—প্রতীকী ছবি।
সাজা হলে জেলে কাটাতে হত সাত বছর। দোষ প্রমাণ না হলেও কারাবাসে থাকলেন দশ বছর। জামিন মিললেও মেলেনি জামিনদার!
এই দশ বছর উত্তর ২৪ পরগনা ও কলকাতার এই জেল, সেই জেল ঘুরে উত্তরপ্রদেশের নয়ডার বাসিন্দা সত্তর ছুঁইছুঁই বাসন্তীদেবী থিতু হয়েছিলেন আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে। শনিবার সকালে নিজের বাড়ি পৌঁছেছেন তিনি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, ২০১৩ সালে নাবালিকা অপহরণের অভিযোগে বাসন্তীকে ধরেছিল পুলিশ। সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল আরও দু’জনকে। তাঁদের এ রাজ্যে আনা হয়। মামলা চলছিল বসিরহাট আদালতে। সকলেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৩ ধারায় (অপহরণ) অভিযুক্ত হন। দোষ প্রমাণ হলে যে ধারায় সর্বোচ্চ কারবাস হয় সাত বছর। পরে অভিযুক্তেরা জামিনও পান। দু’জন মুক্তি পেলেও জেলে থেকে যেতে হয়েছিল বৃদ্ধাকে।
কেন?
দক্ষিণ ২৪ পরগনা লিগ্যাল এড ডিফেন্স কাউন্সিলের আইনজীবী সেঁজুতি চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘অন্য রাজ্যের বাসিন্দা হওয়ায় তাঁর জামিনদার হতে রাজি হননি কেউ। যে কারণে ‘লোকাল সিওরিটি’ মেলেনি। বৃদ্ধার পরিবারও যোগাযোগ রাখেনি। অগত্যা জেলই ছিল বাসন্তীর ঠিকানা।’’গত বছরের অগস্টে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ওই আইনজীবী। তাঁর কাছে বাড়ি ফেরার ইচ্ছার কথা জানান বৃদ্ধা।সেঁজুতির কথায়, ‘‘কোন মামলায় জেলে আছেন, কেস নম্বর কত, কোন কোর্টে মামলা চলছে, আইনজীবী কে, উকিল আছেন কিনা— এ সব কিছুই জানতেন না তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে জানা যায়, বসিরহাট আদালতে একটি মামলা ছিল তাঁর নামে। সেই মামলায় প্রায় ন'বছর আগেই তাঁর জামিন হয়েছিল। কিন্তু জামিনের শর্ত মোতাবেক ২০০০ টাকা দিতে রাজি হননি কোনও জামিনদার।’’ সেঁজুতি বিষয়টি জানিয়ে চিঠি লেখেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আইনি কর্তৃপক্ষকে। তাঁরা যোগাযোগ করেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
সেঁজুতি বলেন ‘‘সম্প্রতি ওই বৃদ্ধার কারাবাসের বিষয়টি বিচারাধীন বন্দিদের অবস্থা পুনর্বিবেচনা কমিটির কাছে আসে। তার পরে, আদালতে ওঁর জামিনের বিষয়টি তোলা হয়। আদালত জামিনের শর্ত পরিবর্তন করে। ৫০০ টাকার নগদ (ক্যাশ বেল বন্ড ) জামিনে মঙ্গলবার মুক্তি দেওয়া হয় তাঁকে।’’ ওই দিনই বাসন্তীকে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে একটি হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর নাতির ফোন নম্বর ছিল কর্তৃপক্ষের কাছে। খবর দেওয়া হয় তাঁর পরিবারকে।
বৃহস্পতিবার বাসন্তীকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁর নাতি স্বপন কুমার। এ দিন স্বপন বলেন, ‘‘বাবা দমদম জেলে গিয়েছিল আম্মির খোঁজে। কিন্তু না পেয়ে ফিরে আসে।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব শুভ্রকান্তি ধর বলেন, ‘‘অনেক আগেই ছাড়া পাওয়ার কথা ওই মহিলার। শেষ পর্যন্ত উনি বাড়ি ফিরেছেন, এটাই স্বস্তির খবর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy