ভাঙচুরের পর এই দশাই হয়েছে ওই পার্টি অফিসের। —নিজস্ব চিত্র।
তিনি বুঝে নেবেন বলে একরকম হুঁশিয়ারি দিয়েই রেখেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সভা মিটতেই অশান্তি চরম আকার ধারণ করল নন্দীগ্রাম। মঙ্গলবার গভীর রাতে সেখানে তৃণমূলের কার্যালয়ে অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চলল। তালা ভেঙে ঢুকে ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হল চেয়ার, টেবিল, টিভি, আলমারি। এ নিয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানাতে উদোগী হয়েছে তৃণমূল।
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে ‘অরাজনৈতিক’ সভা করেন শুভেন্দু। সেখানে বিজেপি সমর্থকদের একটি বাসে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে টাউন হল থেকে তৃণমূলের উদ্দেশে হুঙ্কার ছেড়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘ওরা গাড়ি ভেঙেছে। আমাদের জনা ১৫ কর্মীকে মেরেছে। এখান থেকে ব্যারাকপুর ও খড়দায় একটা অনুষ্ঠানে যাব। তার পর রাতে আবার নন্দীগ্রামে ফিরব। এটা আমার উপর ছেড়ে দিন।’’
শুভেন্দুর এই হুঙ্কারে তখনই অশনি সঙ্কেত দেখেছিলেন নন্দীগ্রামবাসী। রাত গভীর হতেই সেই আশঙ্কা বাস্তবে পরিণত হয়। রাতের অন্ধকারে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের মহম্মদপুর তৃণমূলের পার্টি অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালায় একদল দুষ্কৃতী। তাতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ওই এলাকায়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। ভাঙচুরের ছবিও তোলা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
আরও পড়ুন: খালিস্তানি’, ‘নকশাল’ কটাক্ষ প্রাপ্য নয় কৃষকদের, ড্যামেজ কন্ট্রোলে আসরে রাজনাথ
শুভেন্দুর দলবদলের পর থেকেই নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক আবহে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। এই মুহূর্তে সেখানে শুভেন্দু-বিরোধী হিসেবে একেবারে সামনের সারিতে রয়েছেন জমি আন্দোলনের নেতা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি শেখ সুফিয়ান। ঘটনাচক্রে তাঁর জামাতা শেখ হাবিবুল আবার মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। তাঁর অধীনে থাকা পার্টি অফিসেই ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা নিয়ে নাম না করে মঙ্গলবার সুফিয়ানকেই কাঠগড়ায় তোলেন শুভেন্দু। তাই তৃণমূলের পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে সম্প্রতি বিজেপি-তে যাওয়া শুভেন্দু তাঁকেই বার্তা দিলেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পঞ্চায়েতের অফিসে হামলার ঘটনা নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে তৃণমূল। গোটা ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুফিয়ান। তিনি বলেন, ‘‘রাতের অন্ধকারে যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, তৃণমূলের উপর হামলা হলে অভিযোগ জানাতে। তাই থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে চলেছি। আমরা নিশ্চিত, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হামলা চালিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: যাদবপুরে পার্টি ফেরত গাড়ির মধ্যে তরুণীর শ্লীলতাহানি! অভিযুক্ত ২ বন্ধু
তবে সুফিয়ানের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তমলুকে বিজেপি-র জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক। তিনি বলেন, ‘‘এটা তৃণমূলের চাল। গতকাল বিজেপি কর্মীদের নির্দয় ভাবে মারধর করার পর এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। সেখান থেকে সবার নজর ঘোরাতে নিজেরাই ভাঙচুর চালিয়েছে। এখন সেটা বিজেপির নামে চালাতে চাইছে।’’ বিজেপি ভাঙচুরের রাজনীতি করে না বলেও দাবি করেন নবারুণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy