Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Ration Distribution Case

শুধু স্ত্রী-কন্যাই নন, জ্যোতিপ্রিয় রেশনকাণ্ডে জড়িয়েছিলেন শ্যালক, শাশুড়িকেও: ইডি সূত্র

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় অবৈধ উপায়ে পাওয়া টাকাকে বৈধ করতে জ্যোতিপ্রিয় ভুয়ো সংস্থা খুলেছিলেন বলে আগেই দাবি করে ইডি। এই সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়-‘ঘনিষ্ঠ’ বাকিবুরও।

ED sources claimed Jyotiprya Mallick attached his brother in law and mother in law in alleged Ration Scam case

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩০
Share: Save:

রেশন দুর্নীতির টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগ করতে কেবল নিজের স্ত্রী-কন্যাই নন, শ্যালক এবং শাশুড়িকেও ব্যবহার করেছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইডির একটি সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় অবৈধ উপায়ে পাওয়া টাকাকে বৈধ করতে জ্যোতিপ্রিয় ভুয়ো সংস্থা খুলেছিলেন বলে আগেই দাবি করে ইডি। এই সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়-‘ঘনিষ্ঠ’ মিল মালিক, অধুনা ইডির হাতে ধৃত বাকিবুর রহমানও।

ইডির দাবি, সংস্থাগুলির মাধ্যমে মূলত দুর্নীতির টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগ করা কিংবা শেয়ার কেনাবেচার কাজ চলত। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, এমনই তিনটি সংস্থায় বিভিন্ন সময়ে ডিরেক্টর পদে ছিলেন মন্ত্রীর কন্যা এবং স্ত্রী। ইডি সূত্রে খবর, এই তিনটি সংস্থায় বিভিন্ন সময়ে ডিরেক্টর পদে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ের শ্যালক এবং শাশুড়িও।

‘গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ২০১৭ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত ডিরেক্টর পদে ছিলেন মন্ত্রীর শ্যালক। ওই একই সংস্থায় শাশুড়ি ডিরেক্টর পদে ছিলেন ২০১১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ইডি সূত্রে খবর, আর একটি সংস্থা ‘শ্রী হনুমান রিয়েলকন প্রাইভেট লিমিটেড’-এ জ্যোতিপ্রিয়ের শ্যালক ২০১১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ডিরেক্ট পদে ছিলেন। ওই একই সংস্থায় মন্ত্রীর শাশুড়ি ডিরেক্টর পদে ছিলেন ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অগস্ট মাস পর্যন্ত। আর একটি সংস্থা হল ‘গ্রেসিয়াস ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড’। সেখানেও প্রায় পাঁচ বছর ধরে ডিরেক্টর পদে ছিলেন দু’জনেই।

এর আগে আদালতে ইডি দাবি করেছিল যে, জ্যোতিপ্রিয়ের নির্দেশেই তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাকে তিনটি সংস্থার ডিরেক্টর পদে বসানো হয়েছিল। জেরার মুখে জ্যোতিপ্রিয় এ কথা স্বীকারও করেছেন বলে ইডির দাবি। তবে ওই তিন সংস্থা চালানোর কথা স্বীকার করেননি জ্যোতিপ্রিয়। তবে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে জ্যোতিপ্রিয়ের স্ত্রী এবং কন্যা জানিয়েছেন, মন্ত্রীর কথাতেই তাঁরা ওই সংস্থাগুলির ডিরেক্টর হয়েছিলেন। ইডি এ-ও দাবি করেছিল যে, ‘শ্রী হনুমান রিয়েলকন প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের দু’টি ভুয়ো সংস্থায় জ্যোতিপ্রিয়ের প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের মা এবং স্ত্রীকে ডিরেক্টর পদে বসানো হয়েছিল। ইডি সূত্রে জানা যায়, তদন্তে দেখা গিয়েছে এই সংস্থাগুলির মাধ্যমে প্রায় ১২ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে।

২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্তসহায়ক হিসাবে কাজ করেন অভিজিৎ। সম্প্রতি তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমার মা এবং স্ত্রীকে সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছিল। মন্ত্রী যখন নির্দেশ দেন, তা তো পালন করতেই হবে। তাঁর অনুরোধও এক প্রকার নির্দেশই। আমি ইডিকে সবই জানিয়েছি। ওই সংস্থায় কী লেনদেন হয়েছিল, জানি না। ২০১৪ সালেই আমার মা এবং স্ত্রী সংস্থা থেকে সরে আসেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jyotipriya Mallick ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE