গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বিচারপতি অমৃতা সিংহের ভর্ৎসনা শুনেও আবার তাঁরই শরণাপন্ন হলেন ইডির এক পদস্থ অফিসার।
পদাধিকারে ইডির সহকারী অধিকর্তা তিনি। আবার নিয়োগ মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্রান্ত তদন্তও সামলাচ্ছিলেন দীর্ঘ দিন ধরে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই কর্তাকেই দিন ১৭ আগেই ভরা এজলাসে ভর্ৎসনা করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির সিংহ। সাফ বলে দিয়েছিলেন, ‘‘আপনি তদন্ত করতেই সক্ষম নয়, আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে আপনার।’’ এর পরেই ইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্যের সমস্ত মামলা থেকে যেন সরিয়ে দেওয়া হয় এই কর্তাকে। বুধবার সেই ইডি কর্তা আবার ফিরে এলেন বিচারপতির এজলাসে। আর্জি জানালেন, বিচারপতি যেন তাঁর দেওয়া নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করেন। নিয়োগ মামলার তদন্ত থেকে সরানো হলেও তাঁকে যেন রাজ্যের অন্য মামলাগুলির দায়িত্ব থেকে সরানো না হয়।
ইডির ওই সহকারী অধিকর্তার নাম মিথিলেশকুমার মিশ্র। গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে রাজ্যের সমস্ত মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। তার আগে ২৫ সেপ্টেম্বর এই মামলায় বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়েন মিথিলেশ।
হাই কোর্টের নির্দেশে তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের সম্পত্তির বিবরণ আদালতে জমা দিয়েছিল ইডি। সেই বিবরণ নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি সিংহ। ইডির বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর প্রধান আধিকারিক মিথিলেশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিচারপতি তাঁর কাছেই জানতে চান, ‘‘আপনি কি তদন্ত থেকে অব্যাহতি চান?’’ সেখানেই তিনি থেমে থাকেননি। কেন মিথিলেশের কাজে তিনি অসন্তুষ্ট, তার ব্যাখ্যাও দেন বিচারপতি। অভিষেকের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, ওই সংস্থা প্রথমে কেন তৈরি করা হয়েছিল, তা জানায়নি ইডি। বড় অঙ্কের লেনদেন হয়েছে বলেছে ইডি, কিন্তু সেই লেনদেন নিয়েও কিছু জানায়নি। মিথিলেশকে এর পরে আবার বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘এটা কি পোস্ট অফিস নাকি? কেউ কিছু দিল, আর আপনি এসে প্রকাশ করে দিলেন! কার কত সম্পত্তি কিছুই দেখলেন না? ‘টানেলের শেষে’ কবে পৌঁছনো যাবে?’’
ইডির আট মাসের তদন্তের নিট ফল ‘শূন্য’ জানিয়ে বেশ কিছু তথ্য বিশদে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ছ’জন ডিরেক্টরের নাম, তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ, সংস্থার লেনদেন, তার মূল্য, এই সংস্থায় কারা ক্লায়েন্ট, তাঁদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সংস্থার রোজের কাজ কে দেখতেন, সিইও অভিষেকের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, তাঁর মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ, সংস্থার সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, কারা, কবে সংস্থায় যোগ দিয়েছেন, কেন সংস্থার ঠিকানা পরিবর্তন এবং কার কাছে তদন্ত নিয়ে ইডি সাহায্য চায়, তা জানাতে বলা হয়েছিল হাই কোর্টে। বিচারপতি এ-ও জানিয়েছিলেন, আদালত ফল আশা করে।
কিন্তু গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইডি তথ্য প্রকাশ করার পর বিচারপতি তাতে সন্তুষ্ট হননি। পাল্টা তিনি তদন্তকারী অফিসারকে বলেছিলেন, ‘‘সাংসদ অভিষেকের মাত্র তিনটি বিমা ছাড়া কিছু নেই! কী ভাবে? ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি (ডিটেলস) নেই কেন?’’ এর পরেই গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওই ইডি কর্তাকে রাজ্যের সমস্ত তদন্ত থেকে সরানোর নির্দেশ দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy