Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Election Commission of India

By Election: এক সঙ্গে সব আসনে নয়, ভেঙে ভেঙে ভোট করানোর কথা ভাবছে কমিশন, আশ্বাসে আশাবাদী তৃণমূল

দ্রুত নির্বাচন চেয়ে বৃহ্স্পতিবার নির্বাচন কমিশন কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায়, জহর সরকার, সাজদা আহমেদরা।

সাংবাদিক বৈঠকে জহর সরকার, সৌগত রায় ও মহুয়া মৈত্র।

সাংবাদিক বৈঠকে জহর সরকার, সৌগত রায় ও মহুয়া মৈত্র। ছবি—পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২১ ১০:৩১
Share: Save:

এগিয়ে আসছে পুজোর মরসুম। তার আগেই রাজ্যে দ্রুত উপনির্বাচন সেরে ফেলার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার ফের নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূল সাংসদেরা। কমিশন কর্তাদের কাছে তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন, রাজ্যে করোনা কমে আসায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন সেরে ফেলা হোক। সূত্রের খবর, তৃণমূল সাংসদদের ওই দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়ে কমিশন কর্তারা বলেছেন, “কমিশনের উদ্দেশ্য নির্বাচন করা। তা স্থগিত করা নয়।” তৃণমূল সূত্রের মতে, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সম্ভবত এক সঙ্গে ৭টি বিধানসভা আসনের পরিবর্তে ভেঙে ভেঙে নির্বাচন করানোর কথা ভাবছে কমিশন।

রাজ্যে যে ৭টি কেন্দ্রে নির্বাচন বকেয়া, তার মধ্যে জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে সাধারণ নির্বাচন ও ভবানীপুর, খড়দহ, শান্তিপুর, দিনহাটা ও গোসাবা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভবানীপুর আসনটি। নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে হেরে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে কোনও একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। ছয় মাসের মধ্যে বিধায়ক হিসাবে জিতে না আসতে পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে মমতাকে। তৃণমূল সূত্রের মতে, ঝুঁকি না নিয়ে এ বার নিজের পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুর থেকেই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এখনও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি কমিশন।

এই আবহে দ্রুত নির্বাচন চেয়ে কমিশনের উপর চাপ বাড়াতে আজ কমিশন কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায়, জহর সরকার, সাজদা আহমেদরা। তৃণমূলের এই সাংসদেরা জানান, পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। আক্রান্তের সংখ্যাও বেশ কম। এপ্রিলে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে যেখানে ফি দিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার, সেখানে এখন দাঁড়িয়েছে ৮৩০-এ। আজ তৃণমূলের পক্ষ থেকে ৭টি কেন্দ্রে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা কমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সৌগত রায়ের কথায়, “পুজোর মরসুম এগিয়ে আসছে। তাই আমরা দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে। সংবিধানের ৩২৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন সেরে ফেলুক কেন্দ্র।” বৈঠকে কমিশন কর্তারা তৃণমূল নেতৃত্বকে বলেছেন— কমিশন নির্বাচন করায়। তা স্থগিত করাটা কমিশনের লক্ষ্য নয়।

যদিও করোনা সংক্রমণের কারণ দেখিয়ে রাজ্যে এই মুহূর্তে বিধানসভা নির্বাচন করানোয় আপত্তি রয়েছে বিজেপির। তারা জানে, নভেম্বরের মধ্যে উনির্বাচন না হলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে মমতাকে। সেটা বিজেপির নৈতিক জয় হবে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। আজ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “করোনার জন্য স্কুল, কলেজ, লোকাল ট্রেন বন্ধ। যার অর্থ রাজ্য সরকার মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তাই মানুষের কথা ভেবে তৃণমূলের নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী হতে হবে বলে তো ভোট করা যায় না। তা ছাড়া বিজেপি মনে করে, রাজ্যে এখন উপনির্বাচনের পরিস্থিতি নেই। আর এমন তো নয় যে নির্বাচন না হলে সরকার পড়ে যাবে। ভোট না হলে মমতাকে পদত্যাগ করতে হবে। তাঁর পরিবর্তে দলেরই কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন।” বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, করোনা বিধির কথা বলে বিজেপিকে কোনও আন্দোলন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হলে অতিমারি আইনে মামলা ঠুকে দেবে শাসক শিবির। জবাবে সৌগত রায় বলেন, “হেরে যাওয়ার পরে বাংলা বিজেপির নেতাদের মাথায় ঠিক নেই। আবার হারবেন বুঝেই নির্বাচন এড়াতে চাইছেন।”

তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন, বিজেপি ভোট না চাইলেও নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করানোয় মত দিয়ে দেবে কমিশন। কিন্তু একই সঙ্গে বিকল্প পরিস্থিতিতে কাকে মুখ্যমন্ত্রী করা যায়, সেই ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে দলে। এমন মুখ খোঁজা হচ্ছে, যিনি বিহারে নীতীশ কুমারকে প্যাঁচে ফেলে দেওয়া জীতনরাম মাঝি হয়ে না দাঁড়ান। প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচন কমিশন কি চাইলে ওই নির্বাচন ছয় মাসের পরেও করাতে পারে? রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ জহর সরকার। তিনি বলেন, “আইনে আছে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি বা সঙ্কট তৈরি হলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যাবে। তবে তার নজির নেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE