানায় বই তৈরির সমস্যা ছাড়াও সার্বিক সংক্রমণ পরিস্থিতি বুঝে আর একটু অনুকূল সময়ে বইমেলা হওয়া মনে হয় ভাল।” প্রকাশক বুলবুল ইসলামেরও মত, “গঙ্গাসাগর মেলা ও বইমেলার চরিত্রে অনেক ফারাক। যা পরিস্থিতি তাতে এখন বইমেলা হলে অনেক প্রকাশকের বিনিয়োগের প্রতি সুবিচার হবে না। এটা মাথায় রাখাই উচিত।”
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের কর্তারা লিটল ম্যাগাজিন থেকে ছোট প্রকাশকদের সমস্যা নিয়ে ওয়াকিবহাল। গিল্ড কর্তা ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “আমরা চাই সবার সুবিধা দেখেই বইমেলা হোক। দরকারে একটু পিছিয়ে দেওয়া যায় কি না, সেটা রাজ্য সরকার অবশ্যই ভাববেন। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বইমেলা না-পিছিয়ে অন্য একটি তারিখে বইমেলা করা যেতে পারে।”
৩১ জানুয়ারি বইমেলা হলে তাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিয়েও বইপাড়ায় জল্পনা চলছে। ১২ ফেব্রুয়ারি বিধাননগরের পুরভোট। তাঁর আগে সল্টলেকেই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বইমেলার উদ্বোধন নির্বাচনী বিধিতে আটকাবে কি না, সে-প্রশ্ন থাকছে। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মতে, পূর্ব নির্ধারিত একটি অনুষ্ঠানে কোনও নতুন প্রকল্পের ঘোষণা এড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy