রবিবার বিকাশ ভবনে নিজের দফতরে বসে টেটের উপর নজর রাখলেন ব্রাত্য বসু। — ফাইল ছবি।
টেট (প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা)-এর প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠল রবিবার। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রবিবার ছুটির দিনেও বিকাশ ভবনে নিজের দফতরে বসে রাজ্যে টেটের উপর নজর রাখলেন। অভিনন্দন জানালেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রীকে। পাশাপাশি এক হাত নিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। বললেন, বিরোধী দলনেতা হিসাবে প্রশ্ন কেনাবেচার খবর তিনি জেনে থাকলে তা সরকারকে জানানো উচিত ছিল।
কড়া নজরদারির মাঝে রবিবার হল টেট। বিরোধীদের দাবি, আগের টেট নিয়ে দুর্নীতির কারণেই এ বার কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। এই অভিযোগ মানেননি ব্রাত্য। জানিয়েছেন, নজরদারি আগেও ছিল। ২০১২ সালে তিনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন যখন টেট হয়েছিল, তখনও এ রকমই ছিল নজরদারি। তবে এখন মোবাইলের মাধ্যমে পরীক্ষায় দুর্নীতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সে কারণেই বেড়েছে নজরদারি। তাঁর কথায়, ‘‘নজরদারি বেড়েছে। মিডিয়ার সংখ্যা যে ভাবে বেড়েছে, লক্ষ লক্ষ মোবাইল ঘুরছে, তাই নজর রাখতে হচ্ছে।’’ এর পরেই প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। ব্রাত্য বলেন, ‘‘যে ছবি ঘুরছে, তা আসলে ভুয়ো প্রশ্নের। পর্ষদকে বললাম। পর্ষদ খোঁজ নিল। জানল ‘ফেক’। মমতার সরকার যাতে পরীক্ষা না নিতে পারে, তার চেষ্টা চলছে। পরীক্ষা নেওয়া গিয়েছে।’’
এর পরেই ব্রাত্য মনে করিয়ে দিলেন, পরীক্ষা নেওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রাজ্যের একাধিক দফতর। তাঁর কথায়, ‘‘এটা শুধু শিক্ষা দফতরের বিষয় নয়। এর সঙ্গে অনেক দফতর জড়িয়ে রয়েছে। স্বরাষ্ট্র দফতর রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি, সাইবার অপরাধ দমন শাখা জড়িয়ে রয়েছে।’’ এত বিষয় সমন্বয় করে সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। তাঁর কথায়, ‘‘যা আগে হয়েছে, তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে পর্ষদ। অতীতকে মনে রেখে, তাকে সংস্কার করে যে ভাবে পর্ষদ এই পরীক্ষা নিল, তাকে আমি সার্বিক অভিনন্দন জানাব। কৃতজ্ঞতা জানাব। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সহযোগিতা না থাকলে এ ভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব ছিল না। এ বার সাত লক্ষ জন পরীক্ষা দিয়েছেন।’’
বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দুর অভিযোগ নিয়ে তোপ দাগতেও ছাড়েননি ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘তাঁর কাছে যদি ফোন আসে, নম্বরগুলি আমাদের জানানো উচিত। যাতে সরকার সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা নিতে পারে। এ রাজ্যেরই বিরোধী দলনেতা তিনি। রাজ্য যাতে ভাল ভাবে পরীক্ষা নিতে পারে, সেই বিষয়ে তাঁর সহযোগিতা করা দরকার। এ সব না করে ভুয়ো কতগুলি কথা বলছেন।’’
রবিবারের পরীক্ষায় কতটা কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে পর্ষদ, তা-ও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন হচ্ছে। তল্লাশি চলছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে দু’টি পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক যাচাই হচ্ছে। ফেস রিকগনিশন। অর্থাৎ মুখমণ্ডল চিনে রাখা এবং আঙুলের ছাপ রেকর্ড। এ ছাড়া পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, পেজার, ব্লুটুথ চিহ্নিত করার জন্য প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা রয়েছে। ১৪৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রের কোথায় কী হচ্ছে, পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে বসে দেখা যাচ্ছে।’’ দুর্নীতি রুখতে যে এ বার দু’টি উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দিলেন। ব্রাত্য বলেন, ‘‘এ বার দু’টি উত্তরপত্র রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা একটা উত্তরপত্র বাড়ি নিয়ে যাবেন। যাতে পরে মিলিয়ে দেখতে পারেন।’’ বিভিন্ন এলাকায় ২টো ৩০ মিনিট পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকছে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy