Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Garden Reach

১৭ কোটি প্রতারণা মামলায় ধৃত আমিরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এক মন্ত্রী এবং তৃণমূলের এক কাউন্সিলরের, দাবি ইডির

অ্যাপ প্রতারণা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত, মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা আমির খানকে শনিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে কলকাতা পুলিশ।

শনিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার হয়েছে আমির খান।

শনিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার হয়েছে আমির খান। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:২০
Share: Save:

তাঁর প্রসঙ্গ উঠলেই মুখে কুলুপ আঁটছেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের মধ্যেই নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পড়শিরা বলছেন, “বড় বড় ব্যাপার। আমরা এর মধ্যে থাকতে চাই না। ওঁদের বাড়ির দিকে তাকাচ্ছিও না।’’

অ্যাপ প্রতারণা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত, মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা আমির খানকে শনিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে কলকাতা পুলিশ। তাঁকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ১০ সেপ্টেম্বর মেটিয়াবুরুজের পরিবহণ ব্যবসায়ী নিসার আলির ছোট ছেলের আমিরের ঘর থেকে ১৭.৩২ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তার পর থেকেই পুরনো মামলা নিয়ে তৎপর হয়েছে কলকাতা পুলিশ। নিসারের দরজায় কড়া নাড়লে বলা হচ্ছে, তিনি বাড়িতে নেই। পড়শিদের দাবি অবশ্য অন্য রকম। ‌

ইডির দাবি, তাদের তদন্তে আমির কাণ্ডে বন্দর এলাকার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের নাম উঠে এসেছে। সেই কাউন্সিলরের এক ভাই-ই রাজ্য মন্ত্রিসভার এক দাপুটে সদস্য এবং আমিরের মধ্যে যোগাযোগ রাখতেন।

ইডি সূত্রের দাবি, নিউ টাউনে আমিরের এক বান্ধবীর নামে ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে শতাধিক মোবাইলের সিমকার্ড উদ্ধার হয়েছিল। সেগুলি যাচাই করেই বন্দর এলাকার ওই প্রভাবশালী তৃণমূল কাউন্সিলরের পরিবারের কথা জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, ওই কাউন্সিলরের সঙ্গে মন্ত্রিসভার এক প্রভাবশালী সদস্যের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এক তদন্তকারী জানান, মন্ত্রিসভার ওই প্রভাবশালী সদস্যের সঙ্গে যে আমিরের যোগাযোগ রয়েছে, তদন্তেই সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একটি ‘মিসিং লিঙ্ক’ বা ছিন্নসূত্র থেকে যাচ্ছিল। আমিরের সঙ্গে ওই মন্ত্রীর সরাসরি কোনও যোগ স্পষ্ট হচ্ছিল না। ইডির দাবি, আমির যে ওই কাউন্সিলরের মাধ্যমেই মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, সেটা পরিষ্কার। সরাসরি নয়, ওই কাউন্সিলরও আমিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন পরিবারের এক সদস্যের মাধ্যমে।

তদন্তকারীদের দাবি, আমিরের ১৪৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনেও উঠে এসেছে ওই তৃণমূল কাউন্সিলরের পরিবারের এক সদস্যের নাম। তদন্তকারীদের দাবি, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে অ্যাপ প্রতারণা চক্রের লভ্যাংশের একটা মোটা অংশ ওই প্রভাবশালী কাউন্সিলরের মাধ্যমে ‘উপরে’ পৌঁছে যেত। প্রশ্ন উঠছে নিসারকে নিয়েও। অভিযোগ, টাকা উদ্ধারের পরে নিসারের রামনগরের পরিবহণ ব্যবসার অফিস তালাবন্ধ। শাহি আস্তাবল লেনে তাঁর বাড়ির দরজাও কার্যত সব সময় বন্ধ থাকছে। ওই বাড়ির সঙ্গে পারতপক্ষে কোনও যোগাযোগ রাখতে চাইছেন না পড়শিরা। নিসারের এক ব্যবসায়ী বন্ধু বলেন, ‘‘নিসার সাহেব ওই ঘটনার (টাকা উদ্ধার) পর থেকে আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেননি। আমরাও ওঁকে ফোন করিনি। ওঁদের কোনও খবর আমাদের কাছে নেই।’’

অ্যাপ প্রতারণার চাঁই আমিরকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে প্রস্তুত হচ্ছিল ইডি। তার মধ্যেই উত্তরপ্রদেশে তাঁকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। ইডির আশঙ্কা, একাধিক মামলায় এখন বেশ কিছু দিন আমিরকে নিজেদের হেফাজতে রাখতে চাইবে পুলিশ। আমিরকে জেল হেফাজতে পাঠানো হলে আদালতে আবেদন করে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় ইডি।

তদন্তকারীদের দাবি, সম্প্রতি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধারের পরে আমির এবং শাসক দলের ওই প্রভাবশালী কাউন্সিলরের পরিবারের সদস্য অ্যাপ প্রতারণা চক্রের লভ্যাংশের টাকা নানা জায়গায় গচ্ছিত রাখার চেষ্টা করছিলেন। অভিযোগ, তখনই নিজের বাড়ির দোতলার ঘরে লভ্যাংশের একটি মোটা অংশ রেখেছিলেন আমির।

অন্য বিষয়গুলি:

Garden Reach ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy