ফাইল চিত্র।
দু’বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বার বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সংশোধনী বিল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শিক্ষায় ‘সংস্কারে’র চেয়ে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া ও সমস্যা মেটানোর দিকেই আপাতত বেশি নজর দিতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের হাজিরা-সহ কিছু কড়াকড়ির বিধান এনে তৈরি হয়েছে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল’জ (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২০’। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই সেই বিল পেশ করার প্রস্ততি নেওয়া হয়েছিল। সচরাচর বাজেট অধিবেশনে অন্য কোনও বিষয়ের বিল আসে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী বিলটি আজ, সোমবার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে পেশ করে এক ঘণ্টা আলোচনা হবে বলে ঠিক হয়েছিল শনিবার বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা (বিএ) কমিটির বৈঠকে। বিধানসভা শনিবার বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অবশ্য বিধায়কদের কাছে বিল পৌঁছয়নি। শেষমেশ স্পিকারের সচিবালয় থেকে সব পরিষদীয় দলের নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিলটি আজ আসছে না।
সরকারি একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, অতিথি শিক্ষকদের নবীকরণ থেকে শুরু করে সাধারণ কলেজের অধ্যক্ষদের দাবি মেটানো— একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো শিক্ষা দফতর সংশ্লিষ্ট বিধি জারি করে ওই সব সিদ্ধান্ত রূপায়ণের কাজে হাত দিয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে আবার বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে, এমন কোনও পদক্ষেপ আপাতত মুলতুবি রাখতে চাইছে রাজ্য সরকার। বিধানসভার দফওয়াড়ি বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে। ক্ষমতায় আসার পরে মমতার সরকার ২০১৪ ও ২০১৯ সালে দু’বার এই আইন সংশোধন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের অবসরের বয়স বাড়ানো হয়েছিল সর্বশেষ সংশোধনী এনে।
বিল না এনেও কিছু ক্ষেত্রে বিধি সংশোধন করে সিদ্ধান্ত কার্যকর করার এক্তিয়ার সরকারের আছে। নানা বিষয়ে সেই কৌশলই নিয়েছে রাজ্য। উপাচার্যেরা আর আচার্য তথা রাজ্যপালের সঙ্গে সরাসরি আদানপ্রদান করবেন না, এই নিয়ম যেমন কার্যকর করা হয়েছে বিধি বদলেই। বিলে যেমন রাজ্যপালের সম্মতি লাগে, বিধির ক্ষেত্রে সেই বালাই নেই। বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধন স্থগিত হয়ে যাওয়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও কিছু সংস্কার আমরা করতে চাই। তাড়াহুড়োর কিছু নেই।’’ রাজভবনে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় শিক্ষা ক্ষেত্রের বিষয় নিয়ে কিছু বলেন কি না, সে দিকেও নজর রয়েছে উচ্চ শিক্ষা দফতরের।
অতিথি, আংশিক বা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের পাশে যে তারা আছে, এই বার্তাই এখন স্পষ্ট করে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। অতিথি শিক্ষকদের যোগ্যতার তথ্য যাচাই করে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত রাজ্য নেওয়ায় পিএইচডি বা এমফিল থাকা শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়ছে, তা হলে কি অতিথি শিক্ষকদের দিয়েই কাজ চালানো হবে? কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। ওঁদের জায়গা কেউ কেড়ে নিচ্ছে না, ইউজিসি-র নিয়মেও কোনও হস্তক্ষেপ হচ্ছে না। ‘স্টেট এডেড কলেজ টিচার্স’ বলে একটা শ্রেণি হচ্ছে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও যোগ্যতা মেনে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আধিকারিকদের ‘রোপা’ মেনে বেতন পুনর্বিন্যাস এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মতো সাধারণ কলেজের অধ্যক্ষদেরও ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করে ‘বৈষম্য’ দূর করা হয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy