Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
CPIM

CPIM: সিপিএমে দ্বন্দ্বের জের, ভোট জেলা সম্মেলনে

সম্মেলন-পর্ব শুরু হওয়ার পরে এরিয়া কমিটি স্তরে কিছু ক্ষেত্রে ভোটাভুটির খবর এসেছিল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।

সিপিএমের আলিপুরদুয়ার জেলা সম্মেলনে নির্বাচিত জেলা কমিটি

সিপিএমের আলিপুরদুয়ার জেলা সম্মেলনে নির্বাচিত জেলা কমিটি নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:০২
Share: Save:

দলীয় নেতৃত্বের কঠোরতম সমালোচনার জন্যও উন্মুক্ত থাকে সম্মেলনের মঞ্চ। কিন্তু কমিটি গঠন ঘিরে নির্বাচন পারতপক্ষে এড়িয়ে চলাই সিপিএমের দস্তুর। সম্মেলনের নির্দেশিকাও আছে সেই মর্মে। কিন্তু সেই নীতি ভেঙেই জেলা কমিটি গঠন ঘিরে ভোটাভুটি হয়েছে সিপিএমের আলিপুরদুয়ার জেলা সম্মেলনে। ‘বিক্ষুব্ধ’ অংশের কেউ অবশ্য সম্মেলন-কক্ষে ভোটে জিততে পারেননি। তবে সিপিএম সূত্রের খবর, সম্মেলন মিটে যাওয়ার পরেও তাঁদের একাংশ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাঠিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। ঘটনাপ্রবাহ ঘিরে অস্বস্তিতে পড়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

সম্মেলন-পর্ব শুরু হওয়ার পরে এরিয়া কমিটি স্তরে কিছু ক্ষেত্রে ভোটাভুটির খবর এসেছিল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। তার পরে আলিমুদ্দিনের তরফে ফের নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, বিরোধ মিটিয়ে যথাসম্ভব ‘সর্বসম্মতিক্রমেই’ কমিটি গড়তে হবে। কমিটি যত উপরের দিকে হয়, ভোটাভুটি এড়ানোর জন্য চাপ তত বেশি থাকে সিপিএমের সংগঠনে। সেই দিক থেকে ‘ব্যতিক্রমী’ ঘটনাই এ বার ঘটেছে আলিপুরদুয়ারে। এখনও পর্যন্ত ১০টি জেলা সম্মেলন হয়েছে সিপিএমের। তার মধ্যে ৫টি জেলায় সম্পাদক বদল হয়েছে। সেই পাঁচের মধ্যে দু’জন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক থেকে পূর্ণ সময়ের জেলা সম্পাদক হয়েছেন, অন্য তিন জন একেবারেই নতুন দায়িত্বে এসেছেন। এই গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে ভোট হয়েছে শুধু আলিপুরদুয়ারেই।

সিপিএম সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ারের তৃতীয় জেলা সম্মেলনে জেলা কমিটির যে ৪০ জনের প্যানেল পেশ করা হয়েছিল দলীয় নেতৃত্বের তরফে, তার কিছু নাম নিয়ে আপত্তি তোলেন প্রতিনিধিদের একাংশ। প্রস্তাবিত কমিটিতে চা-বাগানের নেতা ও দলের রাজ্য কমিটির সদস্য রবীন রাইয়ের নামও ছিল। চা-বাগান এলাকায় দলের সম্পত্তি বিক্রি ঘিরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁকে কিছু দিন আগে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার সুপারিশে সিলমোহর দিয়েছিল রাজ্য কমিটিও। প্রস্তাবিত প্যানেলের কিছু নামে আপত্তির পাশাপাশি সম্মেলনে জেলা প্রতিনিধিদের একাংশের অভিযোগ ছিল, ‘যোগ্য’ নেতাদের অনেকে দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না। প্রস্তাবিত প্যানেলের পাল্টা ১৩ জনের নাম জমা পড়ে জেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য। দলীয় নেতৃত্ব ‘সরকারি ব্যালটে’ ভোটাভুটিতে রাজি হয়ে গেলেও ওই ১৩ জনের কেউ অবশ্য শেষ পর্যন্ত জিততে পারেননি। নির্বাচিত হয়েছে ৪০ জনের ‘অফিসিয়াল’ কমিটিই। জেলা সম্পাদক হয়েছেন কিশোর দাস। আগের জেলা সম্পাদক মৃণালকান্তি রায়ের মৃত্যুর পরে তিনিই আলিপুরদুয়ারে দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন।

চা-বাগান এলাকার এক ট্রেড ইউনিয়ন নেতা জেলায় দল পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সম্মেলনে সরব হয়েছিলেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। প্যানেল নিয়ে আপত্তির জেরে ভোট এবং গণনা চলে রাত পেরিয়ে বড়দিনের ভোর পর্যন্ত! দলীয় নেতৃত্বের পছন্দের কমিটি গঠিত হলেও অভিযোগের রেশ কেটে যায়নি। তবে ওই নেতাদের কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।

আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটার মতো পুরসভায় সামনে ভোট রয়েছে। দলের মধ্যে বিভাজনের জের ভোটে গিয়ে পড়বে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘ওখানে কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যা ছিল। চেষ্টা করেও আগে মেটানো যায়নি, তাই ভোটাভুটি হয়েছে।’’ আলিপুরদুয়ারের সম্মেলন উদ্বোধন করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য। আলিমুদ্দিনের তরফে পর্যবেকক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৃদুল দে।

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy