অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চলতি সপ্তাহের শেষে ইডি-র দফতরে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে। ইডি সূত্রের দাবি, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত দু’টি সংস্থায় জমা হওয়া কয়েক কোটি টাকার ‘উৎস নিয়ে বিশ্লেষণ’ চলছে। এ বিষয়ে অভিষেককে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। যদিও প্রকাশ্যে সংস্থাটি কিছু বলেনি। গতকাল টানা নয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর খুবই আক্রমণাত্মক ভাবে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘প্রমাণ থাকলে প্রকাশ্যে আনুন। দুধ আর জল আলাদা হয়ে যাবে।’’ তিনি আজ কলকাতা রওনা হয়েছেন।
ইডি-র তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, অভিষেকের সঙ্গে দু’টি সংস্থার যোগাযোগ মিলেছে এবং দু’টি সংস্থাতেই অভিষেকের ঘনিষ্ঠতম আত্মীয়েরা ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। এই দু’টি সংস্থায় একটি নির্মাণ সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ৪.৩৭ কোটি টাকা জমা পড়েছে বলে ইডি-র অফিসাররা জানতে পেরেছেন বলে সূত্রের দাবি। এই নির্মাণ সংস্থাটির সঙ্গে আবার কয়লা পাচার কাণ্ডের এক জন অভিযুক্তের যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। ইডি-র অফিসারদের দাবি, বেআইনি কারবার চালিয়ে যাওয়ার রক্ষাকবচ বা ‘প্রোটেকশন মানি’ হিসেবে অভিযুক্তরা এই টাকা দিয়ে থাকতে পারেন। অভিষেকের থেকে এই টাকার উৎসের ‘সন্তোষজনক’ ব্যাখ্যা মেলেনি বলেও তদন্তকারী অফিসারদের দাবি। তদন্তের স্বার্থে সংস্থার অন্য ডিরেক্টরদেরও তলব করা হতে পারে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। যদিও প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কেউই মুখ খোলেননি। আর অভিষেক রবিবারও বলেছেন,‘‘প্রমাণ থাকলে তা সামনে আনা হোক এবং আমার বিরুদ্ধে যদি ১০ টাকার লেনদেনও প্রমাণিত হয়, আমি ফাঁসিতে ঝুলতেও রাজি। ইডি, সিবিআইয়ের দরকার হবে না।’’
বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই, ইডি-র এখন প্রধান লক্ষ্য, অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রকে ভারতে ফিরিয়ে আনা। তৃণমূলের যুব নেতা বিনয় অভিষেকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। কয়লা কাণ্ডের তদন্ত শুরু হতেই বিনয় দেশছাড়া। প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র ভানাটু-র নাগরিকত্ব নিয়ে বিনয় সেখানেই আছেন বলে সিবিআই, ইডি-কর্তারা জানতে পেরেছেন। তাঁকে হাতের নাগালে পেলে কয়লা পাচারের সঙ্গে রাজ্যের ‘প্রভাবশালীদের’ যোগাযোগের আরও তথ্য পাবেন বলে ওই কর্তারা আশাবাদী।
ইডি সূত্রের দাবি অনুযায়ী, বিনয় তাঁর পরিচিত বলে সোমবার অভিষেক তদন্তকারীদের জানান। কিন্তু তাঁর সঙ্গে বিনয়ের আর্থিক লেনদেন নেই বলেও তিনি দাবি করেছেন। বিনয় কোথায় রয়েছেন, সেটাও অভিষেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কয়লা পাচারে বিনয় জড়িত থাকলে সেটা তার নিজস্ব বিষয় বলেও অভিষেক মন্তব্য করেছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।
এক তদন্তকারী অফিসারের দাবি, বিনয় এক অবাঙালি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কয়লা পাচারের লভ্যাংশের টাকা হাওয়ালা মারফত রাজ্যের ‘প্রভাবশালী’ ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিয়েছেন। ওই ব্যবসায়ী দুবাইয়ের বাসিন্দা। তাঁকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও ইডি-র দাবি। কয়লা পাচারের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার এক হিসাবরক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ‘প্রভাবশালীদের’ কী ভাবে টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই তথ্য এবং বাঁকুড়া সদর থানার আইসি অশোক মিশ্র কী ভাবে দক্ষিণ কলকাতায় বিনয়ের বিভিন্ন ডেরায় টাকা পৌঁছে দিয়েছেন, তার প্রামাণ্য নথিও হাতে রয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy