মায়ের সঙ্গে আজিজা খাতুন। নিজস্ব চিত্র।
বাবার হাতে স্টিয়ারিং। যখন তখন চলে যান হিল্লি দিল্লি। কিন্তু সেই রোজগারে সংসার চলে না। তাই মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাঁধার কাজে হাত লাগায় আজিজা খাতুন। আর ফাঁকে পড়াশোনাও করে।
সেই পড়াই তাকে এগিয়ে দিল অনেকখানি। সোমবার হাই মাদ্রাসার ফল প্রকাশ হলে দেখা গেল, কালিয়াচকের যদুপুর এলাকার বাসিন্দা আজিজা তৃতীয় হয়েছে। দারিয়াপুর বাইশি হাই মাদ্রাসার ছাত্রী সে। তাদের আলো কম ঢোকা ঘরে এ দিন যেন রোশনাই। বাবাকে ফোনে খবর দেওয়া হয়েছে। মাকে আনন্দে জড়িয়ে ধরছে আজিজা।
আজিজা সেই কালিয়াচকের যদুপুরের মেয়ে, যেখানে কয়েক বছর আগেও দিনে-রাতে যখন তখন বোমাবাজি হত। খুন-খারাবি ছিল নিত্যদিনের ব্যাপার। বোমাবাজির জেরে যদুপুর দিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়েছে অনেক দিনই। হুটহাট দোকানবাজার বন্ধ হয়ে যেত।
হুরমুজ শেখ এখানকার এনায়েতপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরই দ্বিতীয় সন্তান আজিজা। হুরমুজ এখন পটনায় আছেন। ফোনে বলেন, ‘‘আমি সেই অর্থে লেখাপড়া জানি না। তবে কষ্ট হলেও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে চাইছি। একটি কোচিং সেন্টারে আজিজাকে পড়াতাম। মেয়ে বলেছিল, সে ভাল ফল করবে। ও ডাক্তার হতে চায়। কিন্তু রোজগারের যা অবস্থা, জানি না কী ভাবে ওকে ডাক্তারি পড়াব!’’ মা রশিদাও বলেন, ‘‘ডাক্তারি পড়তে তো অনেক খরচ! কী করে সেই খরচে জোগাব আমরা?’’
আজিজা শোনায় তাদের দুঃখের বারোমাস্যা। বলে, ‘‘লকডাউনে বাবার কাজ চলে গিয়েছিল। বিড়ি বাঁধাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন টিউশনও নিতে পারিনি। কী ভাবে যে দিন কেটেছে, শুধু আমরাই জানি।’’
এখন অবশ্য আজিজার মনে আরও পড়াশোনার ইচ্ছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy