Advertisement
E-Paper

পরিবার-পরিচয় যাচাইয়ে জোর নির্বাচন কমিশনের

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছেন, ভোটার তালিকায় নতুন নাম তুলতে নির্দিষ্ট বয়ানে (ফর্ম-৬) আবেদন করতে হয়। সেখানে পরিবার-পরিচয় দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলা-কর্তাদের বলা হয়েছে, আবেদনপত্রে দেওয়া পরিবার পরিচয়ের সঙ্গে আবেদনকারীর প্রকৃত যোগাযোগ (লিঙ্ক) খতিয়ে দেখতে হবে।

— প্রতীকী চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ০৭:২০
Share
Save

ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দেওয়া পরিবার-পরিচয় খতিয়ে দেখার প্রথা কঠোর ভাবে অনুসরণ করার বার্তা দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া এবং সংশোধন প্রক্রিয়াতেও যাচাই এবং শুনানি (হিয়ারিং) পদ্ধতি বাধ্যতামূলক ভাবে অনুসরণ করার কথাও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে দিল্লির নির্বাচন সদন। খুব সম্প্রতি সব জেলা প্রশাসনকে এই বার্তাই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কার্যালয় দিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছেন, ভোটার তালিকায় নতুন নাম তুলতে নির্দিষ্ট বয়ানে (ফর্ম-৬) আবেদন করতে হয়। সেখানে পরিবার-পরিচয় দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলা-কর্তাদের বলা হয়েছে, আবেদনপত্রে দেওয়া পরিবার পরিচয়ের সঙ্গে আবেদনকারীর প্রকৃত যোগাযোগ (লিঙ্ক) খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি ‘হিয়ারিং’-এও ডাকতে হবে আবেদনকারীকে। একই ভাবে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে (প্রধানত মৃত ব্যক্তিদের) ফর্ম-৭ এর ব্যবহার হয়। সেই প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তগ্রহণের আগে তার যথার্থতা খতিয়ে দেখতে হবে। আবার ফর্ম-৮ ভর্তি করে ভোটার কার্ডে কোনও ধরনের সংশোধনের কাজ হয়ে থাকে। সেই কাজেও যাচাই বাধ্যতামূলক করতে চাইছে কমিশন। এক জেলা-কর্তার কথায়, “সর্বশেষ বৈঠকে এই ব্যাপারে তৎপর হওয়ার বার্তাই দেওয়া হয়েছে সর্বত্র। রাজনৈতিক দলগুলিকেও জানাতে হবে পদ্ধতি সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য।” কমিশনের এক কর্তা বলেন, “প্রযুক্তির ব্যবহারে আবেদনকারীর যত সুবিধা বেড়েছে, তাতে অনুমোদন প্রক্রিয়াও তত সহজ হয়েছে। কিন্তু তা বলে প্রতিটা আবেদন ধরে ধরে যাচাই করে অনুমোদন দেওয়ার প্রথাগত অভ্যাস ছেড়ে ফেললে চলবে না। এই গোটা বছর ধরে ভোটার তালিকার যে সংশোধন হবে, তার ভিত্তিতে আগামী বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত হবে সংশোধিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। তার ভিত্তিতেই ২০২৬ সালে রাজ্যের বিধানসভা ভোট হবে। ফলে ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরিতে প্রত্যেক স্তরের আধিকারিককে সতর্ক থাকতে হবে।”

প্রসঙ্গত, ধৃত জঙ্গি তথা বাংলাদেশের নাগরিক মহম্মদ শাদ রাডি ওরফে শাব শেখের নাম কী ভাবে ভোটার তালিকায় উঠেছিল, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছিল বেশ কয়েক মাস আগে। অভিযোগ ছিল, ২০২০-২১ সাল নাগাদ মু্র্শিদাবাদের নওদায় ভোটার তালিকায় জায়গা পেয়েছিল শাবের নাম। তার পরে হরিহর পাড়ার ভোটার তালিকাতেও তার নাম ওঠে। আবার কান্দির ভোটার তালিকাতেও শাব শেখের নাম পাওয়া গিয়েছিল বলে খবর। অবশ্য তত দিনে নওদার ভোটার তালিকা থেকে কোনও আবেদনের ভিত্তিতে নাম বাদ গিয়েছিল শাবের। কমিশনের একটি সূত্রের অনুমান, ‘ভুয়ো’ পরিবার-পরিচয় দিয়ে নাম তোলাতে সফল হয়েছিল সে। সেই দিক থেকে নাম তোলার প্রশ্নে আবেদনে দেওয়া পরিবার-পরিচয়ের যাচাই-বার্তাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আবার একই ‘সিরিজ়ে’ একাধিক ভোটারের কার্ড নম্বর ধরা পড়া নিয়েও যথেষ্ট শোরগোল হয়েছে। ভোটার তালিকায় ভুয়ো নাম ঢোকা বা যোগ্য নাম বাদ যাওয়া নিয়ে শাসক-বিরোধীরা সরব হয়েছেন। সব ক্ষেত্রেই তাঁরা দায়ী করছেন নির্বাচন কমিশনকে। যদিও একই নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ডের সমস্যা দ্রুত মেটাতে পদক্ষেপ করেছে নির্বাচন সদন। ইতিমধ্যে জেলা-কর্তাদের নতুন একটি ‘মডিউল’ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে তেমন ত্রুটিপূর্ণ কার্ডগুলি সংশোধন করা যাবে ভোটারকে বিব্রত না করেই।

কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য, “গত বৈঠকে নতুন নাম তোলা বা নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে কড়া যাচাইয়ের বার্তা দেওয়া হয়েছে, তা কমিশনের বিধিতেই বলা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা ইআরও-দের (এসডিও বা তাঁর আধিকারিক) ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Voter Card Correction Voter Card EPIC Number

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}