Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Ayan Shil

‘বাংলার শিক্ষা দুর্নীতি দেখে কবিগুরু আজ কাঁদছেন’, অয়নের বিরুদ্ধে সওয়াল করে কোর্টে মন্তব্য ইডির

অয়নের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী জানান, তাঁর গ্রেফতারির পর থেকে ১৩ দিন ধরে দুর্নীতির অনেক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। সেই কথা জানাতে গিয়েই রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ এনেছেন।

image of ayan shil

শনিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। ছবি: প্রতীকী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:২৫
Share: Save:

যাঁর চিন্তাধারা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয় শিক্ষা নীতি তৈরি হয়েছে, সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘কাঁদছেন’। এ রাজ্যে শিক্ষা নিয়ে যে দুর্নীতি চলছে, তা দেখে তাঁর হৃদয়ে ‘রক্তক্ষরণ’ হচ্ছে। রাজ্যে নিয়োগে দুর্নীতির কথা বলতে গিয়ে শনিবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আইনজীবী এমনটাই জানালেন আদালতে। রবীন্দ্রনাথের বোলপুরও যে এখন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে ভিন্ন কারণে ‘কুখ্যাত’, তা-ও আদালতে জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। সেখানে যে কোনও শর্তে তাঁর জামিন চেয়েছিলেন আইনজীবী। সেই আবেদনের বিরোধিতা করেই ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান, অয়নের গ্রেফতারির পর থেকে ১৩ দিন ধরে দুর্নীতির অনেক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। অয়নের বিরুদ্ধে অনেক প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই কথা জানাতে গিয়েই রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ এনেছেন এডুলজি। তিনি আদালতে বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন জাতীয় শিক্ষানীতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা নিয়ে ভাবনা প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু কবিগুরু কি খুশি? না, অবশ্যই নয়। গোটা পশ্চিমবঙ্গকে গ্রাস করেছে যে শিক্ষা দুর্নীতি, তা দেখে কবিগুরু নীরবে কাঁদছেন। তাঁর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’’

এডুলজি এর পর বোলপুরের প্রসঙ্গও তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যে বোলপুর রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর জন্য বিখ্যাত ছিল, এখন তা দুর্নীতির জন্য কুখ্যাত। আইনজীবীর কথায়, ‘‘গীতাঞ্জলি লিখে ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এশিয়ায় প্রথম। সেই পুরস্কারমূল্য এবং অন্য অনুদান থেকে অনেক কষ্টে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছিলেন তিনি। কবিগুরু এখন কাঁদছেন, কারণ সেই বোলপুর আজ দুর্নীতি আর গরু পাচারের জন্য বেশি পরিচিত।’’

কবিগুরুর শিক্ষা ভাবনাও যে দুর্নীতির কারণে ধাক্কা খেয়েছে, তা-ও আদালতে জানিয়েছেন এডুলজি। তিনি বলেন, ‘‘পূর্ব এবং পশ্চিমকে মিলিয়ে দিয়েছিল কবিগুরুর শিক্ষাভাবনা। সেই বাংলায় দুর্নীতির কবলে শিক্ষা। তাই রবীন্দ্রনাথ কাঁদছেন। কবিগুরু কাঁদছেন, কারণ গঙ্গার জল এখন অচল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যেমন নরকে হয়। তেমনই বাংলার শিক্ষাও অচল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যেমন দুর্নীতি শিখরে পৌঁছেছে। কবিগুরু কাঁদছেন কারণ শিক্ষাব্যবস্থা ক্রমেই নরকের পথে হাঁটছে।’’

শনিবার অয়নের জামিন মঞ্জুর করেনি আদালত। ১১ এপ্রিল পর্যন্ত প্রোমোটার অয়নকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। জেলে গিয়ে তাঁকে জেরা করতে পারবেন তদন্তকারী অফিসারেরা। অয়নের জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বেশ কিছু তথ্য আদালতে পেশ করেছেন। ইডির তরফে জানানো হয়েছে, চাকরি দেওয়ার নামে এক হাজার প্রার্থীর থেকে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন। তাঁর প্রায় ৩০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একাধিক দফায় আট কোটি টাকা ঢুকেছে। ইডি আরও দাবি করেছে, প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এক কোটি টাকা দিয়েছিলেন অয়ন। এই দুর্নীতির প্রসঙ্গেই রবীন্দ্রনাথের কথা তুলে ধরেছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Ayan Shil Recruitment Scam Municipality Rabindranath Tagore ED Lawyer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy