Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Ration Distribution Case

আরও কিছু আছে বাকি! ‘দুর্নীতি’তে বালু-সঙ্গী আরও বেশ কয়েক জন ‘বাকিবুর’, খোঁজ নিচ্ছেন তদন্তকারীরা

তদন্তকারীরা মনে করছেন যে, ধারে এবং ভারে ধৃত বাকিবুরের সমগোত্রীয় ছিলেন না অন্যেরা। তবে বাকিবুরের মতো অন্য বাকিবুরেরাও দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন বলে মনে করছে ইডি।

ED sources said some people like Bakibur Rahaman attached in Ration Distribution scam case

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১১:২৯
Share: Save:

একা বাকিবুর রহমানই নয়, দুর্নীতিতে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর ‘সঙ্গী’ ছিলেন আরও কয়েক জন বাকিবুর! রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে তেমনটাই মনে করছেন ইডির আধিকারিকেরা। তবে তদন্তকারীরা এটাও মনে করছেন যে, ধারে এবং ভারে ধৃত বাকিবুরের সমগোত্রীয় ছিলেন না অন্য বাকিবুরেরা। তবে বাকিবুরের সঙ্গে পেশায় মিল রয়েছে তাঁদেরও। তাঁরাও কেউ কেউ মিল মালিক। কেউ কেউ আবার অন্য ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত। তবে অন্য বাকিবুরেরাও দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন বলে এক প্রকার নিশ্চিত ইডি।

ইডি সূত্রে খবর, এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে জ্যোতিপ্রিয়কে। ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখা হচ্ছে এখনও পর্যন্ত নেপথ্যে থাকা কিন্তু তদন্তকারীদের আতশকাচের তলায় থাকা ওই মিল মালিকদের ভূমিকার দিকটিও। বাকিবুরকে গ্রেফতার করার পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রেই বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের নাম উঠে আসে। জ্যোতিপ্রিয় খাদ্যমন্ত্রী থাকার সময় রেশনের খাদ্যসামগ্রী নিয়ে দুর্নীতি চলত বলে ইডির ওই সূত্রের খবর।

কী ভাবে রেশনের আটা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, তার একটা ধারণা মেলে ইডির একটি নথি থেকে। ইডির নথিতে বলা হয়, মিল মালিকেরা সরকারি অর্থ মিলিয়ে নিতেন কড়ায়-গণ্ডায়। কিন্তু তার বিনিময়ে সরবরাহকৃত রেশনের হিসাব মিলত না। প্রতি ১ কেজি আটার দামে অন্তত ২০০ গ্রাম কম আটা দিতেন আটাকলের মালিকেরা। বাংলার রেশন বণ্টন মামলার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে। চাল এবং আটাকলের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ইডি জানতে পারে যে, কমিয়ে নেওয়া আটার পরিমাণ কখনও কখনও ৪০০ গ্রামও হত। অর্থাৎ ১ কেজি আটার মূল্যে সরকারি সরবরাহকারীরা হাতে পেতেন ৬০০ গ্রাম আটা।

তবে এই গরমিলের কথা জানত দু’পক্ষই। পুরোটাই চলত মিলমালিক এবং সরকারি সরবরাহকারীদের বোঝাপড়ায়। সঠিক দামে কম আটা বুঝে নেওয়ার জন্য ভাল দাম পেতেন রেশনের সরকারি সরবরাহকারীরা। অতিরিক্ত পরিমাণ অর্থ উপার্জনের জন্য বাকিবুরের মতো মিল মালিকেরা ‘বাঁকা পথ’ ধরতেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

সাধারণ মিল মালিক এবং ব্যবসায়ী হলেও খাদ্য দফতরে অবাধ যাতায়াত ছিল বাকিবুরের। এর আগে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, বাকিবুরের সঙ্গে তাঁর কর্মীদের যে হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাট চালাচালি হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে, দু’দফায় জ্যোতিপ্রিয়কে মোট ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বাকিবুরের তরফে জনৈক ‘এমআইসি’কে টাকা দেওয়ার তথ্য আসে তদন্তকারীদের হাতে। ইডির দাবি, এই ‘এমআইসি’-র অর্থ ‘মিনিস্টার ইন চার্জ’ অর্থাৎ ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। তিনি আর কেউ নন, খোদ জ্যোতিপ্রিয়। এই সূত্র ধরেই ওই দু’ডজন ফোনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইডি সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে তাদের মনে হচ্ছে এই বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি একা বাকিবুরের পক্ষে করা সম্ভব ছিল না। আরও কিছু মিল মালিক রেশনের খাদ্যসামগ্রী পরিমাণ কমানোর চক্রে যুক্ত ছিলেন। তবে প্রভাব এবং প্রসারে তাঁরা বাকিবুরের তুলনায় ‘দুর্বল’ ছিলেন। ইডি সূত্রের খবর ওই মিল মালিকদের বিষয়েই এ বার খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে তারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Jyotipriya Mallick Bakibur Rahaman ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE